ইরান চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ যুক্তরাজ্যের

ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের পরমাণু চুক্তির চাইতে ভালো কোনো বিকল্প যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকলে তা দেখানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরসি জনসন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2018, 05:53 PM
Updated : 11 Jan 2018, 05:53 PM

বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইরান, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অন্যান্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর জনসন বেশ জোর দিয়ে বলেন, চুক্তিটি ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন থেকে বিরত রেখেছে। আর তখনই তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পরমাণু চুক্তিটি হয় সংশোধন করা নয়ত এটি বাতিল করতে চান।

কিন্তু ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলো তাকে চুক্তিটি বাতিল না করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ওই চুক্তির কারণেই বিশ্ব নিরাপদ আছে।

২০১৫ সালে বিশ্বের শক্তিধর ছয় দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্সের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ওই পরমাণু চুক্তির আওতায় ইরান তাদের পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

বিভিন্ন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে শিথিল করা হবে- এ শর্তেই ইরান তাদের পরমাণবিক কর্মসূচি অন্তত ১০ বছরের জন্য কমাতে রাজি হয়।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তিটিকে ত্রুটিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে এটি বাতিলের হুমকি দিচ্ছেন এবং ইরান এটি নানাভাবে লঙ্ঘন করছে বলেও অভিযোগ করে আসছেন।

গত বছর অক্টোবরে ইরান ‘পারমাণবিক চুক্তি মেনে চলছে’ এ সংক্রান্ত সার্টিফিকেট কংগ্রেসকে দিতে অস্বীকৃতি জানান ট্রাম্প। সেইসঙ্গে দেশটির বিরুদ্ধে নতুন করে কঠোর নীতি ঘোষণা করেন।

যা ওয়াশিংটনকে বাকি পাঁচ দেশের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তাদের যুক্তি, জাতিসংঘ প্রস্তাবনা অনুযায়ী, একটি বহুপাক্ষিক চুক্তি ওয়াশিংটন একতরফাভাবে বাতিল করতে পারে না।

যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলে ইরানও পরমাণু চুক্তি প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছে।

ব্রাসেলসে বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, “ইরান ওই চুক্তি পুরোদস্তুর মেনে চলছে।”

ট্রাম্পের বিরোধিতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, “ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে অগ্রসর হওয়া রুখতে এর চেয়ে ভালো কোনো বিকল্প কেউ দিতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।”

‘জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ) শীর্ষক ওই চুক্তিটিকে এক উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক অর্জন বলে বর্ণনা করেছেন জনসন।

 তিনি বলেন, “যারা জেসিপিওএ- এর বিরোধিতা করছে তাদের অবশ্যই এর চাইতে ভালো কোনো সামাধানের পথ দেখাতে হবে। কারণ, আমরা এখন পর্যন্ত এর চাইতে ভালো উপায় খুঁজে পাইনি।”

ইইউ’র বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মঘারিনিও পরমাণু চুক্তির পক্ষে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, “চুক্তি কাজ করছে। চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু প্রকল্পের কাজ তদারক করা এবং সেটার উপর গভীর নজরদারি, যা ঠিকঠাক মত হচ্ছে। একে কার্যকর রাখতে আন্তর্জাতিক ঐক্য প্রয়োজন।”