পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরলে ইরানও সরে দাঁড়াবে: খামেনি

যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি থেকে সরে গেলে ইরানও সরে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

>>রয়টার্স
Published : 18 Oct 2017, 04:10 PM
Updated : 18 Oct 2017, 04:10 PM

ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টেলিভিশনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দেয়।

গত শুক্রবার এক ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান ‘পারমাণবিক চুক্তি মেনে চলছে’ এ সংক্রান্ত সার্টিফিকেট কংগ্রেসকে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে কঠোর নীতি ঘোষণা করেন। তিনি চুক্তিটি থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দেন।

এর পাঁচদিনের মাথায় ইরানের ধর্মীয় নেতা খামেনি তার প্রতিক্রিয়া জানালেন। যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি ছিন্ন করলে ইরানও তা ছিন্ন করবে বলে জানালেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের পরমাণু চুক্তি বাতিল করতে চাইলেও চুক্তিটি সই করা অন্য দেশগুলোসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) চুক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। খামেনি তাদের এ সমর্থনকে স্বাগত জানালেও তা যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন।

২০১৫ সালে বিশ্বের শক্তিধর ছয় দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্সের সঙ্গে করা ওই পরমাণু চুক্তির আওতায় ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়।

চুক্তি অনুযায়ী, বিভিন্ন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে শিথিল করা হবে এ  শর্তেই ইরান তাদের পরমাণু প্রকল্পের কাজ অন্তত ১০ বছরের জন্য কমাতে রাজি হয়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্রমাগত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার হুমকি ওয়াশিংটনকে বাকি পাঁচ দেশের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তারা বলছে, জাতিসংঘের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, একটি বহুপাক্ষিক চুক্তি ওয়াশিংটন একতরফাভাবে বাতিল করতে পারে না।

ওদিকে, খামেনি বলছেন, “ইউরোপের দেশগুলো দৃঢ়ভাবে পরমাণু চুক্তির পক্ষে কথা বলেছে এবং ট্রাম্পের নিন্দা জানিয়েছে… আমরা একে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু ট্রাম্পকে চুক্তি বাতিল না করার আহ্বান জানানোর জন্য এটু্কুই যথেষ্ট নয়। আমেরিকা চুক্তি বাতিলে বাস্তবিকই যে উদ্যোগ নিচ্ছে, ইউরোপকে তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। নতুবা ট্রাম্প চুক্তি বাতিল করলে ইরানও তা ভেস্তে দেবে।”

ছয় বিশ্বশক্তি ও ইরানের মধ্যে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তির আলোকে ইরানের ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প তার পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তিটি থেকে সরিয়ে না নিলেও ইরানের ওপর থেকে তুলে নেওয়া নিষেধাজ্ঞা আবার আরোপ করা হবে কি না তা ঠিক করতে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসকে ৬০ দিন সময় দিয়েছেন।

কংগ্রেস যদি নিষেধাজ্ঞা আবার আরোপ করে তাহলে পারমাণবিক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করবে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাতে চুক্তিটি ভেঙে যেতে পারে; অপরদিকে কংগ্রেস যদি কিছুই না করে তাহলে চুক্তিটি কার্যকর থাকবে।