ফের জাপানের উপর দিয়ে উ. কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র

‘জাপানকে ডুবানো এবং যুক্তরাষ্ট্রকে ছাই করে দেওয়ার’ হুমকির পরদিনই জাপানের উপর ‍দিয়ে ফের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া।

নিউজডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2017, 04:14 AM
Updated : 15 Sept 2017, 05:20 AM

শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭ টার দিকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্তর-পূর্ব জাপানের হোক্কাইডো প্রদেশের উপর ‍দিয়ে উড়ে গিয়ে প্রশান্ত সাগরে পড়েছে বলে জানায় বিবিসি।

গত ২৯ অগাস্ট ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটিও জাপানের একই অঞ্চল দিয়ে উড়ে গিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পড়েছিল।

প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী,  আগেরটির তুলনায় সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্রটি আরও বেশি উচ্চতায় উঠেছিল এবং উন্নত প্রযুক্তির ছিল।

দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ৭৭০ কিলোমিটার উপরে উঠে এবং ১৯ মিনিটে ৩৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়।

এ মাসের শুরুতে নিজেদের ষষ্ঠ এবং সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণবিক পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া।

এর জেরে গত সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে উত্তর কোরিয়ার ওপর নতুন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় উত্তর কোরিয়ার বস্ত্র রপ্তানি ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির ওপর বাধা-নিষেধ আরোপ করা হয়।

নতুন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করে পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কাজের গতি বাড়ানোর ঘোষণা দেয় উত্তর কোরিয়া।

শুক্রবারের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর উত্তর কোরিয়ার এ ধরনের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড ‘কখনও মেনে নেওয়া হবে না’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “যদি উত্তর কোরিয়া এই পথে চলা অব্যাহত রাখে তবে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।”

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনও নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দা জানিয়েছেন।

তিনি চীন ও রাশিয়ার উপর এর দায় চাপিয়ে বলেন, “উত্তর কোরিয়ার বেশিরভাগ জ্বালানি তেলের যোগানদাতা চীন। আর দেশটির অধিকাংশ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে রাশিয়া।”

“এ ধরনের নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিরুদ্ধে নিজেরাই সরাসরি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে চীন ও রাশিয়ার তাদের আপত্তির কথা বুঝিয়ে দেওয়া উচিত।”

উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কয়েক মিনিট পর দক্ষিণ কোরিয়া সমুদ্রে দুইটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে বলে জানায় ইউনহাপ নিউজ এজেন্সি।

পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন।

নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা উত্তর কোরিয়ার জন্য আরও কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি কারণ হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর হোক্কাইডো দ্বীপে সাইরেন বেজে উঠে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণের সতর্কতা জারি করা হয়।

পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্রটি ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইআরবিএম)। তবে এটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (আইসিএমবি) হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাপানের কর্মকর্তারা।

প্রশান্ত মহাসগারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দ্বীপ গুয়াম ও পিয়ংইয়েংর মধ্যে দূরত্ব ৩৪০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ, সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্রটি গুয়ামে আঘাত হানতে সক্ষম ছিল।

কয়েক মাস আগে গুয়ামের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছিল উত্তর কোরিয়া।

উত্তর কোরিয়া আবারও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোয় জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ নিউইয়র্কে শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসবে বলে জানায় বিবিসি।