গোলানে ইসরায়েল অধিকৃত এলাকা থেকে বাফার জোন এবং আশপাশের কমান্ডিং অবস্থানগুলোতে ঢোকার জন্য প্রতিরক্ষা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
Published : 09 Dec 2024, 03:40 PM
সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, তার সেনাবাহিনী গোলান মালভূমির অসামরিক বাফার জোন সাময়িকভাবে দখলে নিয়েছে।
১৯৭৪ সালে সিরিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের হাতে দেশটির নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ার কারণে তা ‘ভেঙে পড়েছে’ বলে জাানান তিনি।
নেতানিয়াহু বলেন, গোলান মালভূমিতে ইসরায়েল অধিকৃত এলাকা থেকে বাফার জোন এবং আশপাশের কমান্ডিং অবস্থানগুলোতে ঢোকার জন্য তিনি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে (আইডিএফ) নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের সীমান্তে কোনও বৈরী শক্তিকে অবস্থান নিতে দেব না।”
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, শনিবার বাফার জোনের ভেতরে অবস্থিত কুনেইত্রা প্রদেশে সিরীয় সেনারা তাদের অবস্থান ত্যাগ করেছে।
রোববার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বাফার জোনের ভেতরে থাকা পাঁচটি সিরীয় গ্রামের বাসিন্দাদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের বাড়িতে থাকতে বলেছে।
গোলান মালভূমি দামেস্ক থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত বলে জানিয়েছে বিবিসি।
১৯৭১ সাল থেকে বাশার আল–আসাদ এবং তার বাবা দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন। রোববার ভোরে ইসলামপন্থি বিদ্রোহী সংগঠন হায়াত তাহরির আল–শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন গোষ্ঠী দামেস্কে ঢুকে পড়ে।
এরপর তারা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে হাজির হয়ে ‘সিরিয়া এখন মুক্ত’ বলে ঘোষণা দেয়। পরবর্তীতে সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধারা রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর গোলান
মালভূমির বাফার জোন দখলের পদক্ষেপ নিল ইসরায়েল।
বিবিসি-র তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধ শেষে গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল। এরপর, ১৯৮১ সালে তারা এটিকে একতরফাভাবে নিজেদের অংশ বলে ঘোষণা করে।
তবে ইসরায়েলের এ পদক্ষেপ কোনও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। যদিও ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র এ পদক্ষেপকে স্বীকৃতি দেয়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আসাদ সরকারের পতনের দিনটিকে ঐতিহাসিক দিন বলে উল্লেখ করেছেন।
নেতানিয়াহু বলেন, “দামেস্কে স্বৈরশাসক আসাদ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে বড় ধরনের সুযোগ তৈরি হয়েছে ঠিকই, তবে এতে বিপদও আছে।”
নেতানিয়াহুর দাবি, ইরানে এবং লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে তাদের হামলার কারণে সিরিয়ায় ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে গেল।