ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি বিবিসি-র তথ্যচিত্র নিয়ে গত কদিন ধরে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এ তথ্যচিত্রের সমর্থনে বার্তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী মুক্ত গণমাধ্যমের পক্ষে তারা।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বুধবার এক নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে ভারতে তথ্যচিত্রটি নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তকে বাক-স্বাধীনতার বিষয় বলে বর্ণনা ওই বার্তা দেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
তিনি বলেন, “আমরা গোটা বিশ্বে মুক্ত গণমাধ্যমের গুরুত্বকে সমর্থন করি। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্ম পালনের স্বাধীনতাকে মানুষের অধিকার হিসাবে তুলে ধরাকে গুরুত্ব দেই। মানুষের এইসব অধিকার গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। বিশ্বজুড়ে আমাদের সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে আমরা এই দিকটিতে মনোনিবেশ করি। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়।”
ভারতসহ বিশ্বব্যাপী বাক স্বাধীনতার মতো গণতান্ত্রিক নীতির গুরুত্ব তুলে ধরার এবং এদিকে মনোনিবেশ করার এখনই মোক্ষম সময় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তবে এর আগে গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে নেড প্রাইস এ বিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়ে বলেছিলেন, এমন তথ্যচিত্রের বিষয়বস্তু নিয়ে তিনি অবগত নন। কিন্তু এবার তিনি সুর বদলালেন।
গত সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোশ্চেন’ নামের তথ্যচিত্রটিকে বিতর্কিত কাহিনী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বানানো ‘অপপ্রচার’ বলে অ্যাখ্যা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি দেখানো ও শেয়ার করা বন্ধ করে ভারত।
তথ্যচিত্রটিতে দুই দশক আগে গুজরাটে হওয়া প্রাণঘাতী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় মোদীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ওই ভয়াবহ দাঙ্গার সময় মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
গত মঙ্গলবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তথ্যচিত্রটির প্রদর্শনী বন্ধের নির্দেশ দেয়। তারপরও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠন এই তথ্যচিত্র দেখানোর কর্মসূচি নিচ্ছে। দিল্লিতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ও জামিয়া মিলিয়ায় এ নিয়ে তাণ্ডব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ধরপাকড় করেছে পুলিশ।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও তথ্যচিত্রটি দেখানো হচ্ছে। তা নিয়েও কোথাও কোথাও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে।