অনুমোদনের অপেক্ষায় বিশ্বের প্রথম স্বচালিত ‘এয়ার ট্যাক্সি’

বাজার বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ২০৩৫ সাল নাগাদ উড়ুক্কু ট্যাক্সি বাজারের আকার হবে ১৫ হাজার কোটি ডলার।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2022, 12:39 PM
Updated : 4 Oct 2022, 12:39 PM

কোনো পাইলট ছাড়াই চারজন যাত্রী নিয়ে ওড়ার সক্ষমতা আছে সম্পূর্ণ বিদ্যুচ্চালিত ‘এয়ার ট্যাক্সি’র। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রকদের অনুমোদনের অপেক্ষায় থমকে আছে যানগুলোর বাণিজ্যিক অভিষেক।

‘এয়ার ট্যাক্সি’র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘উইস্ক অ্যারো’। স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানটিকে সমর্থন দিচ্ছে শীর্ষ উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং। সম্প্রতি ষষ্ঠ প্রজন্মের নতুন যান উন্মোচন করেছে কোম্পানিটি, সরাসরি উল্লম্বভাবে উড্ডয়ন এবং অবতরণের সক্ষমতা আছে যানটির।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)’র অনুমোদন পেলে বিশ্বের প্রথম স্বচালিত এবং সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ নির্ভর উড়ুক্কু পরিবহন সেবা হিসেবে বাজারে অভিষেক হবে এর।

বিবিসি জানিয়েছে, ২০১৯ সালে যৌথ প্রকল্প হিসেবে ‘উইস্ক অ্যারো’ শুরু করেছিল বোয়িং ও ‘কিটি হক’। উড়ুক্কু ট্যাক্সি নির্মাণের লক্ষ্যে কিটি হক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারিপেইজ; সম্প্রতি বন্ধ হয়ে গেছে কোম্পানিটি।

উইস্কের এয়ার ট্যাক্সিতে সামনের দিকে রোটর আছে মোট ছয়টি; অনুভূমিকভাবে এবং উলম্বভাবে কাজ করতে পারে রোটরগুলো। নির্মাতা কোম্পানিটি বলছে, ১২০ নট গতিতে সর্বোচ্চ ১৪০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে এয়ার ট্যাক্সি। দুই হাজার পাঁচশ থেকে চার হাজার ফিট উচ্চতায় উড়তে পারে যানটি।

কিন্তু যানটির বাণিজ্যিক অভিষেক আটকে আছে অনুমোদনের প্রক্রিয়াগত জটিলতায়। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, কোনো বাণিজ্যিক সেবা চালু করার আগে এফএএর কাছ থেকে তিন বিষয়ে অনুমোদন নিতে হয়ে এভিয়েশন কোম্পানিগুলোকে। এর মধ্যে যানের নকশা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা এফএএর মানের সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না নিশ্চিত করে ‘টাইপ সার্টিফিকেশন’।

যানের উৎপাদনের জন্যেও লাগে আলাদা অনুমোদন। আর উড়ুক্কু ট্যাক্সি সেবা চালানোর জন্য ‘এয়ার ক্যারিয়ার সার্টিফিকেশন’ও লাগবে উইস্কের। সবগুলো অনুমোদন এখনও না মেলার কারণেই মার্কিন বাজারে এয়ার ট্যাক্সির অভিষেক এখনও আটকে আছে বলে উঠে এসেছে ভার্জের প্রতিবেদনে।

বিবিসি জানিয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে অ্যাপ নির্ভর আন্তঃশহর উড়ুক্কু ট্যাক্সি সেবা চালু করার স্বপ্ন দেখছে উইস্ক। কোনো চালক বা পাইলট থাকবে না ট্যাক্সিতে।

ট্যাক্সি চলবে অটোপাইলট সিস্টেমে, তবে দূর থেকে পুরো বিষয়টির ওপর নজর রাখবেন একজন মানব পাইলট। উইস্কের আশা, যাত্রীদের ওঠা-নামার কাজে সরাসরি দালানের ছাদ ব্যবহার করতে পারবে ট্যাক্সিগুলো।

আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই বাণিজ্যিক সেবাটি চালু করতে চায় উইস্ক। সে সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ২০টি বাজারে বছরে এক কোটি ৪০ লাখ ফ্লাইট পরিচালনার আশা করছে কোম্পানিটি।

ক্ষেত্রবিশেষে এয়ার ট্যাক্সিকে ‘উড়ুক্কু গাড়ি’ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, পার্থক্য রয়েছে দুই ধরনের যানে। কার্যকারিতার বিচারে গাড়ির চেয়ে হেলিকপ্টারের সঙ্গেই মিল বেশি যানগুলোর। উইস্ক ছাড়াও একই ধরনের সেবা চালু করার চেষ্টা করছে জোবি এভিয়েশন, ভোলোকপ্টার, ইহ্যাং এবং আর্চারের মতো কোম্পানিগুলো।

এ খাতে বিনিয়োগ করছে হিউন্দাই, টয়োটা, এয়ারবাস, বোয়িং, বেল এবং উবারের মতো প্রথমসারির কোম্পানিগুলো। বাজার বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ২০৩৫ সাল নাগাদ উড়ুক্কু ট্যাক্সি বাজারের আকার হবে ১৫ হাজার কোটি ডলার।