অ্যামাজনে থাকা নিজের শেয়ার বিক্রির ধারা অব্যাহত রেখেছেন জেফ বেজোস। সাম্প্রতিক দিনগুলোয় সব মিলিয়ে চারশ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের শেয়ার বিক্রি করেছেন মার্কিন এই ধনকুবের।
১৯৯৪ সালে বেজোসের প্রতিষ্ঠিত এ প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানিটি বলেছে, এ মাসে নিজের দুই কোটি ৪০ লাখ অ্যামাজন শেয়ার বিক্রি করেছেন তিনি।
কোম্পানির নির্বাহী চেয়ারম্যানের পদে থাকা বেজোস সর্বশেষ অ্যামাজনের শেয়ার বিক্রি করেছিলেন ২০২১ সালে।
এ মাসের শুরুতে কোম্পানিটি বলেছিল, আগামী বছরজুড়ে পাঁচ কোটি শেয়ার বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছেন বেজোস, যার বর্তমান বাজারমূল্য ৮৪০ কোটি ডলার।
গেল শুক্রবার আদালতে জমা দেওয়া এক নথিতে এ শেয়ার বিক্রির প্রথম পর্বের ঘোষণা দেয় অ্যামাজন, যেখানে বিক্রি হয়েছে এক কোটি ২০ লাখ শেয়ার। আর মঙ্গলবার আরও এক কোটি ২০ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেয় কোম্পানিটি।
এর আগেও জনকল্যাণের লক্ষ্যে অ্যামাজনের শেয়ার বিক্রি করতে দেখা গেছে বেজোসকে, এর সবচেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাটি ২০২২ সালের।
গত বছর ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সিয়াটল শহর থেকে নিজের বাসস্থান বদলে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামি শহরে চলে গেছেন বেজোস, যার ফলে তার বিক্রি করা চারশ কোটি ডলার মূল্যের শেয়ার বিক্রিতে যে ২৮ কোটি ডলার কর জমা দিতে হতো, তা থেকে বেঁচে গেছেন তিনি।
বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোনো শেয়ার বিক্রি বা অন্য কোনো দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ থেকে আড়াই লাখ ডলারের বেশি লাভে সাত শতাংশ শুল্ক কেটে রাখা হয় ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে। তবে ফ্লোরিডায় এমন বাধ্যবাধকতা নেই।
তবে, নিজের শেয়ার বিক্রির জন্য ফেডারেল ট্যাক্স দিতে হবে বেজোসকে।
ওয়াশিংটনে কোনো কোম্পানির বড় শেয়ার বিক্রিতে নতুন করে শুল্ক জারির সম্ভাব্য প্রভাব থেকে বাঁচার লক্ষ্যেই বেজোস নিজ ঠিকানা বদলে ফ্লোরিডায় নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, এমন গুঞ্জনও রয়েছে।
গত বছর অ্যামাজনের শেয়ারমূল্য বেড়েছে ৭০ শতাংশ। আর এর পরপরই তার এ শেয়ার বিক্রির পদক্ষেপ এল।
নভেম্বরে বেজোস বলেছিলেন, তার মা বাবা সম্প্রতি মায়ামিতে ফিরে গেছেন, যেখানে ছোটবেলায় কিছু সময় কাটিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া, তাদের কাছাকাছি থাকার ইচ্ছার কথাও বলেন বেজোস। পাশাপাশি, লঞ্চপ্যাড কেপ ক্যানাভেরালে নিজস্ব বাণিজ্যিক রকেট প্রকল্প ব্লু অরিজিনের কার্যক্রম বেড়ে যাওয়াকেও এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
“লরেন ও আমি মায়ামি ভালোবাসি,” ইনস্টাগ্রামে লেখেন নিজের বাগদত্তা লরেন সানচেজের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে লেখেন বেজোস।
“এজন্যই আমি উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ছেড়ে মায়ামিতে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি।”
এত শেয়ার বিক্রির পরও এখনও কোম্পানির সবচেয়ে বড় অংশীদার ও বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে নিজের অবস্থান অক্ষুণ্ণ রেখেছেন বেজোস, যেখানে তার সম্পদ ১৯ হাজার কোটি ডলারের বেশি।