জাপানে আসছে এআই চালিত ডেটিং অ্যাপ

টোকিওর ৫০ বছর বয়সী এক তৃতীয়াংশ পুরুষই কোনো দিন বিয়ে করেননি। এ ছাড়া, জাপানের ২০ বছর বয়সী ৪৬ শতাংশ পুরুষ ও ৩০ শতাংশ নারী কখনও ডেটিং করেননি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2024, 11:27 AM
Updated : 24 March 2024, 11:27 AM

বিয়ে ও জন্মহার দিন দিন কমছে জাপানে। দেশটির সরকারের জন্যও এটি একটি চ্যালেঞ্জ। জনসংখ্যার এ সংকট মোকাবেলায় দেশটির রাজধানী টোকিওতে আয়োজিত হয়ে আসছে বিভিন্ন ম্যাচমেকিং ইভেন্ট, যেখানে যুগলদের দেখা করার সুযোগ তৈরি হয়।

তবে, প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে জাপানের সরকার এবার নিয়ে আসছে এআই চালিত ডেটিং অ্যাপ, যা বসন্তের শুরুতেই প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে। টোকিওর এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ এখন এ অ্যাপের মাধ্যমে আরও ভালো ফলাফলের আশা করছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছেন রয়টার্স।

অ্যাপটি বিয়ে করতে ইচ্ছুক মানুষদের ১০০টিরও বেশি প্রশ্ন করবে। উদাহরণ হিসাবে, “আপনি কী ধরনের মানুষ সহ্য করতে পারেন না?” বা “আপনি আপনার অনুভূতি প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন কিনা?”

প্রায় দেড় লাখ যুগলের প্রতিক্রিয়া থেকে সংগ্রহ করা বিশাল তথ্যতভাণ্ডারের ওপর ভিত্তি করে পরামর্শ দেবে অ্যাপটি।

অনলাইন সাক্ষাতকারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করেছে টোকিও সরকার। এ ছাড়া, তারা একা বা কারো সঙ্গে কোনো সম্পর্কে জড়িত নন সেটি প্রমাণ করার কাগজও দেখাতে হবে প্রতিক্রিয়ায়।

টোকিও’র বোটানিকাল গার্ডেনে এক ম্যাচমেকিং ইভেন্টে অংশ নেওয়া ৫৬ বছর বয়সী সরকারি কর্মচারী কাওরি শিরাতোরিকে এ পদ্ধতি আশ্বস্ত করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

“আমি নতুন অ্যাপটি ব্যবহার করতে চাই।” – ওই আয়োজন থেকে কোনো ম্যাচ ছাড়াই চলে যাওয়ার আগে বলেন তিনি।

“আকর্ষণীয় লেগেছে এমন একজনের সঙ্গে কথা বলার জন্যই সাহস যুগিয়েছিলাম আমি। কিন্তু সবাই তার কাছে ছুটে গেল, তাই আমি কোনো সুযোগই পেলাম না।”

ফুজিতা নামের ৩২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি বলেন এতদিন চাকরিতে খণ্ডকালীন কর্মী ছিলেন বলে সঙ্গী খুঁজতে দ্বিধা বোধ করতেন তিনি। একটি নার্সিং হোমে চাকরি নিশ্চিত হওয়ার পরে তিনি এখন সুন্দর সময় কাটানোর জন্য একজন সঙ্গী খুঁজছেন।

“অ্যাপটি টোকিওর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তত্ত্বাবধান করা হলে এটিকে বিশ্বাস করা যায়; কারণ আমি মনে করি তারা আরও যত্ন নিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য পরিচালনা করবে।”

২০৩০ সাল থেকেই টোকিওর জনসংখ্যা কমতে শুরু করবে বলে উল্লেখ করেছে রয়টার্স। আর এ সংকট মোকাবেলায় পরের মাস থেকে শুরু হওয়া অর্থবছরে বিয়ে-সহায়তা পরিষেবার জন্য নিজেদের বাজেট আগের থেকে প্রায় দ্বিগুণ করবে টোকিও সরকার, যা ২২ লাখ মার্কিন ডলারের সমান। সাইতামা ও ইবারাকি প্রিফেকচারের মতো কাছাকাছি অঞ্চলের প্রশাসনের সঙ্গে যোগ দিয়ে জাপানের রাজধানী ম্যাচমেকিং অ্যাপ পরিষেবাগুলো নিয়ে আসবে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে৷

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সরকারও দেশটির কমতে থাকা জন্মহারকে এ দশকে পদক্ষেপ নেওয়ার মতো একটি শীর্ষ সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করেছে। দেশটির জাতীয় জনসংখ্যা ২০০৮ সালে সর্বোচ্চ হওয়ার পর থেকেই কমছে।

টোকিওর ৫০ বছর বয়সী এক তৃতীয়াংশ পুরুষই কখনো বিয়ে করেননি। এ ছাড়া, জাপানের এক কর্মসংস্থান কোম্পানি ‘রিক্রুট হোল্ডিংসে’র তথ্য অনুসারে, জাপানের ২০ বছর বয়সী ৪৬ শতাংশ পুরুষ ও ৩০ শতাংশ নারী কখনও ডেটে যাননি।

“যারা বিয়ে করতে ইচ্ছুক কিন্তু কোথায় যাবেন জানেন না বা শুরু করতে ভয় পাচ্ছেন, আমরা তাদের জন্য একটি সহজ এন্ট্রি পয়েন্ট তৈরি করার চেষ্টা করছি।,” – বলেছেন টোকিওর সরকারি কর্মকর্তা আসাকো সুয়ামা, তিনি শহরের বিয়ে সহায়য়া পরিষেবার নেতৃত্ব দেন।

টোকিওতে বসবাস করেন, কাজ বা পড়াশোনা করেন এমন সকলের জন্য প্রকাশ হতে যাওয়া অ্যাপটিতে আয়ের প্রমাণও দিতে হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।