পুঁজিবাজার খোলার পর লেনদেন হয়েছে তিন দিন। এর মধ্যে দুই দিনই সূচক পতন দেখল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।
Published : 28 Jul 2024, 06:16 PM
আগের দিনের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের প্রথম দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছিল ঊর্ধ্বমুখী সূচক নিয়ে; কিন্তু দিন শেষ হয়েছে প্রধান ৩০ পয়েন্ট হারিয়ে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ও কারফিউয়ের অচলাবস্থা কাটিয়ে পুঁজিবাজার খোলার পর লেনদেন হয়েছে তিন দিন। এর মধ্যে দুই দিনই সূচক পতন দেখল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।
কেবল সূচক পতন নয়, রোববার ডিএসইতে অধিকাংশ শেয়ারের দাম কমেছে, সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেন।
সূচকের ঘরে আগের দিনের ৫ হাজার ৩০৮ পয়েন্ট নিয়ে এদিন লেনদেন শুরু হয়েছিল ডিএসইতে। ধারাবাহিক পতনের পর ডিএসইক্স ৫ হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে থেমেছে।
গত তিন মাসে মিশ্র ধারায় চলা পুঁজিবাজারে বেশিরভাগ সময়ে পতন দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। সেই নেতিবাচক ধারা কাটিয়ে জুনের মাঝামাঝি সময় থেকে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বাজার।
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ডিএসই সূচক ছিল ঊর্ধমুখী, লেনদেনেও ছিল চাঙ্গাভাব। কিন্তু সেই প্রবণতা এক সপ্তাহও টিকতে পারেনি। মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার আঁচ লাগে পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে তৃতীয় সপ্তাহে কারফিউ শুরু হলে তিন দিন বন্ধ থাকে পুঁজিবাজার।
গত ২৪ জুলাই কারফিউ শিথিল করে তিন ঘণ্টার জন্য পুঁজিবাজার খোলা হলে প্রথম দিনেই ৯৬ পয়েন্ট পড়ে যায় ডিএসই প্রধান সূচক। পরদিন সূচকে ৬২ পয়েন্ট যোগ হলেও তৃতীয় দিনে ফের প্রায় ৩০ পয়েন্ট হারাল।
থেমে থেমে বড় পতন হওয়ায় গত এক মাসে ডিএসইর প্রধান সূচক মাত্র ৫৫ পয়েন্ট এগিয়েছে।
রোববার লেনদেনে আসা ৩৯২টি কোম্পানির মধ্যে ২৬১টির শেয়ার দর হারিয়েছে। দর বেড়েছে ৮৮টির। ৪৩টি কোম্পানির শেয়ার আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইতে এদিন মোট ৪৮৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যেখানে আগের দিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৯৭ কোটি টাকা।
এগিয়েছে ব্যাংক খাত
ব্যাংক খাত দির্ঘদিন পরে ডিএসইর লেনদেনে প্রথম অবস্থানে চলে এসেছে রোববার। এদিন মোট লেনদেনের ১৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ অবদান রেখেছে এ খাতের ৩৬টি কোম্পানি। এর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ২১টির।
চলতি মাসের পুরোটা সময়ে লেনদেনে শীর্ষে অবস্থান থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাত ১৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ অবদান রেখেছে রোববার। মোট ৩৪টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ৩০টি।
৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ অবদান রেখে তৃতীয় অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের ৪৩টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৭টির দর বেড়েছে।
টানা তৃতীয় দিনের মত দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা বা ১০ শতাংশ দাম বেড়েছে সম্প্রতি তালিকাভূক্ত হওয়া কোম্পানি টেকনো ড্রাগস লিমিটেডের। আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৪ টাকা ২০ পয়সা দাম বেড়ে সবশেষ লেনদেন হয়েছে ৪৬ টাকা ৫০ পয়সায়। দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে উঠেছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ওয়ান ব্যাংক।
নিয়ম অনুযায়ী একদিনে কোনো প্রতিষ্ঠান তিন শতাংশের বেশি দর হারাতে পারবে না। তাতে সর্বোচ্চ সীমার ৩ শতাংশ শেয়ার দর হারায় সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইজেনারেশন ও লিব্রা ইনফিউশন।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লেনদেন বাড়তে আরেকটু সময় লাগতে পারে মনে হচ্ছে। পতন দীর্ঘায়িত না হলেই ভালো। কারফিউ শিথিল হলেও অনেকের মনে তো আতঙ্ক আছে অর্থনীতি নিয়ে। লেনদেন আরো না বাড়লে অনেক ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান চলতে পারবে না।”
আগের দুই দিন তিন ঘণ্টা করে লেনদেন চলে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে। কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ায় রোববার লেনদেন হয়েছে চার ঘণ্টা। সোম ও মঙ্গলবারও এ নিয়মে চলবে।