পিছিয়ে পড়ার পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ঢাকা ডার্বিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারিয়েছে আলফাজ আহমেদের দল।
Published : 13 Feb 2024, 04:10 PM
দুই দলের কোয়ার্টার-ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। গ্রুপ সেরা হতে আবাহনীর দরকার ছিল ড্র। শুরুতে এগিয়ে গিয়ে জয়ের আশাও জাগাল তারা। কিন্তু মর্যাদার লড়াইয়ে দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল মোহামেডান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়েই গ্রুপ সেরা হয়ে ফেডারেশন কাপের নকআউট পর্বে উঠল সাদাকালো জার্সিধারীরা।
গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে মোহামেডান। কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট আবাহনীকে এগিয়ে নেওয়ার পর সমতা ফেরান এমানুয়েল সানডে। পরে জয়সূচক গোলটিও করেন এই নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার।
তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হলো শিরোপাধারী মোহমেডান। মৌসুমের প্রথম ডার্বিতে হেরে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হলো আবাহনী।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ের শুরুতে ঝাঁঝ ছিল না তেমন একটা। বলের নিয়ন্ত্রণে মনোযোগী হয় দুই দল। একাদশ মিনিটে দূরপাল্লার শটে চেষ্টা করেছিলেন আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড জোনাথান ফের্নান্দেস। তবে বল বেরিয়ে যায় পোস্টের বেশ বাইরে দিয়ে। ষোড়শ মিনিটে দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন সানডে, তবে দারুণ ট্যাকলে আবাহনীকে বিপদমুক্ত করেন মিলান শেখ সুলেমানি।
৩৬তম মিনিটে ওয়াশিংতন ব্রান্দাওয়ের হাফ ভলি ক্রসবারের একটু উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। তবে দুই মিনিট পরই এগিয়ে যায় আবাহনী। হাসান মুরাদের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে ওয়াশিংতন বল বাড়ান বক্সে, প্রথম স্পর্শে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পায়ের শটে সাকিব আল হাসানকে পরাস্ত করেন কর্নেলিয়াস।
আবাহনীর রক্ষণের বোঝাপড়ার ভুলে ৫১তম মিনিটে সমতা ফিরে ম্যাচে। মোজাফ্ফরভের ক্রস দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে গিয়ে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন সানডে। বেঞ্চে মুখ গোমড়া করে বসে থাকা মোহামেডান কোচ আলফাজ লাফিয়ে উদযাপন শুরু করেন।
তিন মিনিটের মধ্যে আরেক গোলে আবারও উদযাপনের উপলক্ষ্য পেয়ে যায় মোহামেডান। হাসান মুরাদের থ্রো ইনে দোসো সিদিকের হেড পাসে দূরের পোস্টে ফাঁকায় থাকা সানডে আলতো টোকায় খুঁজে নেন জাল।
৭৭তম মিনিটে ওয়াশিংতনের ক্রস বাঁক খেয়ে জালের দিকে ছুটছিল, সাকিব লাফিয়ে গ্লাভসে টোকায় আটকে দেন। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে রহিম উদ্দিনের শট ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়ে গেলে আবাহনীর আর সমতায় ফেরা হয়নি।
গ্রুপের অন্য ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে চট্টগ্রাম আবাহনী। কিন্তু বাইলজ অনুযায়ী এই গ্রুপে চার দল হওয়ায় চতুর্থ দলের সঙ্গে ম্যাচের ফল, পয়েন্ট কোনোটাই বিবেচিত হবে না। এ কারণে জিতেও নকআউট পর্বে ওঠা হলো না বন্দরনগরীর দলটির।
তিন গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপের সঙ্গে তৃতীয় সেরা দুই দল হিসেবে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ‘এ’ গ্রুপের তৃতীয় দল হিসেবে ১ পয়েন্ট পেয়েছিল রহমতগঞ্জ। ‘সি’ গ্রুপে তলানিতে থাকা শেখ রাসেল খুলতে পারেনি পয়েন্টের খাতাই!
কোয়ার্টার-ফাইনাল শুরু হবে আগামী এপ্রিল থেকে। মোহামেডান খেলবে শেখ রাসেলের বিপক্ষে। অন্য তিন কোয়ার্টার-ফাইনালে মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা কিংস-রহমতগঞ্জ, শেখ জামাল-পুলিশ এফসি ও আবাহনী-ফর্টিস এফসি।