ওয়েলসকে গুঁড়িয়ে গ্রুপ সেরা ইংল্যান্ড

জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবারের মতো এক ম্যাচে জোড়া গোল করলেন মার্কাস র‌্যাশফোর্ড।

একটি পয়েন্ট পেলেই প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ হতো ইংলিশদের। তবে শক্তিশালী দলটি সেই ভাবনাতেই গেল না। ছন্নছাড়া ওয়েলসের ওপর শুরু থেকেই চাপ বাড়াল তারা। আর বিরতির পর বইয়ে দিল আক্রমণের ঢেউ। তাতে ভেসে গেল ওয়েলসের স্বপ্ন। গ্রুপ সেরা হয়ে নকআউট পর্বে উঠল ইংল্যান্ড।

আল রাইয়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে ‘বি’ গ্রুপের শেষ রাউন্ডের ম্যাচে আলো ছড়ালেন মার্কাস র‌্যাশফোর্ড। তার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ৩-০ ব্যবধানে জিতল গ্যারেথ সাউথগেটের দল। অন্য গোলটি ফিল ফোডেনের।

একই সময়ে শুরু গ্রুপের আরেক ম্যাচে ইরানকে ১-০ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র।

তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ৭। এক জয় ও দুই ড্রয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ যুক্তরাষ্ট্র।

কিছুটা ঢিমেতালে শুরু ম্যাচের দশম মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য কোনো আক্রমণ হয়। হ্যারি কেইনের ডি-বক্সে বাড়ানো থ্রু পাসে গোলরক্ষককে একাও পেয়ে যান র‌্যাশফোর্ড; কিন্তু ঠিক সময়ে এগিয়ে এসে ইংলিশ ফরোয়ার্ডের প্রচেষ্টা রুখে দেন গোলরক্ষক ড্যানি ওয়ার্ড।

সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মাঠে ইংল্যান্ডের আধিপত্য বাড়ে। খুব বেশি আক্রমণ অবশ্য করতে পারছিল না তারা, তবে ওয়েলস যেন নিজেদের ঘরেই থাকার পণ করেছিল!

৩৮তম মিনিটে পাসিং ফুটবলে দারুণ একটি আক্রমণ শাণায় ইংল্যান্ড। কিন্তু শেষটায় উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন ফোডেন।

বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে ডি-বক্সের বাইরে থেকে আচমকা শটে চেষ্টা করেন ওয়েলসের মিডফিল্ডার জো অ্যালেন। যদিও বল লক্ষ্যের ধারেকাছেও ছিল না।

প্রথমার্ধে নিজের ছায়া হয়ে থাকা গ্যারেথ বেলকে বিরতির পর আর নামাননি কোচ রব পেজ। তার বদলি নামেন নটিংহ্যাম ফরেস্টের ফরোয়ার্ড ব্রেনান জনসন।

এর খানিক পরই পরপর দুই মিনিটের দুই গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইংল্যান্ড। আর ওয়েলসের আশা হয়ে যায় ফিকে।

৫০তম মিনিটে প্রায় ২০ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে প্রথম গোলটি করেন র‌্যাশফোর্ড।

পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা ওয়েলস কাটিয়ে উঠবে কী, পরের মিনিটেই দ্বিতীয় গোল হজম করে তারা। এই গোলেও জড়িয়ে র‌্যাশফোর্ডের নাম। তিনি প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নেওয়ার পর কেইন ডান দিক থেকে দূরের পোস্টে ক্রস বাড়ান আর প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন ফোডেন।

বিশ্বকাপে ২২ বছর বয়সী ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডারের এটা প্রথম গোল।

৬৮তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পান র‌্যাশফোর্ড। এই গোলে অবশ্য গোলরক্ষকের দায় আছে। ডান দিক দিয়ে বল পায়ে ঢুকে কারিকুরিতে সামনের একজনের বাধা এড়িয়ে শট নেন র‌্যাশফোর্ড। সোজাসুজি বল ওয়ার্ডের পায়ে লেগে জালে জড়ায়।

২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ক্যারিয়ারে এই প্রথম জাতীয় দলের হয়ে এক ম্যাচে জোড়া গোল করলেন।

আসরে এটি তার তৃতীয় গোল। ইরানের বিপক্ষে ৬-২ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে প্রথমটি করেছিলেন তিনি।

খানিক পর হ্যাটট্রিকও হতে পারত র‌্যাশফোর্ডের। তবে এ যাত্রায় তার শট কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। ৭৬তম মিনিটে জুড বেলিংহ্যামের কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান ওয়ার্ড।

বাকি সময়েও তেমন কিছু করতে পারেনি ওয়েলস। আক্রমণের ধারা ধরে রেখেই ম্যাচ শেষ করে ইংল্যান্ড।

৬৪ বছর পর বিশ্ব সেরার মঞ্চে ফেরা রাঙাতে পারল না ওয়েলস। দুই হারের পাশে একটি ম্যাচে ড্র করে শেষ হলো তাদের বিশ্বকাপ মিশন।

শেষ ষোলোয় আগামী রোববার ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ সেনেগালের মুখোমুখি হবে ১৯৬৬ আসরের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।