ঘুরে দাঁড়িয়ে ইন্টারকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শেষ আটে আতলেতিকো

দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে ইন্টার মিলানের জয়রথ থামিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল আতলেতিকো মাদ্রিদ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2024, 10:50 PM
Updated : 13 March 2024, 10:50 PM

প্রথম লেগের ঘাটতি তো ছিলই, ফিরতি লেগে আরেকটি গোল হজম করে আতলেতিকো মাদ্রিদের কাজটা হয়ে উঠল আরও কঠিন। তবে হাল ছাড়ল না তারা। অঁতোয়ান গ্রিজমান ব্যবধান কমিয়ে দলকে লড়াইয়ে রাখার পর বদলি নেমে শেষ দিকে গোল করে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে টেনে নিলেন মেমফিস ডিপাই। এরপর টাইব্রেকারে দুটি শট ঠেকিয়ে নায়ক হয়ে গেলেন ইয়ান ওবলাক। ইন্টার মিলানকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল দিয়েগো সিমেওনের দল।

মাদ্রিদের ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানো স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে আতলেতিকো ২-১ গোলে জিতলেও দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ৩-২ গোলে জেতে স্প্যানিশ দলটি।

সেরি আর টেবিলে ১৬ পয়েন্টে এগিয়ে শীর্ষে থাকা ইন্টার প্রথম লেগে ঘরের মাঠে জিতেছিল ১-০ গোলে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১৩ ম্যাচ জিতে ফিরতি লেগের লড়াইয়ে নামে সিমোনে ইনজাগির দল।

অন্যদিকে, আতলেতিকোর সময়টা ভালো যাচ্ছিল না মোটেও। লা লিগার টেবিলে তাদের অবস্থান চারে, সবশেষ ম্যাচে কাদিসের বিপক্ষে হেরে যায় ২-০ গোলে। সেই দলই এবার ঘরের মাঠে উজ্জীবিত পারফরম্যান্সে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গত আসরের রানার্সআপদের বিদায় করে দিল শেষ ষোলো থেকে। 

প্রথম লেগে একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে না পারা আতলেতিকো এবার প্রথম পাঁচ মিনিটে গোলের জন্য দুটি শট নিয়ে দুটিই লক্ষ্যে রাখে। স্তেফান সাভিচের হেড অনায়াসে ঠেকানোর পর কাছ থেকে সামুয়েল লিনোর জোরাল শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক ইয়ান সমের।

ত্রয়োদশ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় ইন্টার। হাকান কালহানোগলুর পাস ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন ডেনজেল ডামফ্রিস। ডান দিক থেকে ডাচ ডিফেন্ডারের প্রথম শট কাছের পোস্টে ঠেকানোর পর ফিরতি শটও আটকে দেন গোলরক্ষক ওবলাক।

২৯তম মিনিটে আরেকটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে আতলেতিকো। মারিও এরমোসোর ক্রসে বক্সে আলভারো মোরাতার জোরাল হেড ঝাঁপিয়ে ঠেকান সুইস গোলরক্ষক সমের।

৩৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় ইন্টার। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের পাস বক্সে পেয়ে নিকোলো বারেল্লা খুঁজে নেন ফেদেরিকো দিমারকোকে। প্রথম স্পর্শে ডান পায়ের শটে দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন ২-০ করে ফেলেন ইতালিয়ান ডিফেন্ডার।

দুই মিনিট পরই গোল করে ম্যাচে সমতা টানেন গ্রিজমান। কোকের ক্রস ক্লিয়ার করতে পারেনি সফরকারীরা। কাছ থেকে বাঁ পায়ের শটে বল জালে পাঠান ফরাসি ফরোয়ার্ড।

তিন সপ্তাহ আগে প্রথম লেগে অ্যাঙ্কেলে চোট পেয়ে বাইরে থাকার পর এই ম্যাচ দিয়েই মাঠে ফেরেন তিনি।

আতলেতিকোর রেকর্ড গোলস্কোরার গ্রিজমানের গোল হলো ১৭৬টি। চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৮ ম্যাচে তার গোল এখন ৬টি।

দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে গোলসংখ্যা বাড়ানোর দারুণ এক সুযোগ পান তিনি। ডান দিক থেকে মার্কোস ইয়োরেন্তের পাস বক্সে ফাঁকায় পান সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। তার ডান পায়ের শট ঠেকান সমের।

৮১তম মিনিটে সব অনিশ্চয়তার ইতি টানার ভালো সুযোগ পান বারেল্লা। তবে, লাউতারো মার্তিনেসের পাস পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে ওয়ান-অন-ওয়ানে গোলরক্ষক বরাবর শট করেন ইতালিয়ান মিডফিল্ডার।

৭৯তম মিনিটে মোরাতার বদলি নামা মেমফিসের ৮৫তম মিনিটে নেওয়া শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৮৭তম মিনিটে আর হতাশ হতে হয়নি তাকে। কোকের পাস বক্সে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পায়ের শটে দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ সমতা টানেন ডাচ ফরোয়ার্ড।

তিন মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ হারান আতলেতিকোর রদ্রিগো রিকেলমে। গ্রিজমানের পাস ছয় গজ বক্সের বাইরে পেয়ে অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন তিনি। হতাশায় মাটিতে শুয়ে পড়েন কোচ সিমেওনে!

ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর পর ৯৭তম মিনিটে মেমফিসের একটি শট ঠেকান সমের। ১০৩তম মিনিটে কর্নারে মার্তিনেসের হেড যায় বাইরে দিয়ে।

টাইব্রেকারে দুই দলই প্রথম শটে পায় গোলের দেখা। এরপর ইন্টারের আলেক্সিস সানচেসের শট ঠেকান ওবলাক। আতলেতিকোর সাউল নিগেসের শট ঠেকান সমের।

ডেভি ক্লাসেনের নেওয়া ইন্টারের তৃতীয় শটও ঠেকিয়ে দেন ওবলাক। এরপর আতলেতিকোর দুটি ও ইন্টারের একটি শট খুঁজে পায় ঠিকানা। সফরকারীদের পঞ্চম শটে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড মার্তিনেস উড়িয়ে মারলে উল্লাসে মেতে ওঠে গোটা ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানো।

আরেক ম্যাচে ঘরের মাঠে পিএসভি আইন্দহোভেনকে ২-০ গোলে হারিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলের অগ্রগামিতায় শেষ আটে উঠেছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। দ্বিতীয় লেগে শুরুতে জেডন স্যানচো জার্মান দলটিকে এগিয়ে নেওয়ার পর যোগ করা সময়ে ব্যবধান বাড়ান মার্কো রয়েস।