চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল যারা

বুধবার রাতে শেষ আটে ওঠা সবশেষ দুই দল আতলেতিকো মাদ্রিদ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2024, 11:27 PM
Updated : 13 March 2024, 11:27 PM

দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ গ্রুপ পর্ব ও শেষ ষোলোর রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের পর ২০২৩-২৪ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এখন কোয়ার্টার-ফাইনালের মঞ্চে। সবশেষ দুই দল হিসেবে বুধবার রাতে শেষ আটে উঠেছে আতলেতিকো মাদ্রিদ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।

শেষ ষোলোয় প্রথম লেগে ইন্টার মিলানের মাঠে ১-০ গোলে হেরে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় ছিল আতলেতিকো। সেই ধাক্কা সামলে ফিরতি দেখায় দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা, ঘরের মাঠে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে জেতে ২-১ গোলে।

তবে দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন ২-২ হওয়ায় লড়াই গড়ায় টাইব্রেকারে। পেনাল্টি শুটআউটে ৩-২ গোলে জিতে কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠে গ্রুপ পর্বে অপরাজিত থেকে ও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট পর্বে ওঠা আতলেতিকো।

ডাচ ক্লাব পিএসভি আইন্দহোভেনকে ফিরতি লেগে ২-০ গোলে হারিয়ে শেষ আটে উঠেছে ডর্টমুন্ড। প্রথম লেগ ১-১ গোলে ড্র হওয়ায় দুই লেগ মিলিয়ে জার্মান ক্লাবটির জয় ৩-১ ব্যবধানে।

গ্রুপ পর্বেও ডর্টমুন্ডের পারফরম্যান্স ছিল আশা জাগানিয়া। তিন জয় ও দুই ড্রয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।  

এর আগে কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে ম্যানচেস্টার সিটি, রেয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ, বার্সেলোনা, আর্সেনাল ও পিএসজি।

টুর্নামেন্টের রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন রেয়াল গ্রুপ পর্বে ছয় ম্যাচের সবগুলো জয়ের পর নকআউট পর্বেও শুরুতে জয়ের ধারা ধরে রাখে। শেষ শোলোর প্রথম লেগে তারা হারিয়ে দেয় লাইপজিগকে।

তবে ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে জার্মান ক্লাবটির কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে কার্লো আনচেলত্তির দল। শেষ পর্যন্ত কোনোমতে ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র করে, দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ অগ্রগামিতায় পরের ধাপে পা রাখে ইউরোপের সর্বোচ্চ ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা।

গতবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি এবারও দুর্দান্ত ছন্দে এগিয়ে চলেছে। তারাও গ্রুপ পর্বে সব ম্যাচ জিতে পা রাখে নকআউট পর্বে। শেষ ষোলোতেও একইভাবে নিজেদের মেলে ধরে পেপ গুয়ার্দিওলার দল।

ডেনমার্কের ক্লাব কোপেনহেগেন শিরোপাধারীদের কোনোরকম চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেনি। দুই লেগে ৩-১ ব্যবধানে জিতে, ৬-২ অগ্রগামিতায় কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠে ইংলিশ ক্লাবটি।

প্রতিযোগিতার ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখও অপরাজিত থেকে ও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোয় ওঠে; গ্রুপ পর্বে তারা ছয় মাচের পাঁচটিতে জেতে ও একটি ড্র করে।

নকআউট পর্বের প্রথম ধাপে লাৎসিওর বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে বসে বায়ার্ন। তবে, ফিরতি দেখায় দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩-০ গোলে জিতে কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা।

ইউরোপের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনার গ্রুপ পর্বের যাত্রা অতটা সুখকর ছিল না; ছয় ম্যাচের দুটিতে হেরে যায় দলটি। তবে চার ম্যাচ জিতে গ্রুপ সেরা হয়েই নকআউট পর্বে ওঠে তারা।

শেষ ষোলোর প্রথম লেগেও হোঁচট খায় কাতালান ক্লাবটি, তাদের ১-১ গোলে রুখে দেয় নাপোলি। কিন্তু দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের ৩-১ গোলে গুঁড়িয়ে, দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ অগ্রগামিতায় এগিয়ে যায় শাভির দল।

গ্রুপ পর্বে পিএসজির যাত্রা ছিল ভীষণ কঠিন। ছিটকে পড়ার শঙ্কায়ও পড়েছিল তারা। শেষ পর্যন্ত দুটি করে জয় ও ড্রয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে উঠে আসে দলটি।

সেই তুলনায় শেষ ষোলোর বাধা ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা অনায়াসেই পার হয়। রেয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে ঘরের মাঠ ২-০ গোলে জয়ের পর ফিরতি লেগে ২-১ ব্যবধানে জিতে পিএসজি পা রাখে কোয়ার্টার-ফাইনালে।

গ্রুপ পর্বে আর্সেনালের পারফরম্যান্স ছিল বেশ ভালো। চার জয় ও এক ড্রয়ে গ্রুপ সেরা হয় তারা।

কিন্তু শেষ ষোলোয় তাদের পড়তে হয় কঠিন পরীক্ষার মুখে; পর্তুগিজ ক্লাব পোর্তোর মাঠে প্রথম লেগে ১-০ গোলে হেরে যায় তারা। ফিরতি লেগে অবশ্য একই ব্যবধানে জয় পায় আর্সেনাল।

দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন ১-১ হওয়ায় লড়াই গড়ায় টাইব্রেকারে, সেখানে গোলরক্ষক দাভিদ রায়ার অসাধারণ নৈপুণ্যে জিতে ১৪ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠে ইংলিশ ক্লাবটি।

অপেক্ষা এবার কোয়ার্টার-ফাইনালের লড়াইয়ের। আগামী শুক্রবার হবে কোয়ার্টার-ফাইনাল ও সেমি-ফাইনালের ড্র।