এইবারকে হারিয়ে দুইয়ে রিয়াল

মৌসুমে খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি সপ্তাহের শুরুটা বেশ ভালোই করল রিয়াল মাদ্রিদ। দুর্বল এইবারের বিপক্ষে ব্যবধান খুব বড় না হলেও মাঝমাঠ-আক্রমণভাগের নৈপুণ্যে প্রায় পুরোটা সময় চাপ ধরে রেখে দারুণ জয় পেয়েছে জিনেদিন জিদানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 April 2021, 04:08 PM
Updated : 3 April 2021, 04:42 PM

আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে শনিবার স্থানীয় সময় বিকেলে লা লিগার ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে রিয়াল। মার্কো আসেনসিওর নৈপুণ্যে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান করিম বেনজেমা।

লিগে এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচ জিতল রিয়াল, অপরাজিত রইলো টানা ৯ ম্যাচ। আর এই জয়ে বার্সেলোনাকে টপকে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠল শিরোপাধারীরা।

আগামী মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে লিভারপুলের বিপক্ষে খেলবে রিয়াল। ফিরতি লেগে আগামী ১৪ এপ্রিল ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের মাঠে খেলতে যাবে জিদানের দল। এর মাঝে আগামী শনিবার লা লিগায় তাদের প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা।

হাইভোল্টেজ তিনটি ম্যাচের আগে এমন দাপুটে পারফরম্যান্সে নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস বাড়বে রিয়ালের। তবে পুরো ম্যাচে গোলের উদ্দেশে নেওয়া ২১ শটের আটটি লক্ষ্যে, গোল মাত্র দুটি; যা কিছুটা ভাবনারও বটে। 

গত ডিসেম্বরে প্রথম দেখায় ৩-১ ব্যবধানে জয়ের পথে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন বেনজেমা। এবারও সুযোগ পেয়েছিলেন শুরুতেই; কিন্তু সঙ্গী হয় হতাশা। চতুর্থ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও ব্যর্থ হন তিনি। পরের মিনিটে মার্সেলোর ক্রসে ফরাসি ফরোয়ার্ড হেডে লক্ষ্যভেদ করলেও অফসাইডের বাঁশি বাজে।

চাপ ধরে রেখে ২১তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো রিয়াল। তবে বাঁ দিক থেকে আসেনসিওর দূরের পোস্টে নেওয়া শট ক্রসবারে বাধা পায়। ৩৬তম মিনিটে ইসকোর শটে দারুণ ফ্লিকে বল জালে জড়ান আসেনসিও; তবে ভিএআরের সাহায্যে এ যাত্রায়ও অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি।

রিয়ালের অপেক্ষা শেষ হয় ৪১তম মিনিটে। মাঝমাঠে প্রতিপক্ষের ভুলে বল পেয়ে আসেনসিওকে বাড়ান কাসেমিরো। ডি-বক্সের মুখ থেকে শট নিতে গিয়ে পড়ে যান স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড, তবে বল ঠিকই খুঁজে পায় ঠিকানা।

সের্হিও রামোসের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের আর্ম ব্যান্ড পাওয়া মার্সেলো প্রথমার্ধে খেলেন দুর্দান্ত। দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে তার আরেকটি দারুণ ক্রস ছয় গজ বক্সের বাইরে ফাঁকায় পেয়ে নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন ইসকো। পরের মিনিটে আসেনসিওর জোরালো শট অসাধারণ নৈপুণ্যে লাফিয়ে এক হাত দিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক দিমিত্রোভিচ।

একটু পর মুষলধারে বৃষ্টি নামে। রিয়ালও হারিয়ে বসে ছন্দ। ভেজা মাঠে ৬২তম মিনিটে নিজেদের ভুলে গোল খেতে বসেছিল তারা। ডান দিক থেকে লুকাস ভাসকেসের খুব সাধারণ একটি ব্যাকপাসে বলের লাইন মিস করেন থিবো কোর্তোয়া। বলের পেছনে ছুটে একেবারে শেষ মুহূর্তে স্লাইড করে ফেরান বেলজিয়ান গোলরক্ষক।

পরের ১০ মিনিটে কয়েকটি আক্রমণ করে এইবার; কোর্তোয়াকে যদিও কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি তারা। এর মাঝেই ৭৩তম মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে জয়ের সম্ভাবনা জোরালো করে রিয়াল। বাঁ দিক থেকে ভিনিসিউস জুনিয়রের ক্রসে হেডে গোলটি করেন বেনজেমা।

লা লিগায় মার্চ মাসের সেরা খেলোয়াড় বেনজেমা এই নিয়ে টানা চার ম্যাচে জালের দেখা পেলেন। এই চার ম্যাচে তার গোল হলো ছয়টি। আসরে তার মোট গোল হলো ১৮টি। ২৩ গোল নিয়ে তালিকার শীর্ষে লিওনেল মেসি। সমান ১৯টি করে গোল জেরার্দ মোরেনো ও লুইস সুয়ারেসের।

শেষ দিকে সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন বদলি নামা ভিনিসিউস। কিন্তু দুর্বল শটে হতাশ করেন বদলি নামা ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড।

২৯ ম্যাচে ১৯ জয় ও ছয় ড্রয়ে দুইয়ে ওঠা রিয়ালের পয়েন্ট ৬৩। তিনে নেমে যাওয়া বার্সেলোনার পয়েন্ট ৬২, তবে এক ম্যাচ কম খেলেছে তারা।

বার্সেলোনার সমান ২৮ ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আতলেতিকো মাদ্রিদ।