আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গন: মহামারীকালে কঠিন সময়

বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে ২০২০ হতে পারতো ভীষণ ব্যস্ত একটি বছর। মাঠের লড়াইয়ের আগাম উত্তেজনা-উন্মাদনা জেঁকে বসেছিল ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে। ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ফুটবলে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও কোপা আমেরিকা, সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া যজ্ঞ অলিম্পিক-আরও কত কিছু! সবকিছু ভেস্তে গেল প্রাণঘাতী এক ভাইরাস, ছোঁয়াচে এক রোগ কোভিড-১৯ এর ছোবলে।

আব্দুল মোমিনআব্দুল মোমিনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2020, 03:13 AM
Updated : 21 Dec 2020, 04:47 AM

অ্যাথলেট, ভক্ত-সমর্থক থেকে শুরু করে সর্বোপরি ক্রীড়াপ্রেমীদের যে বছরটা দু-হাত ভরে দেওয়ার কথা ছিল, সেটাই শেষ পর্যন্ত কেড়ে নিল অনেক কিছু। পৃথিবী জুড়ে জেঁকে বসা মহামারী কেড়ে নিল লাখো মানুষের প্রাণ, বিপর্যস্ত হলো বিশ্ব অর্থনীতি-যার কড়াঘাত পড়ল ক্রীড়াঙ্গনেও। একের পর এক স্থগিত হতে থাকল টুর্নামেন্ট। কোণঠাসা অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ‘জৈব-সুরক্ষা বলয়’ নামের ‘বন্দিশালা’ তৈরি করে দর্শকভরা স্টেডিয়ামকে দূরে ঠেলে অচেনা রূপে শূন্য গ্যালারিতে মাঠে ফিরল ফুটবল-ক্রিকেট।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তারের শঙ্কা থাকলেও কোথাও কোথাও মাঠে দর্শক ফিরতে শুরু করেছে। পুরনো রূপে ফেরার আভাস, স্বস্তি। এর মাঝেই বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয় দিয়েগো মারাদোনার মৃত্যু সংবাদ। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে গত ২৫ নভেম্বর পৃথিবীর মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ফুটবল জাদুকর। কিংবদন্তির বিদায়ে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।

২০২০ এর ক্রীড়াঙ্গন এমনই নানা রূপে বিপর্যস্ত হয়েছে। তবে, এর মাঝেও আছে ইতিবাচক ঘটনা, প্রতিকুল স্রোতে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া সংকল্প।

 

ফুটবল:

নতুন করোনাভাইরাসের জোর আঘাত

ফুটবল দুনিয়ায় নিশ্চিতভাবেই এ বছরের মূল আকর্ষণ ছিল আন্তর্জাতিক ফুটবল; গত জুন-জুলাইয়ে যে একই সঙ্গে মাঠে গড়ানোর কথা ছিল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও কোপা আমেরিকা। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সব এলোমেলো হয়ে যায়।

ফেব্রুয়ারির শেষ দিক থেকে ইউরোপে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়তে থাকে করোনাভাইরাস। দিনে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে আমেরিকা মহাদেশেও। গত ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে কোভিড-১৯ রোগকে মহামারী ঘোষণা করা হয়।

এরপরই স্থবিরতা নেমে আসতে শুরু করে জনজীবনে। বন্ধ হতে থাকে খেলাধুলা। মার্চের মাঝামাঝি প্রথমে ইউরো ও পরে কোপা আমেরিকা বন্ধের ঘোষণা আসে। দুটি টুর্নামেন্টই পিছিয়ে যায় এক বছর করে।

নতুন সূচিতে আগামী বছরের একই সময়ে হবে কোপা আমেরিকা ও ইউরো।

একে একে স্থগিত হয়ে যায় ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের সবকটি। স্থবিরতার সময় বাড়তে থাকায় ২০১৯-২০ মৌসুম ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কাও জাগে। মার্চের শেষে উয়েফা প্রধান আলেকসান্দের চেফেরিনের মন্তব্যে আশঙ্কা আরও বাড়ে-জুনের শেষ নাগাদ লিগগুলো শুরু করতে না পারলে পণ্ড হবে সব।

সব শঙ্কা সঙ্গী করে ফুটবলের ফেরা

এপ্রিলের শেষে লিগ ওয়ান কর্তৃপক্ষ তাদের ২০১৯-২০ আসর বাতিলের ঘোষণা দেয়। এতে অন্য লিগগুলোও বাতিল করার পক্ষে জোর দাবি উঠতে থাকে। তবে বড় অঙ্কের অর্থনৈতিক ক্ষতির ভয়ে এবং ফুটবলের যতটা সম্ভব স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার যুক্তিতে যেকোনো মূল্যে খেলা মাঠে ফেরানোর চেষ্টা চলতে থাকে বাকি লিগগুলোর।

প্রথম সাফল্যের মুখ দেখে জার্মানির শীর্ষ লিগ, বুন্ডেসলিগা। দীর্ঘ দুই মাস পাঁচ দিন স্থগিত থাকার পর গত ১৬ মে মাঠে ফেরে প্রতিযোগিতাটি। হাজারো নিয়মের ঘেরাটোপে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামের ফুটবলে সেই পুরনো স্বাদ না থাকলেও অনেকের কাছে দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে ফুটবল মাঠে ফেরাটাই ছিল অনেক বড় পাওয়া।

ছন্দ ধরে রেখে দুই ম্যাচ বাকি থাকতে বুন্ডেসলিগায় টানা অষ্টমবারের মতো শিরোপা উৎসব করে বায়ার্ন মিউনিখ।

রিয়ালের লা লিগা পুনরুদ্ধার, লিভারপুলের প্রতীক্ষার অবসান

বুন্ডেসলিগার দেখানো পথে অনেক নিয়মের মাঝে গত ১১ জুন ফেরে লা লিগা। ফিরতি পর্বের শুরুতে রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে শিরোপার পথে এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। কিন্তু দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মাঠে ফেরাটা হয় দু’রকম।

ছন্দ হারিয়ে বারবার হোঁচট খেতে থাকে বার্সেলোনা। সেই সুযোগে বাকি ১১ রাউন্ডকে ১১টি ফাইনাল হিসেবে দেখা জিনেদিন জিদানের দল টানা ১০ জয়ে শিরোপা উৎসব করে। আর পথ হারিয়ে দুইয়ে থেকেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় কাতালান দলটিকে।

ফুটবল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছিল হয়তো লিভারপুল। তিন দশক ধরে বুকে লালিত স্বপ্ন পূরণের খুব কাছে এসেও যে ভেঙে যেতে বসেছিল-তীরে এসে তরী ডোবার মতো অবস্থা। তাই গত ১৭ জুন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ মাঠে ফেরায় সবচেয়ে বেশি খুশি হয়তো হয়েছিল লিভারপুল শিবিরই।

লিগ মাঠে ফেরার পর প্রথম দুই রাউন্ডেই শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায় দলটির; সাত ম্যাচ হাতে রেখে চ্যাম্পিয়ন হয় লিভারপুল।

উত্থান-পতনে ইউভেন্তুসের টানা নবম

ইউরোপের শীর্ষ লিগগুলোর মধ্যে সবশেষে ফেরে সেরি আ। পুনরায় ফেরার পর্বে শিরোপা লড়াইয়ে মূল আকর্ষণ ছিল ইউভেন্তুস ও লাৎসিওকে ঘিরে। ১ পয়েন্টের ব্যবধানে শীর্ষে ছিল মাওরিসিও সাররির দল।

মৌসুমের শুরু থেকে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে চলা ইউভেন্তুস শেষ ধাপেও ছন্দে ফিরতে পারেনি। তবে ২০১৯-এর সেপ্টেম্বর থেকে অপরাজিত লাৎসিও ফেরার পর্বে আর ফর্ম ধরে রাখতে পারেনি। প্রতিপক্ষের ব্যর্থতার সুযোগে দুই ম্যাচ বাকি থাকতে টানা নবমবারের মতো লিগ শিরোপা ধরে রাখা নিশ্চিত করে তুরিনের দলটি।

নতুন ফরম্যাটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং বার্সেলোনার ভরাডুবি

ঘরোয়া লিগগুলোর দেখানো পথে অগাস্টে নতুন ফরম্যাটে ফেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনেকটা জৈব-সুরক্ষা বলয়ে এক লেগের কোয়ার্টার-ফাইনাল ও সেমি-ফাইনাল এবং ফাইনাল নিয়ে টুর্নামেন্টটির শেষ অংশের নাম দেওয়া হয় ‘মিনি টুর্নামেন্ট।’

গ্যালারিতে দর্শক না থাকার শূন্যতা থাকলেও এক লেগের নকআউট পর্বের উন্মাদনা নতুন মাত্রা স্পর্শ করে।

শেষ আটের লড়াইয়ে ফুটবল বিশ্ব সাক্ষী হয় অভাবনীয় এক ম্যাচের; গত ১৪ অগাস্ট বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হয় পাঁচবারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। পরে পিএসজিকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় জার্মান চ্যাম্পিয়নরা।

মেসির ফ্যাক্স বার্তায় হতবাক ফুটবল দুনিয়া

ক্লাবের ইতিহাসে রেকর্ড ব্যবধানে ওই হারের ১১ দিন পর ফুটবল বিশ্বকে চমকে দেওয়া এক খবর আসে গণমাধ্যমে; ফ্যাক্স বার্তায় বার্সেলোনার সঙ্গে দুই দশকের সম্পর্কের ইতি টানার ইচ্ছার কথা জানান লিওনেল মেসি। প্রিয় তারকার দল ছাড়ার ঘোষণা বার্সেলোনা সমর্থকদের জন্য ছিল অনেক বড় আঘাত।

তাকে ধরে রাখার দাবিতে বার্সেলোনার রাস্তায় নেমে আসে হাজারো সমর্থক। এর পেছনে তখনকার সভাপতি জোজেপ মারিয়া বার্তোমেউকে দায়ী করে তার পতদ্যাগের দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে তারা।

মেসির চাওয়া ছিল চুক্তির একটি ধারা কার্যকর করে কাম্প নউ ছেড়ে যাওয়ার। তবে ক্লাবের দাবি ছিল, ওই ধারা কার্যকর করার মেয়াদ গত ১০ জুনে শেষ হয়ে গেছে। ফলে চুক্তি অনুযায়ী হয় তাকে থাকতে হবে ২০২০-২১ মৌসুমের শেষ পর্যন্ত, নয়তো পরিশোধ করতে হবে রিলিজ ক্লজের পুরো ৭০ কোটি ইউরো।

১০ দিনের টানাপোড়েনের পর ইচ্ছার বিরুদ্ধে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানান রেকর্ড ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার। তবে, একই সঙ্গে জানিয়ে দেন সভাপতির আচরণে তিনি সন্তুষ্ট নন। ক্লাবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও হতাশা ব্যক্ত করেন।

বিশাল অঙ্কের ক্ষতি

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও ফুটবলের মাঠে ফেরানোর সিদ্ধান্ত ঘিরে সমালোচনা হয়েছে অনেক। ইউভেন্তুসের ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, লিভারপুলের মোহামেদ সালাহ, রিয়াল মাদ্রিদের কাসেমিরো, বার্সেলোনার সের্হি রবের্তো-প্রথম সারির অনেক ফুটবলারসহ এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। তবে অর্থনৈতিক ক্ষতির ধাক্কা সামাল দিতে কঠিন পরিস্থিতিতে ওই সিদ্ধান্তের পক্ষেও যুক্তি আছে ঢের।

তারপরও কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ কম নয়। মহামারীর প্রভাব মোকাবেলায় ফিফা কমিটির প্রধান অল্লি রেনের উদ্ধৃতি দিয়ে গত সেপ্টেম্বরে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর বিশ্বব্যাপী শুধু ক্লাব ফুটবলেই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে এক হাজার ৪০০ কোটি ডলার, যা মোট আয়ের প্রায় এক তৃতীয়াংশ।

গত মে মাসে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম ধনী ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ওই সময় পর্যন্ত তাদের দুই কোটি ৮০ লাখ পাউন্ড ক্ষতি হয়েছিল বলে জানায়। মৌসুম শেষে অঙ্কটা আরও বড় হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল তারা।

অক্টোবরে বার্সেলোনা জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে কর দেওয়ার পর তাদের মোট ক্ষতির পরিমাণ ৯ কোটি ৭০ লাখ ইউরো। ব্যয় কমাতে গ্রীষ্মের দলবদলে লুইস সুয়ারেস, আর্তুরো ভিদাল, ইভান রাকিতিচের মতো সিনিয়র খেলোয়াড়দের ছেড়ে দেয় ক্লাবটি।

প্রায় প্রতিটি ক্লাবেরই আর্থিক ক্ষতি হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। প্রায় সব ক্লাবেরই বেতন কাটার পথ বেছে নিতে হয়েছে। চাকরিও হারানোরও অনেক ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে বিশ্ব জুড়ে শুরু হয়ে গেছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। বাড়তে শুরু করেছে আক্রান্ত ও প্রাণহানীর সংখ্যা। কিন্তু নতুন করে লকডডাউন দেওয়া বা খেলাধুলার বন্ধের কোনো ভাবনা আপাত দেখা যাচ্ছে না। উল্টো সংখ্যায় কম করে হলেও মাঠে ফিরতে শুরু করেছে দর্শক, যা উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

নেশন্স লিগ, বিশ্বকাপ বাছাই শুরু

ক্লাব ফুটবল ফিরলেও অপেক্ষা ছিল আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেরার। সে অপেক্ষাও শেষ হয় একসময়। সেপ্টেম্বরে মাঠে গড়ায় উয়েফা নেশন্স লিগের দ্বিতীয় আসর। তিন মাসের গ্রুপ পর্ব শেষে নির্ধারিত হয় আগামী বছর হতে যাওয়া শিরোপা লড়াইয়ে চার ফাইনালিস্ট-ইতালি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও স্পেন।

আর কয়েক ধাপে পেছানোর পর অক্টোবরে মাঠে গড়ায় বিশ্বকাপ বাছাই। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের কাতার বিশ্বকাপের বাছাইয়ে দারুণ শুরু করেছে ব্রাজিল; প্রথম চার রাউন্ডের সবকটি জিতে শীর্ষে আছে তারা। তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আর্জেন্টিনা।

ঠাসা সূচিতে বিপর্যস্ত ফুটবলাররা

ফুটবলের ফেরায় শঙ্কার পাশাপাশি আছে স্বস্তি ও আনন্দ। তবে, দেরিতে শুরু হওয়া নতুন মৌসুম আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা থাকায় খেলতে হচ্ছে ঠাসা সূচিতে। গড়ে প্রায় প্রতি তিন দিন পরপর খেলতে হচ্ছে ক্লাবগুলোকে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সূচির ব্যস্ততা থাকায় কখনও কখনও খেলোয়াড়দের সাত দিনে খেলতে হচ্ছে তিনটি ম্যাচে।

এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ফুটবলারদের ফিটনেসে। প্রতিটি দলে বাড়ছে চোটাক্রান্ত খেলোয়াড়ের সংখ্যা, যার প্রভাব পড়ছে দলগুলোর পারফরম্যান্সে। করোনাকালে কোনো স্কোয়াডই যেন যথেষ্ট নয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বাধ্য হয়ে প্রায় দ্বিতীয় সারির দলও নামিয়ে দিতে হয়েছে কোনো কোনো ক্লাবের। স্কোয়াডে খেলোয়াড়ের ঘাটতি পূরণ করতে হচ্ছে যুব দলের ফুটবলার দিয়ে।

বর্ষসেরা লেভানদোভস্কি

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এ বছরের ফুটবলে কোনো কিছুই স্বাভাবিকভাবে না হওয়ায় ব্যালন ডি’অরের ৬৪ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পুরস্কারটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ‘ফ্রান্স ফুটবল’-ম্যাগাজিন। আর এতে দুর্দান্ত একটি মৌসুম কাটানোর পরও ভেস্তে যেতে বসেছিল রবের্ত লেভানদোভস্কির বর্ষসেরা ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন।

তবে, ফিফা তাদের সেরার পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে সেই অপূর্ণতা ঘোচার পথ তৈরি হয় বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ২০১৯-২০ মৌসুমে ট্রেবল জয়ী লেভানদোভস্কির। গত ১৭ ডিসেম্বর ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো ও লিওনেল মেসিকে হারিয়ে ২০২০ সালের ‘দ্য বেস্ট ফিফা মেনস প্লেয়ার’ জেতেন এই পোলিশ স্ট্রাইকার।

সব প্রতিযোগিতা মিলে গত মৌসুমে ৪৭ ম্যাচে ৫৫ গোল করা ৩২ বছর বয়সী তারকা এই ফরোয়ার্ড জিতেছেন এ বছরের উয়েফা বর্ষসেরার পুরস্কারও।

নারী ফুটবলে বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন ম্যানচেস্টার সিটি ও ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডার লুসি ব্রোঞ্জ।

বিশ্বকে কাঁদিয়ে অজানায় মারাদোনা

৬০তম জন্মদিন পালনের কদিন পর শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করায় গত ৩ নভেম্বর মারাদোনাকে লা প্লাতার ইপেন্সা সানাতোরিয়াম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে পরের দিন করানো হয় অস্ত্রোপচার।

সফল অস্ত্রোপচারের পর হঠাৎ করে অ্যালকোহল পরিহার করায় কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দিন হাসপাতালে থাকতে হয় ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তিকে। সুস্থ হয়ে ফিরেছিলেন বাড়িতে; কিন্তু কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে গত ২৫ নভেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান মারাদোনা।

মারাদোনার মৃত্যুর দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে গত ৮ ডিসেম্বর দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার ও হৃদরোগের সমস্যায় ভুগে মারা যান তার সতীর্থ ও আর্জেন্টিনার সাবেক কোচ আলেহান্দ্রো সাবেইয়া। তার কোচিংয়েই ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

আর গত ১০ ডিসেম্বর ফুটবল বিশ্ব হারায় আরেক কিংবদন্তি সাবেক ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড পাওলো রস্সিকে। সর্বকালের সেরা ফরোয়ার্ডদের একজন হিসেবে বিবেচিত রস্সি ছিলেন ১৯৮২ সালে ইতালির বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক।   

ক্রিকেট:

হঠাৎ ছন্দপতন, স্থবির ক্রিকেট

দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে মার্চের শুরুতে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিল ইংল্যান্ড দল। স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হয়েছিল। চলছিল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নিউ জিল্যান্ডের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও। 

এরই মাঝে ১১ মার্চ আসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই মহামারীর ঘোষণা। এরপরই দ্রুত সব পাল্টে যেতে শুরু করে। দুই দিন পর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে স্থগিত হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড ও ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ। এপ্রিলের মাঝামাঝি শুরু হওয়ার কথা ছিল আইপিএল, ওই দিন সেটাও পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়।

অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ড দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটি শেষ করতে চাইলেও দ্বিতীয় ওয়ানডের আগের দিন, ১৪ মার্চ সিরিজটি স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানায়।

মাঠে ক্রিকেট ফেরার স্বস্তি

একে একে স্থগিত হতে থাকে ভবিষ্যৎ সূচিতে থাকা সব সিরিজ। ক্রিকেট বিশ্ব যেন স্থবির হয়ে যায়।

এর মাঝেই মে মাসের শেষে আবারও মাঠে ক্রিকেট ফেরার সম্ভাবনা জোরালো হয়; ইংল্যান্ড সফরে যেতে সবুজ সঙ্কেত পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। এগিয়ে আসে আইসিসি। কঠিন এই সময়ে নিয়ম কানুনে কিছু পরিবর্তন এনে মাঠে ক্রিকেট ফেরার পথ সহজ করে।

তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজটি মূলত শুরু হওয়ার কথা ছিল গত ৪ জুন। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জৈব-সুরক্ষা বলয়ে সিরিজটি মাঠে গড়ায় ৯ জুলাই।

১১৭ দিন পর ফেরার সেই ম্যাচ উপহার দেয় দারুণ রোমাঞ্চকর ক্রিকেট।

সাউথ্যাস্পটনের রৌজ বৌলে ক্যারিবীয় পেস আক্রমণের সামনে প্রথম ইনিংসে মুখ থুবড়ে পড়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ালেও ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি তারা; ৪ উইকেটে জিতে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। পরের দুটি টেস্ট জিতে অবশ্য সিরিজ জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা।

এরপর একইভাবে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া দলও ইংল্যান্ড সফরে যায়। ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ডের দেখানো পথেই দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। সীমিত ওভারের সিরিজ ও টেস্ট সিরিজ খেলতে এখন অস্ট্রেলিয়ায় আছে ভারত দল।

স্থগিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

জৈব-সুরক্ষা বলয়ে অল্প পরিসরে ক্রিকেট ফিরলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো বৃহৎ পরিসরের আয়োজন যে কঠিন এই পরিস্থিতিতে সম্ভব নয়, তা অনুধাবন করতে পেরে গত জুলাইয়ে এ বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আইসিসি।

গত ১৮ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় হওয়ার কথা ছিল ২০ ওভারের বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। ২০২১ সালের অক্টোবর নভেম্বরে ভারতে হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, পরের বছর অস্ট্রেলিয়ায় একই সময়ে হবে আরেকটি।

দর্শকে পরিপূর্ণ মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ব জয়

নারী ক্রিকেট মানেই যেন অস্ট্রেলিয়ার জয়জয়কার। বছরের শুরুতে আরও একবার তার সাক্ষী হয় ক্রিকেট বিশ্ব।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে রেকর্ড ৮৬ হাজার দর্শকে পূর্ণ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারতকে ৮৫ রানে হারিয়ে পঞ্চমবারের মতো শিরোপা উৎসব করে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা।

দুই ওপেনার অ্যালিসা হিলি ও বেথ মুনির বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালের রেকর্ড রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। ১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৯৯ রানেই অলআউট হয়ে যায় ভারত।

অফিসিয়াল হিসেবে ফাইনালের দর্শক ছিল ৮৬ হাজার ১৭৪। ক্রিকেট তো বটেই, অস্ট্রেলিয়ায় মেয়েদের যে কোনো ক্রীড়া ইভেন্টে সবচেয়ে বেশি দর্শকের রেকর্ড এটি।

ব্রডের ৫০০, অ্যান্ডারসনের ৬০০

জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টের শেষ দিনে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে এলবিডব্লিউ করে ৫০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন স্টুয়ার্ট ব্রড।

৫০০ উইকেটের অভিজাত ক্লাবে ব্রডের আগে ইংল্যান্ডের একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন তার দীর্ঘদিনের বোলিং জুটির সঙ্গী জিমি অ্যান্ডারসন।  

মাসখানেক পর সাউথ্যাম্পটনে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের শেষ দিনে অ্যান্ডারসন গড়েন অনন্য কীর্তি। বল আজহার আলির ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে জমা পড়ে জো রুটের হাতে- সেই সঙ্গে প্রথম পেসার হিসেবে ৬০০ টেস্ট উইকেটের মালিক বনে যান ৩৮ বছর বয়সী ডানহাতি এই বোলার।

অবসরে ধোনি

মহেন্দ্র সিং ধোনি অবসর নেবেন কবে?-দীর্ঘদিন ধরে চলছিল এই আলোচনা। অবশেষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইপিএল শুরু হওয়ার কদিন আগে গত ১৫ অগাস্ট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।

একই দিনে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে একইভাবে ইনস্টাগ্রাম বার্তায় ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা দেন ভারতের আরেক ক্রিকেটার সুরেশ রায়না।

ক্যারিবীয় মহানায়ক উইকস ও অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী জোন্সের বিদায়

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিখ্যাত ‘থ্রি ডব্লিউ’ এর একজন, স্যার এভারটন উইকস ৯৫ বছর বয়সে গত ১ জুলাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

চোটের কাছে হার মেনে ৩৩ বছর বয়সে টেস্ট ক্রিকেট ছাড়লেও খেলাটির প্রতি তার ভালোবাসা ছিল অফুরান। মনের তেষ্টা মেটাতেই এরপরও খেলে গেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, এমসিসি, কমনওয়েলথ একাদশের মতো দলগুলিতে। সেই পথচলাতেই একবার উইকসের পা পড়েছিল ঢাকায়।

দারুণ সমৃদ্ধ রেকর্ড হলেও ক্যারিয়ারকে ঠিক পূর্ণতা দিতে পারেননি উইকস। টেস্টে তার গড়া দ্রুততম হাজার রানের রেকর্ড টিকে আছে এখনও। তার টানা ৫ ইনিংসে সেঞ্চুরির কীর্তি আজও ছুঁতে পারেননি কেউ।

ডিন জোন্সের বিদায় ক্রিকেট দুনিয়ার কাছে অনেক বড় একটা ধাক্কা হয়ে আসে।

ক্যারিয়ারে ব্যাটসম্যানশিপের নতুন এক ধারা উন্মোচন করা জোন্স ছিলেন অ্যালান বোর্ডারের অস্ট্রেলিয়া দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। যে দলের হাত ধরে ১৯৮৭ সালে ইডেন গার্ডেন্সে প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল দেশটি।

১৯৯৮ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া জোন্স কোচ ও ভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেছেন। আইপিএলের ধারাভাষ্যকার হিসেবে ভারতে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন তিনি। সেখানেই গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান ৫৯ বছর বয়সী জোন্স।

অনেক চেষ্টার পরও স্থগিত অলিম্পিক

প্রাথমিক সূচি অনুযাযী ২৪ জুলাই থেকে ৯ অগাস্ট সময়ের মধ্যেই এবারের অলিম্পিক আয়োজনের চেষ্টায় ছিল আয়োজক কমিটি। মার্চের শুরুর দিকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বেশ জোরের সঙ্গে জানিয়েছিলেন যে যথাসময়ে হবে অলিম্পিক।

তবে দ্রুত পট পরিবর্তনে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে আয়োজকরা। গত ২৪ মার্চ এক বছরের জন্য ‘টোকিও অলিম্পিক-২০২০’ পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

নতুন সূচিতে আগামী বছরের ২৩ জুলাইয়ে শুরু হয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞ শেষ হবে ৮ অগাস্ট। আর টোকিও প্যারালিম্পিক গেমস শুরু হবে ২৪ অগাস্ট, চলবে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

লম্বা সময়ের জন্য পিছিয়ে গেলেও মাঝের এ সময়ে অলিম্পিক মশাল জাপানেই থাকবে। নামও থাকবে অপরিবর্তিত; যথাক্রমে অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক গেমস টোকিও ২০২০।

টেনিস

জোকোভিচের টানা অষ্টম

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে আধিপত্য করে আসছেন নোভাক জোকোভিচ। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি; ডমিনিক টিমকে হারিয়ে টানা অষ্টমবারের মতো এখানে শিরোপা জেতেন সার্বিয়ান তারকা। ক্যারিয়ারে এটা তার ১৭তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম।

বাতিল উইম্বলডন, টিমের ‘প্রথম’

ফুটবল-ক্রিকেটের মতো একই কারণে টেনিসেও নেমে আসে স্থবিরতা। একে একে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট পিছিয়ে যাওয়ার মাঝে বাতিল হয়ে যায় এ বছরের উইম্বলডন।

তবে দেরিতে হলেও মাঠে গড়ায় ফরাসি ওপেন ও ইউএস ওপেন। গ্র্যান্ড স্ল্যাম দুটি আয়োজনের ক্রমেও আসে একটু পরিবর্তন। সাধারণত বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ইউএস ওপেন হলেও এবার শেষে হয় ক্লে কোর্টের প্রতিযোগিতাটি।

মাঝে হওয়া ইউএস ওপেনেই দীর্ঘ অপেক্ষার শেষ হয় টিমের। ফাইনালে জার্মানির আলেক্সান্দার জেভেরেভের বিপক্ষে পাঁচ সেটের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জিতে ক্যারিয়ারে প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের স্বাদ পান এই অস্ট্রিয়ান।

ফেদেরারের পাশে নাদাল

গ্র্যান্ড স্ল্যামের পুরুষ এককে ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ডের একক মালিকানা ছিল কিংবদন্তিতুল্য রজার ফেদেরারের। গত অক্টোবরে ফরাসি ওপেন জিতে সেটায় ভাগ বসান রাফায়েল নাদাল।

ফাইনালে জোকোভিচকে সরাসরি সেটে উড়িয়ে দেন ক্লে কোর্টের রাজা। এ বছর নাদালের সেটি ছিল প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়। ফরাসি ওপেনে টানা চতুর্থ ও রেকর্ড ত্রয়োদশ শিরোপা।