বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বুধবার বিকাল সোয়া ৪টায় এএফসি কাপের ‘ই’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। গ্রুপের অপর দুই দল ভারতের বেঙ্গালুরু এফসি ও আইজল এফসি।
আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে নিউ রেডিয়েন্ট কোচ অস্কার ব্রুসন আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে জানান পুরো ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ার লক্ষ্যের কথা। টিটুর হিসেব, আগে লড়াই, ফল পরে।
বিদেশি কোটায় প্রতিটি দলই এবার ৪ জন খেলোয়াড় খেলাতে পারছে। তিন স্প্যানিশ ও এক আফগান খেলোয়াড়ে সে কোটা পূরণ করেছে মালদ্বীপের চ্যাম্পিয়নরা। তবে চোটের কারণে আফগানিস্তানের ডিফেন্ডার হারুন আমিরিকে পাচ্ছে না তারা। দুই নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা, এমেকা ডারলিংটন ও গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার ল্যান্ডিং ডারবো এবং জাপানি মিডফিল্ডার সেইয়া কোজিমাকে নিয়ে খেলবে আবাহনী।
আবাহনীর সবচেয়ে দুশ্চিন্তার জায়গা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নির্ভরযোগ্য মিডফিল্ডার ইমন বাবুকে না পাওয়া। তবে টানা ১০ ম্যাচ অপরাজিত থেকে লিগ শিরোপা জেতা দলটির কোচ আশাবাদী, অভিজ্ঞতা-ঐতিহ্য থেকে বাড়তি অনুপ্রেরণা নিয়ে তার শিষ্যরা মেলে ধরবে সামর্থ্যের সেরাটা।
“অবশ্যই আমার দলকে আমি ফেভারিট বলব। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, মাঠে নেমেই জিতে চলে আসব। আসলে মাঠে ফুটবলাররা কি করবে সেটাই আসল। ইমন বাবু নেই। মাঝমাঠের ছকটা কেমন হবে, সেটা প্রতিপক্ষের ওপর নির্ভর করবে। আমি আশাবাদী মাঝমাঠ জ্বলে উঠবে।”
জাতীয় দল, ক্লাব ফুটবল সব পর্যায়ে বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে মালদ্বীপ। সর্বশেষ শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ জেতার পথে মালদ্বীপের দল টিসি স্পোর্টস হারিয়েছিল আবাহনীকে। কদিন আগে এএফসি কাপের বাছাইয়ের প্রিলিমিনারি রাউন্ডে সাইফ স্পোর্টিং দুই লেগে হারে টিসি স্পোর্টসের কাছে। জাতীয় দলও সর্বশেষ প্রীতি ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে হারে ৫-০ গোলে। আত্মবিশ্বাস দিয়ে সামর্থ্যের এই ব্যবধান ঘোচাতে চান টিটু।
“অতীতে মালদ্বীপের বিপক্ষে সব ম্যাচের ফল হার। আস্থার জায়গা হচ্ছে—আশাবাদ। নিশ্চয়তা দিতে পারছি না জিতব। তবে শেষ বিন্দু পর্যন্ত লড়ব। কিভাবে ওরা খেলে সেটা নিয়ে কাজ করেছি।”
“এশিয়ান কোটায় দলে নেওয়া জাপানের কোজিমা এ ম্যাচে ওর সামর্থ্য দিতে পারব কিনা সেটা নিয়ে কাজ করেছি। এটা আরেকটা আস্থার জায়গা। ছেলেদের অনুপ্রাণিত দেখেছি আমি। দিন শেষে আমরা রেজাল্ট ভালো করার ইচ্ছা এবং সেই চেষ্টা থাকবে।”
“ও অন্যতম সেরা সেরা খেলোয়াড়। তবে মিডফিল্ডার আলি ফাসির ও উমায়েরের কথা ভুলে গেলেও চলবে না। আশফাক একটু অন্যরকম। যে কোনো সময় যে কোনো দলকে বিপদে ফেলার সামর্থ্য আছে ওর।”
“আশফাক কখনও লেফট উইং দিয়ে আক্রমণে ওঠে। আবার কখনও পজিশন বদলে স্ট্রাইকারের সঙ্গে যুক্ত হয়। জুটি তৈরি করে। ওর দ্রুত জায়গা বদল করাটা আমাদের জন্য বেশি চিন্তার। সে একটা জায়গায় থাকলে তাকে মার্কিংয়ে রাখা যায় কিন্তু বারবার জায়গা পরিবর্তন করলে ওকে যে মার্কিং করবে, তার জন্য সমস্যা। তাই আমাদের পরিকল্পনা পুরো দল নিয়ে।”
আফগান মিডফিল্ডারের চোট ছাড়া বড় কোনো দুর্ভাবনা নেই নিউ রেডিয়েন্ট কোচ ব্রুসনের। ভালো প্রস্তুতি নিয়ে আসায় ফিরতি লেগের আগে সেরা ফল পেতে আশাবাদী তিনি।
“আমাদের প্রস্তুতি ভালো। আবাহনীর কিছু ম্যাচের ভিডিও দেখেছি। তারা ভালো দল। কন্ডিশন ও মাঠের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। তারা লং পাসে এবং শক্তিনির্ভর খেলে। দেখা যাক মাঠে কি হয়। আমরা অবশ্যই তিন পয়েন্ট নিয়ে দেশে ফিরতে চাই।”
গত মৌসুমে লিগ ফেডারেশন কাপ মিলিয়ে আবাহনী দুটি শিরোপা জিতেছে। তিনটি ট্রফি জিতেছে নিউ রেডিয়েন্ট। দলের সাফল্যের কারণ জানাতে গিয়ে লম্বা এক ফিরিস্তি দিলেন ব্রুসন।
“কঠিন পরিশ্রম, কমিটমেন্ট, টিম বন্ডিং, কম্বিনেশন, ঐক্য, স্পিরিট, মাঠে খেলার সময় নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া-আমার মনে হয় এগুলোই আমাদের সাফল্যের পেছনের কারণ। তবে এই ম্যাচটা কঠিন হবে; কেননা এই প্রতিযোগিতা ঘরোয়া প্রতিযোগিতার চেয়ে কঠিন।
গত মৌসুমে তিনটি শিরোপা জেতা নিউ রেডিয়েন্টের সহ-অধিনায়ক আকরাম আব্দুল ঘানিও সুর মেলালেন কোচের সঙ্গে।
“আমরা বড় ম্যাচ খেলতে এখানে এসেছি। কোচ এরই মধ্যে সব কথা বলে দিয়েছেন। আমরা ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এখানে এসেছি। ইনশাল্লাহ ম্যাচটা আমরা জিততে পারব।”