দলে ‘কর্তৃত্ব হারিয়ে’ কোচের চাকরি হারালেন ক্লিন্সমান

এশিয়ান কাপের সেমি-ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ার পর কোচকে ছাঁটাই করল দক্ষিণ কোরিয়া।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2024, 08:09 AM
Updated : 16 Feb 2024, 08:09 AM

দক্ষিণ কোরিয়া দলকে নিয়ে আগামী বিশ্বকাপে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমান। কিন্তু তার সেই আশা মুখ থুবড়ে পড়ল অনেক আগেই। এশিয়ান কাপের সেমি-ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ার পর কোচকে ছাঁটাই করে দিল দক্ষিণ কোরিয়া।

কোরিয়া ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (কেএফএ) ‘ন্যাশনার টিম কমিটি’ বৃহস্পতিবার ক্লিন্সমানকে বরখাস্ত করার সুপারিশ জানায়। এরপর শুক্রবার কোচকে বাদ দেওয়ার ঘোষণা দেয় কেএফএ।

কেএফএর টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হোয়াংবো কোয়ান তার সুপারিশে উল্লেখ করেছিলেন, জাতীয় দলে ক্লিন্সমানের কর্তৃত্ব ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সামর্থ্য নিয়ে সংশয় জাগার অনেক কারণ তারা দেখেছেন। কেএফএর সভাপতি চুং মং-গিউর কথায় সেটিই মিশে থাকল।

“একটি ফুটদল দলকে লড়িয়ে হিসেবে গড়ে তুলতে যে ধরনের নেতৃত্ব এবং গেম ম্যানেজমেন্ট, খেলোয়াড় ম্যানেজমেন্ট ও কাজের মানসিকতা জাতীয় দলের একজন কোচের কাছ থেকে আমরা আশা করি, তা ফুটিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন ক্লিন্সমান।”

সদ্য সমাপ্ত এশিয়ান কাপের সেমি-ফাইনালে জর্ডানের কাছে ২-০ গোলে হেরে যায় দক্ষিণ কোরিয়া। তার কোচিং নিয়ে অবশ্য প্রবল সমালোচনা হচ্ছিল আগে থেকেই।

গত বছর তিনি কোচের দায়িত্ব পাওয়ার পরই বিতর্ক হয়েছিল প্রক্রিয়টা নিয়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ মাধ্যমে তখন খবর প্রকাশিত হয়েছিল, ক্লিন্সমানকে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় ন্যাশনাল টিম কমিটির সদস্যদের মধ্যেই যোগাযোগের ঘাটতি ছিল।

তার দায়িত্ব শুরুর পর প্রথম ৫ ম্যাচে জিততে পারেনি দক্ষিণ কোরিয়া। বেশির ভাগ সময় তিনি লস অ্যাঞ্জেলসে থেকেই কাজ করছিলেন, যেখানে এখন তিনি থাকেন। এটা নিয়ে সমালোচনা ছিল বেশ।

এশিয়ান কাপে দলের খেলার ধরন নিয়েও কোরিয়ায় প্রশ্ন উঠছিল নিয়মিত। তবে নাটকীয় কিছু পারফরম্যান্সে তবু সেমি-ফাইনালে পৌঁছে যায় তারা। কিন্তু সেখানে জর্ডানের বিপক্ষে একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি তারা।

আগেরবার এশিয়ান কাপে অবশ্য কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকেই বাদ পড়েছিল তারা। তবে এক ধাপ এগোনোর পরও ক্লিন্সমান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছিলেন নানা কারণে। সেমিতে হারার পর প্রতিপক্ষ কোচের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলায় কোরিয়ার সমর্থক ও সংবাদমাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাকে।

এরপর দিন দুয়েক আগে বেরিয়ে আসে দলের সবচেয়ে বড় তারকা সন হিউং-মিনের আঙুলের চোটের পেছনের খবর। সেমি-ফাইনালে ডানহাতের আঙুলে ব্যান্ডেজ নিয়ে খেলেছিলেন কোরিয়ান অধিনায়ক। পরে জানা যায়, সতীর্থদের সঙ্গে মারামারি করতে গিয়ে তার আঙুলে আঘাত লাগে।

দলের ওপর কোচের নিয়ন্ত্রণ না থাকার ব্যাপারটি তাতে আরও প্রকাশ্য হয়ে ওঠে। ক্লিন্সমানের ভাগ্যও তাতে অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যায়।

এশিয়ান কাপ থেকে বিদায়ের পর ক্লিন্সমান বলেছিলেন, “আমি মনে করি, ভালো অনেক কিছুই এই টুর্নামেন্টে ছিল। এই দলটা গড়ে উঠছে। কঠিন একটি বাছাইপর্ব পেরিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপের পথে আগামী কয়েক বছরে দলটাকে আরও গড়ে তোলার ব্যাপার আছে। আমাদের সামনে অনেক কিছু করার আছে এখনও।”কিন্তু সেই সুযোগ তিনি পেলেন না।