মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলে ‘ভয় কেটে গেছে’ অস্ট্রেলিয়ার

শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়া আত্মবিশ্বাস খুঁজে নিচ্ছে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলা বিশ্বকাপ ম্যাচ থেকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2024, 12:42 PM
Updated : 1 Feb 2024, 12:42 PM

এশিয়ান কাপে দারুণ ছন্দে এগিয়ে চলেছে অস্ট্রেলিয়া। দলটির পারফরম্যান্সে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে রক্ষণের দৃঢ়তা। সামনে অবশ্য কঠিন পরীক্ষায় পড়তে যাচ্ছে তারা, প্রতিপক্ষ যে তারকা ফরোয়ার্ড সন হিউং-মিনের দল দক্ষিণ কোরিয়া। তবে, মহাতারকা লিওনেল মেসিকে গত ১৪ মাসে কয়েক দফায় সামলানোর পর দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। 

কাতারের দোহায় চলমান এবারের এশিয়ান কাপে ‘বি’ গ্রুপের সেরা হয়ে নকআউট পর্বে ওঠা অস্ট্রেলিয়া শেষ ষোলোয় ৪-০ গোলে গুঁড়িয়ে দেয় ইন্দোনেশিয়াকে। আগামী শুক্রবার কোয়ার্টার-ফাইনালে তারা লড়বে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে। 

দক্ষিণ কোরিয়ার গ্রুপ পর্ব অতটা দারুণ কাটেনি, ‘ই’ গ্রুপের রানার্সআপ হয় দলটি। অবশ্য তারাও অপরাজিত থেকেই গ্রুপ পর্ব পেরিয়েছে। আর শেষ ষোলোয় তারা টাইব্রেকারে হারায় সৌদি আরবকে। 

২০১৫ এশিয়ান কাপের ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়াকেই হারিয়ে মহাদেশ সেরা প্রতিযোগিতায় নিজেদের একমাত্র শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই শিরোপা লড়াইয়ে প্রথমে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে যাওয়ার পর যোগ করা সময়ে সমতা টেনে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিয়েছিলেন সন হিউং-মিন। পরে ফের এগিয়ে গিয়ে ২-১ ব্যবধানে জেতে অস্ট্রেলিয়া। 

৯ বছর পর হিউং-মিন এখন আরও ক্ষুরধার, কার্যকর এবং অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। দীর্ঘদিন টটেনহ্যাম হটস্পারে খেলে হয়ে উঠেছেন বড় তারকা। তাই আসছে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় দুর্ভাবনার কারণ হতে পারেন তিনি। এমন এক প্রশ্নের জবাবে অস্ট্রেলিয়া কোচ গ্রাহাম আর্নল্ডও করলেন মজা। 

“আনজেকে আমি ফোন করেছিলাম (পোস্তেকোগলু, টটেনহ্যামের অস্ট্রেলিয়ান কোচ), তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সে সনকে এখান থেকে ফিরিয়ে নেবে কিনা!” 

পরক্ষণেই অবশ্য সিরিয়াস হয়ে উঠলেন আর্নল্ড। তার কণ্ঠে ফুটে উঠল আত্মবিশ্বাসের ছাপও। 

“এই জায়গায় আমাদের ভালো খেলতে হবে। (আসরে এখন পর্যন্ত) আমাদের রক্ষণাত্মক কাঠামো দারুণ কাজ করেছে… জাল অক্ষত রাখতে পারলে টুর্নামেন্ট জেতা যায়।” 

“তবে, এই ধরনের প্রতিপক্ষকে সুযোগ দিলে, নিজেরা কিছুটা ঢিল দিলে এবং তাদেরকে একটু জায়গা দিলেই তার শাস্তি পেতে হবে।” 

সনের পাশাপাশি পিএসজির মিডফিল্ডার লি কাং-ইন ও উলভারহ্যাম্পটনের গোলরক্ষক হোয়াং হি-চানের মতো খেলোড়দের নিয়ে গড়া দক্ষিণ কোরিয়া দলটি দারুণ শক্তিশালী। বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ান ফুটবলের ইতিহাসের সেরা আক্রমণভাগ বর্তমান দলটিতে আছে। তবে এখনও তারা কোনো শিরোপা জিততে পারেনি। 

চলতি আসরে সেই শূন্যতা পূরণে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সন ও কাং-ইনরা আরও বেশি ক্ষুধার্ত। অস্ট্রেলিয়াকে তারা ফেলতে পারেন অগ্নিপরীক্ষায়। 

অস্ট্রেলিয়ানদের জমাট রক্ষণ এই আসরে দারুণ কার্যকর। এখন পর্যন্ত মাত্র একটি গোল হজম করেছে তারা, বিপরীতে দক্ষিণ কোরিয়া গোল খেয়েছে সাতটি। 

অস্ট্রেলিয়ানদের রক্ষণ শক্তিশালী অবশ্য বেশ আগে থেকেই। বড় দলগুলোর বিপক্ষে সেই পরীক্ষাও দিয়েছে তারা। গত সেপ্টেম্বরে প্রীতি ম্যাচে মেক্সিকোকে ২-২ গোলে রুখে দেওয়ার পরের মাসে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রবল লড়াইয়ের পর তারা হারে ১-০ ব্যবধানে। 

আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় দারুণ লড়াই করে অস্ট্রেলিয়া হেরে যায় ২-১ গোলে। গত বছর আবারও দেখা হয় দল দুটির; তারকাসমৃদ্ধ আক্রমণভাগ থাকা সত্ত্বেও হেসে-খেলে জিততে পারেনি আর্জেন্টিনা; ওই ম্যাচে তারা জেতে ২-০ গোলে। 

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে লড়াইয়ের প্রসঙ্গ টেনে আসছে ম্যাচেও ভালো করার আশাবাদ জানালেন অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্ডার আজিজ বেহিচ। 

“আমাদের ডিফেন্সিভ রেকর্ড ভালো। এমনকি বিশ্বকাপে, বিশেষ করে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে (ম্যাচের আগে) কেউ আমাদের গোণায়ই ধরেনি। তারা বলেছিল যে, আমরা উড়ে যাব এবং প্রথমার্ধেই সব শেষ হয়ে যাবে।” 

“দল হিসেবে রক্ষণ সামলানোর ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের নিয়ে গর্বিত, এটা কেবল পেছনের চার জনের ব্যাপার নয়। এই টুর্নামেন্টে আমরা সেটা দেখিয়েছি। প্রতিপক্ষকে আমরা খুব কম সুযোগ তৈরি করতে দিয়েছি। আসছে ম্যাচেও এর ব্যতিক্রম হবে না।”