‘এতিমখানার অর্থ আত্মসাৎ’, সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার সাতটি এতিমখানা থেকে আসামিরা এক কোটি ২৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে জানায় দুদক।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2023, 02:14 PM
Updated : 19 Oct 2023, 02:14 PM

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার সাতটি এতিমখানায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে এক কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ইমরান আকন মামলাটি করেন বলে জানিয়েছেন একই কার্যালয় উপ-পরিচালক রেজাউল করিম।

মামলার বিবরণে করা হয়েছে, গত ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মধুখালী উপজেলার সাতটি এতিমখানায় এক কোটি ২৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে সেই অর্থ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা ও সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. বাবুল আক্তার মোল্যা আত্মসাৎ করেন। এতে সহায়তা করেন ওই সাত প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

“কল্লোল সাহা ও বাবুল আক্তার পরস্পর যোগসাজশে উপজেলার খোদাবাসপুর মোমেজান নেচ্ছা মাদরাসা ও এতিমখানার সভাপতি মো. মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শরীফের সহায়তায় প্রকৃত শিক্ষার্থীর চেয়ে মিথ্যাভাবে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী দেখিয়ে ৫২ লাখ ৯২ হাজার টাকা এবং ভূষনা লক্ষণদিয়া এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের সভাপতি মো. মোতালেব হোসেন ও কোষাধ্যক্ষ মো. মোশারফ হোসেনের সহায়তায় অতিরিক্ত এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে পাঁচ লাখ ৫৮ হাজার উত্তোলন করেন।

“এ ছাড়া মাকড়াইল মাজেদা খাতুন এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদরাসার সভাপতি মো. আবুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. রইচ মিয়ার সহায়তায় ১৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা, ফয়জিয়া মুসলিম এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিনের সহায়তায় ১৬ লাখ ৪৪ হাজার, মধুখালী মহিলা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল্লাহর সহায়তায় ১৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা তুলে নেন তারা।

অন্যদিকে গোন্দারদিয়া দারউস সালাম কওমি মাদরাসা ও এতিমখানার সাধারণ সম্পাদক মো. আলম বিশ্বাস ও সাবেক সহসভাপতি মো. হাফিজুর রহমানের সহায়তায় ১৩ লাখ আট হাজার টাকা এবং ব্যাসদী লাল বানু অরফানেজের সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুর ও কোষাধ্যক্ষ মো. আলী আকবরের সহায়তায় ভুয়া এতিম শিক্ষার্থী দেখিয়ে পাঁচ লাখ ২২ হাজার টাকা কল্লোল ও বাবুল আত্মসাৎ করেন বলে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পায় দুদক।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, কল্লোল, বাবুল, মো. মজিবর রহমান, আব্দুর রশিদ শরীফ, মো. মোতালেব হোসেন, মো. মোশারফ হোসেন, মো. আবুল হাসান, মো. রইচ মিয়া, মাওলানা মো. মহিউদ্দিন, মো. জাহাঙ্গীর মিয়া, মাওলানা মো. শহীদুল্লাহ, মো. আলম বিশ্বাস, মো. হাফিজুর রহমান, মো. আজিজুর রহমান ও মো. আলী আকবর পরস্পর যোগসাজশে নিজেদের দায়িত্ব পালন না করে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

দুদকের উপ-পরিচালক রেজাউল বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ভাতা সংক্রান্ত অসত্য তথ্য সরবরাহ করে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করায় দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।