আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ভাইরাল সেই জুয়েলের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান রোববার এক অফিস আদেশে অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করেন।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2022, 06:21 PM
Updated : 9 August 2022, 06:21 PM

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যুবলীগ নেতার উপর হামলার পর আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ছবি ভাইরাল হওয়া সেই মনিরুজ্জামান জুয়েলের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কামরুল হাসান রোববার এক অফিস আদেশে অস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিল করেন।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত ওই অফিস আদেশে বলা হয়েছে, মোস্তফা মনিরুজ্জামান জুয়েলের নিজের আগ্নেয়াস্ত্র [লাইসেন্স নম্বর-১৫৪৭/জেঃ প্রঃ/কুমিল্লা] হাতে একটি ছবি গত ১৪ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘নেতিবাচকভাবে ভাইরাল’ হয়।

“মোস্তফা মনিরুজ্জামান জুয়েল বর্ণিত অস্ত্র প্রদর্শনপূর্বক সাধারণ জনগণকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় তার মালিকীয় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করার জন্য মতামত প্রদান করা হয়েছে।”

আদেশে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬ এবং অস্ত্র আইনে কুমিল্লা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ইতোপূর্বে ইস্যু করা আগ্নেয়াস্ত্রটির লাইসেন্সটি বাতিল করা হলো।

গত ১৪ জুলাই বিকালে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদারের উপর হামলা হয়।

শাহজালাল মজুমদারের দাবি, মনিরুজ্জামান জুয়েলের নেতৃত্বে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী। ওইদিন বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর বাজারের ওই হামলায় শাহজালাল মজুমদার ও তার গাড়ি চালক আমজাদ হোসেন আহত হয়েছেন। এ সময় শাহজালাল মজুমদারের ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

হামলার পর জুয়েলের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রের দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যকে ভাইরাল হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, মনিরুজ্জামান জুয়েল একই উপজেলার মিয়াবাজারস্থ গ্রীন ভিউ রেস্টুরেন্টের সামনে একটি মেশিনগান একহাতে নিয়ে আরেক হাতে সিগারেট টানছেন। আরেকটি ছবিতে দেখা যায় জুয়েল অস্ত্র হাতে হেঁটে যাচ্ছেন।

এদিকে, গত ১৭ জুলাই রাতে রাজধানীর বনানী থেকে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ। জুয়েলের বিরুদ্ধে আগের তিনটি মামলায় আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। ওই তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন ১৮ জুলাই তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। বর্তমানে জুয়েল কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

শাহজালাল মজুমদারও তার উপর হামলার ঘটনায় জুয়েলকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, জুয়েলের সেই আগ্নেয়াস্ত্রটি গত ১৫ জুলাই মধ্যরাতে থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। মনিরুজ্জামান জুয়েলের স্ত্রী ফারজানা হক ৮৬ রাউন্ড গুলিসহ অস্ত্রটি জমা দেন।

মনিরুজ্জামান জুয়েল এলাকায় নিজেকে যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।

তবে শাহজালাল মজুমদারের দাবি, জুয়েল একজন ‘ক্যাডার’। যুবলীগে তার প্রাথমিক সদস্য পদও নেই।

মনিরুজ্জামান জুয়েল উপজেলার নালঘর গ্রামে প্রয়াত আলী আকবর মজুমদারের ছেলে।