সাতক্ষীরায় পিটুনিতে ছাত্রের মৃত্য: হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৪ শিক্ষক

নিহত ছাত্রের বাবা দীনবন্ধু দাস বাদী হয়ে কালিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র রাজপ্রতাপ দাস।

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে স্কুলে শিক্ষকের চড়-থাপ্পড়ের পর এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ শিক্ষকসহ অজ্ঞাতনামা চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। এই ঘটনায় চার শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

কালিগঞ্জ থানার ওসি মামুন রহমান জানান, সোমবার সকালে নিহত ছাত্রের বাবা দীনবন্ধু দাস বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এর আগে রোববার রাতে তিনি একটি এজাহার দাখিল করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অবকাশ কুমার খাঁ, প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম, সহকারি প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুহিত, সহকারি শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ও সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরীসহ অজ্ঞাতনামা চারজন।

এর আগে রোববার দুপুরে নলতা মাধ্যমিক স্কুলের ছাদে কেক কেটে বন্ধুর জন্মদিন পালন করছিল বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র রাজপ্রতাপ দাস (১৫), জুবায়ের আহমেদ, রাফি ও মোস্তফাসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।

শিক্ষকদের বরাত দিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, স্কুলের শিক্ষকরা বিষয়টি জানতে পেরে তাদেরকে বকাঝকা করেন ও চড়-থাপ্পড় মারেন। বিষয়টি অভিভাবকদেরও জানানো হয়।

স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুলের ছাদে কেক কাটার বিষয়টি নজরে পড়ে সহকারী শিক্ষক অবকাশ খাঁর। তিনি ওই শিক্ষার্থীদের নিষেধ করলে তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তিনি শিক্ষার্থীদের চড়-কিল-ঘুষি মারেন। এর পরপরই বাড়ি চলে যায় প্রতাপসহ তার বন্ধুরা।

বাড়ি ফেরার পর দুপুর আড়াইটায় অসুস্থ অবস্থায় বমি করতে করতে মারা যায় রাজপ্রতাপ দাস।

এই ঘটনার জের ধরে বাড়ি থেকে নিহত রাজপ্রতাপের লাশ নিয়ে স্কুলভবন ঘেরাও ও বিক্ষোভ করেন ছাত্র ও বিক্ষুব্ধ হাজারো জনতা। দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবধি সহকারী শিক্ষক অবকাশ খাঁসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষককে স্কুলকক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে তারা।

এ সময় বিক্ষুব্ধরা স্কুল ভবনের আসবাবপত্র, কাচের দরজা ও সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে পুলিশ পাহারায় চার জন শিক্ষককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কালিগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়।

ওসি মামুন রহমান জানান, মামলার পর পুলিশের কাছে আটক থাকা চার শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখান হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে।

আরও পড়ুন

স্কুলে টিকটক: শিক্ষকের মারধরের পর বাড়ি ফিরে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, বিক্ষোভ