গাজীপুরে অবৈধ ভিওআইপি, ১১ হাজার সিম জব্দ

এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে র‌্যাব।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2024, 05:43 PM
Updated : 24 March 2024, 05:43 PM

গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি বহুতল ভবন থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জাম ও ১১ হাজার সিম জব্দ করেছে র‌্যাব। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। 

খবর পেয়ে রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। 

শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত টঙ্গীর মধুমিতা এলাকার অগ্রণী টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে এসব জব্দ করা হয় বলে জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

আটকরা হলেন- তাজুল ইসলাম (৪০) ও হারুন অর রশীদ (৪০)। তাজুল কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা। 

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “সরকার একটি নিয়মতান্ত্রিক টেলিকমিউনিকেশন পদ্ধতি চালু করতে চায়। এ খাতে যারা অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাই। 

“রাজস্ব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অবৈধ ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি) কল বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।” 

পলক বলেন, মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধিত ডিস্ট্রিবিউটর ও রিটেইলারদের অবহেলার কারণে অপরাধীরা যাতে কোনো সুযোগ নিতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।  অপরাধীরা দেশের যেকোনো প্রান্তে, যত কৌশলেই কর্মকাণ্ড পরিচালনা করুক না কেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রাখবে।

পরে বেলা ১১টার দিকে ওই ভবনে নিচে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, গোপন খবর পেয়ে শনিবার র‌্যাব-১ এর একটি দল মধুমিতা এলাকার অগ্রণী টাওয়ারে অভিযান চালায়। 

অভিযানে বহুতল ভবনের তিনটি ফ্ল্যাটে রাখা ৩২টি সিম বক্স ডিভাইস, কয়েকটি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন অপারেটরের প্রায় ১১ হাজার সিম জব্দ করা হয়। আটক করা হয় মূলহোতা তাজুল ইসলাম ও সিম সরবরাহকারী হারুন অর রশীদকে। 

বিটিআরসি কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যের বরাতে খন্দকার আল মঈন বলেন, “অবৈধ টেলিযোগাযোগ স্থাপনার মাধ্যমে চক্রটি প্রতিদিন প্রায় এক লাখ আন্তর্জাতিক কল মিনিট অবৈধভাবে দেশে টার্মিনেট করত। এতে প্রতিদিন তাদের আয় হত লক্ষাধিক টাকা। 

“শনিবার বন্ধ থাকার পরও ৭০ হাজার ফোন কল এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই ভবনের আশপাশে আরও ভিওআইপি সেটআপ থাকতে পারে। তাই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।” 

ওই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, “তাজুল ইসলাম প্রাথমিকের গণ্ডি পার হতে পারেননি। তিনি ২০০৭ সালে ড্যাফোডিল কোম্পানিতে লাইনম্যানের চাকরি নেন। ২০১৪ সালে কোম্পানিটি বন্ধ হলে তার সংরক্ষণে থাকা যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রথমে ঢাকার শুক্রাবাদে ছোট আকারে ব্যবসা শুরু করেন। 

“২০১৮ সালে টঙ্গী এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে মধুমিতা অগ্রণী টাওয়ারের ১২ তলায় তিনটি ফ্ল্যাট ক্রয় করে এ ব্যবসা শুরু করেন তাজুল ইসলাম। আর হারুন ৬৫ টাকা করে বিভিন্ন কোম্পানির সিম ক্রয় করে তাজুল ইসলামকে ৭২ থেকে ৭৫ টাকায় সরবরাহ করত। তবে হারুন সাত থেকে ১০ টাকার মধ্যেও সিম ক্রয় করতে পারতেন।” 

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের উপ-মহাপরিচালক কর্নেল মাহাবুব আলম এবং র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যাট কর্নেল মোস্তাক আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।