প্রধানমন্ত্রীর সফরে কক্সবাজারবাসীর ১১ দাবি

সরকার প্রধানের সফরকে সামনে রেখে বিভিন্ন দাবির ফর্দ তৈরি করছেন জেলার নেতারা।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2022, 06:41 PM
Updated : 5 Dec 2022, 06:41 PM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার সফরে যাচ্ছেন আগামী ৭ ডিসেম্বর বুধবার। সেদিন শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।

সভায় জনসমুদ্র ঘটানোর প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন জেলার নেতা-কর্মীরা।

এর আগে ২০১৭ সালের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী সবশেষ কক্সবাজার সফরে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ পাঁচ বছরের বেশি সময় পর আবার প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেতে যাচ্ছেন জেলাবাসী।

সরকার প্রধানের এ সফরকে সামনে রেখে কক্সবাজারবাসীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবির ফর্দ তৈরি করছেন জেলার নেতারা।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা আওয়ামী লীগ।

এতে এবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১১টি দাবির বিষয় তোলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের সফরে কক্সবাজারকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

সেই ঘোষণার আলোকে জেলায় চলছে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ৪০টি মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ।

আগামী বছরের মধ্যে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কক্সবাজারসহ দেশবাসী সুফল পেতে শুরু করবেন।

এবার কক্সবাজারবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরও ১১টি দাবি তোলা হবে।

দাবিগুলো হচ্ছে, কক্সবাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংযুক্তিকরণ, কক্সবাজারের সঙ্গে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও বাঁকখালী নদীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেল নির্মাণ, কুতুবদিয়া-মগনামার মধ্যে ফেরি সার্ভিস চালুকরণ, কক্সবাজার পর্যটন গবেষণা ইনস্টিটিউট, চার লেনের মেরিন ড্রাইভ, ছয় লেনের কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহসড়ক, কক্সবাজার সিটি করপোরেশন, কক্সবাজার সিটি কলেজকে সরকারিকরণ, চকরিয়া উপজেলা মাতামুহুরীকে আলাদা উপজেলা ঘোষণা, ঝিনুক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত উচ্ছেদ ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন ও স্থায়ী আধুনিক ঝিনুক মার্কেট নির্মাণ।

এতে লিখিত বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রেল লাইন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়ীর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, সাবরাং এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম জোন, মেরিন ড্রাইভ, মেডিকেল কলেজ, সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ফুটবল স্টেডিয়াম, বিকেএসপি, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, শেখ হাসিনা নৌ ঘাঁটি, হাই-টেক পার্ক, জাতীয় সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট, অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ ৪০টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের এ নেতা আরও বলেন, এবারের জনসভাটি কক্সবাজারবাসী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রকাশের জন্য সূবর্ণ সুযোগ হিসেবে নিয়েছে। সমাবেশে অনন্ত ৫ লাখের বেশি জনসমাগম হবে। কেবল শেখ কামাল স্টেডিয়াম নয়, পুরো কক্সবাজার শহর জনসমুদ্রে পরিণত হবে। ইতোমধ্যে জনসভা সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা বলেন, “জনসভার শুরু থেকে হারিয়ে যাওয়া স্থানীয় সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে, উপ-জাতিদের সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব শাখাওয়াত মুন ও হাসান জাহিদ তুষার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক ও জাফর আলমসহ অনেকে ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কক্সবাজার সফরের দিন সকালে উখিয়া উপজেলার ইনানীস্থ বঙ্গোপসাগরের পাড়ে দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক নৌশক্তি প্রদর্শন মহড়ায় উপভোগ করবেন। পরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্টের শহীদ শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের বিশাল জনসভায় ভাষণ দেবেন।