হবিগঞ্জে চলছে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘট, ভোগান্তি যাত্রীদের

হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অ্যাম্বুলেন্স পার্কিংয়ের দাবিতে ডাকা এই কর্মবিরতিকে অযৌক্তিক ও অমানবিক বলছেন সাংবাদিকসহ স্থানীয়রা।

হবিগঞ্জে হাসপাতালের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং ও পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ নয় দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।

রোববার সকাল ৬টা থেকে হবিগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও জেলা অ্যাম্বুলেন্স মালিক-শ্রমিক সমিতির ডাকা এই কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। যে কারণে সকাল থেকে জেলায় বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাসসহ গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

পুর্ব ঘোষণা ছাড়া কর্মবিরতির এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। কেউ কেউ পরিবহন না পেয়ে হবিগঞ্জ পৌর বাস টার্মিনালে এসে আবার ফিরে গেছেন। কেউ অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিকল্প পরিবহনে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছেছেন।

মাধবপুর যাওয়ার জন্য হবিগঞ্জ পৌর বাস টার্মিনালে আসা একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. ফয়েজ উদ্দিন বলেন, “সকাল সকাল কর্মস্থলে যাব, এখন এসে দেখি বাস নেই। এভাবে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বাস চালানো বন্ধ রাখা ঠিক না। এতে আমরা সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি।”

কলেজ শিক্ষার্থী রুপা আক্তার বলেন, “আমি সিলেটের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করি। ছুটিতে বাড়ি আসছিলাম। আজ গিয়ে ক্লাস ধরতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাস চলাচল না করায় যেতে পারছি না।”

হবিগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সজিব আলী বলেন, “সদর আধুনিক হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অ্যাম্বুলেন্স রাখার জায়গা থাকলেও কর্তৃপক্ষ আমাদের অ্যাম্বুলেন্স রাখতে দিচ্ছে না। তাই আমরা চাই আমাদের একটি নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড দেওয়া হোক।

“এ ছাড়া আমাদের আরো কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলো সমাধানে আমরা প্রশাসনকে নয় দফা দাবি জানিয়েছি।”

হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল ইসলাম সরকার বলেন, হাসপাতালের সংর্কীর্ণ প্রাঙ্গণে অ্যাম্বুলেন্স রেখে জরুরি রোগীদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় তাদের হাসপাতালের বাইরে পার্কিং করতে বলা হয়েছে।

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি গোলাম মর্তুজা বলেন, হাসপাতাল ভিতরে এলোমেলোভাবে অ্যাম্বুলেন্স রেখে রোগীদের ভোগান্তি সৃষ্টি করায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের সরিয়ে দিয়েছে।

এদিকে, শ্রমিকদের ডাকা কর্মবিরতি অযৌক্তিক ও অমানবিক বলে প্রত্যাখান করেছেন হবিগঞ্জের সাংবাদিকরা।

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ সাগর বলেন, “পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা কর্মবিরতি পুরোপুরি অযৌক্তিক ও অমানবিক। এমনকি তারা আমাদের একজন সাংবাদিক নেতার মা মারা যাওয়ার পর মরদেহ পর্যন্ত বহন করেনি। যা খুবই অমানবিক ঘটনা।”