বিলোনিয়া পুরোপুরি চালু হলে দুদেশের সম্পর্ক বাড়বে: প্রতিমন্ত্রী খালিদ

ভারতের সঙ্গে সীমানা জটিলতার কারণে পুরো কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2023, 09:33 AM
Updated : 22 May 2023, 09:33 AM

ফেনীর বিলোনিয়া স্থলবন্দর পুরোপুরি চালু হলে দুদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও জনগণের সম্পর্কের আরও উন্নয়ন হবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রোববার বিকালে বন্দরের উদ্বোধন ঘোষণা করে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর শাজাহান খান এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এতদিন শুল্কবন্দরকে স্থলবন্দর করে গেজেট হলেও বন্দর হিসেবে উদ্বোধন হয়নি। আজ তা বাস্তবায়িত হয়েছে।

“তবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাধায় বন্দরের কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে, আরও বৈঠক হবে, শিগগির এর স্থায়ী সমাধান হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “স্থলবন্দরটি পুরোপুরি চালু হলে শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয়, দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নয়ন হবে। দুই দেশের জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বাড়বে।”

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি মালামাল সংরক্ষণ ও পার্কিং সুবিধা নিশ্চিত করতে পরশুরাম উপজেলায় বিলোনিয়া স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এ জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় সাড়ে ৩৮ কোটি টাকা। অধিগ্রহণ করা হয় ১০ একর জমি। ২০১৯ সালে বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে কাজ শুরু হয়। তবে সীমানা জটিলতার কারণে পুরো কাজ শেষ হয়নি।

এই নিয়ে একাধিকবার বিজিবি এবং বিএসএফ দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করেও কোনো সুরাহা হয়নি।

বিলোনিয়া স্থলবন্দরের কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, দুই-তৃতীয়াংশ কাজ বাকি রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে যে অবকাঠামো রয়েছে তা দিয়েও বন্দরের কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হবে।

রোববার বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরীন আখতার, ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান, ফেনী-৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাকিবুল হাসান, ফেনী পুলিশ সুপার জাকির হাসান, পরশুরাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন চৌধুরী (সাজেল)।

আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের চারটি স্থলবন্দরের দায়িত্বে নিয়োজিত দেবাশীষ নন্দী, কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার প্রকল্প পরিচালক ডি এম আতিকুর রহমান এবং ফেনীর কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মো. বাবুল ইকবাল।

বিলোনিয়া স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, দীর্ঘদিন পর অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে এ স্থলবন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।

স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৩৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। ১০ একর জমিতে ভূমি উন্নয়ন, সীমানা প্রাচীর, অভ্যন্তরীণ সড়ক, ওপেন স্ট্যাক ইয়ার্ড, পার্কিং ইয়ার্ড, একটি ওয়্যারহাউজ, ট্রান্সশিপমেন্ট শেডসহ একটি অফিস ভবন, একটি ডরমিটরি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

“প্রকল্পের আওতায় বন্দরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ, টয়লেট কমপ্লেক্স ও আমদানি-রপ্তানি করা পণ্যের সঠিক পরিমাপ নির্ণয়ে ১০০ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ডিজিটাল ওয়েব্রিজ স্কেল নির্মাণ করা হয়েছে। এ বন্দর দিয়ে সকল ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যায়।”

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরাসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই দেশের যৌথ সিদ্ধান্তে বিলোনিয়া স্থলবন্দরটি চালু করা হয়। তবে স্থলবন্দরটি উদ্বোধনের পর থেকে একমুখী বাণিজ্য কার্যক্রম চালু রয়েছে। শুধুমাত্র ভারতে রপ্তানি কার্যক্রম চলছে।

এর আগে স্থানীয় আমদানি-রপ্তানিকারকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের শেষ দিকে আমাদানি কার্যক্রম শুরু হয়। তবে কয়েক সপ্তাহ পেঁয়াজ আমদানি হলেও ডলার সংকটসহ নানা অজুহাতে ফের বন্ধ হয়ে যায় আমদানি কার্যক্রম।