‘বৈরী আবহাওয়ায়’ ফরিদপুরে পেঁয়াজের উৎপাদন কমেছে

বৈরী আবহাওয়ার কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা ফরিদপুরে ফলন কমেছে; তবে দাম ভালো বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2022, 11:30 AM
Updated : 17 May 2022, 11:30 AM

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হয়রত আলী বলেন, “৪১ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। সরকারি হিসাবে, জেলায় পাঁচ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে।”

তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত বছরের তুলনায় ৩৮ হাজার মেট্রিক টন কম উৎপাদন হয়েছে বলে জানান হযরত আলী।

ফরিদপুর জেলায় মুড়িকাটা, হালি ও দানা- এই তিন ধরনের পেঁয়াজ চাষ হয়। নয় উপজেলার মধ্যে নাগরকান্দা, সালথা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর সদর, ভাঙ্গা ও সদরপুরে পেঁয়াজের আবাদ বেশি হয়।

জেলার কানাইপুরসহ কয়েকটি বাজারে পাইকারিভাবে মণপ্রতি এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।

বোয়ালমারীর ঘোষপুর ইউনিয়নের চাষি আশুতোষ মালো বলেন, এ বছর পেঁয়াজের আবাদে খরচ বেশি হয়েছে। প্রতি মণ উৎপাদনে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা খরচ হয়েছে।

“চাষি পর্যায়ে মণ প্রতি দেড় হাজার থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা দর পেলে বেশি লাভ হতো।”

এ বিষয়ে কানাইপুর বাজারের পেঁয়াজ চাষি ও ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়া বলেন, শুক্রবার ও মঙ্গলবার এ বাজারের হাট বসে। গত ১৫ দিন চাষি পর্যায়ে মণপ্রতি এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ দর আগে হাজারের নিচে ছিল বলে ওই ব্যবসায়ীর ভাষ্য।

শাহজাহান মিয়া আরও বলেন, পেঁয়াজের বাজার হিসাবে বাইলে বাজার, রামকান্তপুর বাজার, ঠেনঠেনিয়া বাজার, ময়েনদিয়া বাজার, ফকিরের বাজার, নালার মোড় বাজার, কাদিরদী বাজার, সাতৈর বাজার বেশি পরিচিত। এই বাজারগুলোতেই চাষিরা পেঁয়াজ নিয়ে আসে।

কানাইপুর বাজারের আরেক ব্যবসায়ী বিলাল মাতুব্বর বলেন, “আমরা চাষিদের কাছ থেকে যে দরে পেঁয়াজ কিনছি এর থেকে সামান্য বেশি দরে ঢাকাসহ দেশের জেলাগুলোতে সরবরাহ করছি।”

তবে পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক কোনো ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা ফসল দ্রুত বাজারে ছেড়ে দেয় বলে জানান বিলাল।

সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আদর্শ পেঁয়াজ চাষি ফকির বেলায়েত হোসেন বলেন, এই অঞ্চলের চাষিরা প্রধানত লাল তীর কিং নামে একটি পেঁয়াজের আবাদ বেশি করে। অন্য কোনো জাতের চেয়ে এর আবাদ বেশি হয়।

“তবে এই পেঁয়াজ বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না। আমাদের দাবি, ফরিদপুর অঞ্চলের পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নির্মাণ করা হোক।“

চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিঘাপ্রতি (৫২ শতাংশ) ভাল ফলন হলে ১২০ থেকে ১৩০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়।

বাজার দর অনুযায়ী চাষিরা লাভ পাচ্ছেন উল্লেখ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হয়রত আলী বলেন, বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে চাষিরা মণপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা লাভ পাচ্ছেন।

ফরিদপুরে ১৭ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। বাকি উৎপাদিত পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয় বলে জানায় কৃষি বিভাগ।