মাদারীপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ

মাদারীপুরের রাজৈরে এক গৃহবধূকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে এক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2022, 12:58 PM
Updated : 4 Jan 2022, 12:58 PM

প্রায় এক মাস আগে এই গৃহবধূর স্বামী রাজৈর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বরাবর এই অভিযোগ করেন।

ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, তিনি স্ত্রী, ১০ বছরের মেয়ে, বৃদ্ধ বাবা ও মাকে (চোখে কম দেখেন) নিয়ে রাজৈর বেপারীপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। একই ফ্ল্যাটে পাশাপাশি থাকেন ভাড়াটিয়া রাজৈর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক।

তার অভিযোগ, পরিবারের লোকজন বাসায় রেখে দূরে থাকতে হয়। এই সুযোগে তার স্ত্রীকে নবম শ্রেণিতে ভোকেশনাল ক্লাসে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই শিক্ষক নূর আলম মাতুব্বর তাকে প্রাইভেট পড়ান এবং এক পর্যায়ে ‘অনৈতিক কার্যকলাপ’ করার প্রস্তাব দেন। এতে তার স্ত্রী রাজি না হলে তিনি বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক যৌন নিপীড়ন করেন। 

প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে নিয়মিত মোবাইলে সেলফি তোলা, মোবাইলে কথা বলা, রাতে অহেতুক মানসিক যন্ত্রণা দেওয়াসহ জোরপূর্বক ‘শারীরিকভাবে একাধিকবার অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করেন’ বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন ওই গৃহবধূর স্বামী।

অভিযোগে আরও বলা হয়, এই গৃহবধূ বিষয়টি ওই শিক্ষকের স্ত্রীকে বার বার জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। পরে তিনি স্বামীকে [অভিযোগকারী] জানান।

এরপর অভিযোগকারী বিষয়টি ওই শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারী বলেন, এরপর তিনি বাসা পরিবর্তন করে থানার মোড়ে বাসা ভাড়া নেন। সেখানেও তাকে ভয়ভীতি দেখালে তিনি পরিবারের সবাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে যান

এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রিফাত হোসেন বলেন, একটি বালিকা বিদ্যালয়ের মত সংবেদনশীল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নারীঘটিত কেলেংকারিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটালে ছাত্রীদের মনের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

“এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সেই বিষয়টি বিবেচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।”

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনীন্দ্র নাথ বাড়ৈ বলেন, “আমার নামে ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহোদয়ের নামে রেজিস্ট্রি ডাকে পাঠানো অভিযোগ হাতে পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমি তাদের সাথে কথা বলব। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”

উপজেলা মাধ্যমিক  শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, “অভিযোগ হাতে পেয়েছি। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী তার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

মাদারীপুর জেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র দাস বলেন, “সত্য না হলে কেউ নিজের স্ত্রী সম্পর্কে এ ধরনের অভিযাগ পাঠাতে পারেন না। তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”

এই ব্যাপারে অভিযোগের মুখে থাকা শিক্ষক বলেন, “বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে মীমাংসার কথা চলছে।”