সোমবার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে এই বিষয়ে জানা গেছে।
গুজব ছড়ানোর পর গত শনিবার রাত থেকে কোরবানপুর গ্রামে একদল লোক বিক্ষোভে নামে, যা রোববারও চলতে থাকে। এরই মধ্যে বাড়িঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এই ঘটনার পেছনে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তোলা হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এতে ‘রাজনীতি’ রয়েছে বলে মনে করছেন।
পূর্ব ধইর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বন কুমার শিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি প্রথমে যদিও ধর্মীয় বিষয় ছিল। সেটি প্রশাসনের উপস্থিতিতে কোরবানপুর এলাকায় সমাধান করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে সেটিকে রাজনৈতিক ইস্যুতে রূপান্তরিত করে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।”
মুরাদনগর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারি দলের বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজন এটিকে রাজনৈতিক ইস্যুতে রূপান্তরিত করে এই ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে।
তিনি দুইটি রাজনৈতিক দলকে এই ঘটনায় উস্কানি দেওয়ার জন্য দায়ী করেন এবং স্থানীয় সাবেক এক সাংসদের ভাইদের এই ঘটনার পেছনে রয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন।
তিনি বলেন, “ফ্রান্স প্রবাসী কৃষাণ নামে এক ব্যক্তির ফেইসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সাথে সাথে এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন মহোদয় ও প্রশাসনের তৎপরতায় সকল আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
“গত রোববার দুপুর ৩টায় পুলিশ প্রশাসন, এসিল্যান্ড মহোদয় ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করি এবং সমাধান করি। ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা বিষয়টি মেনে নেয়।”
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, “এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় একটি কাজ। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর পেছনে কারা আছে তাদের খুঁজে বের করা হবে ভিডিও দেখে। ইতিমধ্যে পাঁচজন গ্রেপ্তার আছে। তাদের সাজাও হয়েছে সামারি ট্রয়ালে। আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে স্থানীয় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”
ধর্মীয় গুজব ছড়ানোর পর পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করে। এদিকে, পূর্ব ধইর (পূর্ব) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক বনকুমার শিবের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা হয়।
হামলার ঘটনায় পুলিশ তিনটি মামলা করেছে। এতে জড়িত অভিযোগে সোমবার পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।