দিনাজপুরে দেয়াল চাপায় চার জনের মৃত্যু

দিনাজপুরে শোবার ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় দেয়াল চাপা পড়ে দুই শিশুসহ মা-বাবার মৃত্যু হয়েছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Sept 2020, 03:58 AM
Updated : 27 Sept 2020, 10:07 AM

শনিবার পার্বতীপুর উপজেলার পলাশবাড়ি ইউনিয়নের ঝাউপাড়া গ্রামে রাতের কোনো এক সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রয়াতরা হলেন, স্বপন (৩০), স্বপনের স্ত্রী সারজানা (২৫) ও তাদের দুই শিশুপুত্র হোসাইন (৭) ও হাসিবুর (৫)। কারো পুরো নাম পুলিশ জানাতে পারেনি। নীলফামারীর সৈয়দপুরের স্বপন পেশায় ভ্যান চালক স্বপন ঝাউপাড়ার আব্দুস সাহাদের মেয়ে সারজানোকে বিয়ে এখানে বসবাস করতেন।

এ মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে পার্বতীপুর থানার ওসি মোখলেসুর রহমান বলেন, কখন দেয়াল ধসে চাপা পড়ে এই চারজনের মৃত্যু হয়েছে তা এলাকাবাসী বলতে পারছে না।

রোববার ভোরে এলাকার লোকজন ঘর থেকে বেরোনোর পর এ পরিস্থিতি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।

পার্বতীপুর মডেল থানার পরিদর্শক সোওেহল রানা বলেন, “প্রবল বৃষ্টির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।”

ধসে পড়ার প্রথম প্রত্যক্ষদর্শী পাশের বাড়ির শাবানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোববার ভোরে তিনি ঘর ধসা অবস্থায় দেখে চিৎকার করলে অন্যরা এগিয়ে আসে।

তারা দেয়ালের নিচে চাপা পড়া প্রথমে শিশুর হাত দেখে উদ্ধারে নামে। মাটি সরিয়ে এলাবাসী এক এক করে চারজনের মৃত দেহ উদ্ধার করে বলেন তিনি। 

এলাকাবাসী মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, স্বপনের বাড়ি নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর। পেশায় ভ্যান চালক স্বপন এখানে আব্দুস সাহাদের মেয়ে সারজানোকে বিয়ে করে ঘরজামাই হিসাবে আট বছর ধরে এখানে থাকছেন।

কয়েদিন ধরে বৃষ্টির কারণে গত শনিবার ধসে পড়া ঘরের পুরাতন টিনের চালা পরিবর্তন করে নতুন টিন লাগায় স্বপন। টিনের চালা অক্ষত থাকলেও রাতে প্রবল বৃষ্টিতে ঘরের পশ্চিম অংশের পুরো দেয়াল ধসে পড়ে তাদের উপর চাপা।

মঞ্জুরুল আরো জানান, স্বপন ও তার স্ত্রী সাধারণত রাতে ঘরের বারান্দায় ঘুমাতেন। ছেলে দুইটি ঘরে থাকত।‘বৃষ্টির কারণে’ তারা ছেলেদের নিয়ে ঘরে ঘুমিয়েছিলেন এ রাতে।

দিনাজপুরে শনিবার সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত প্রবল ধরায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বৃষ্টিপাতে দেয়াল ধসে এ মৃত্যু ঘটায়।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত দিনাজটুরে ১২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কী̭করণ কেন্দ্র।

এছাড়া একই সময়কালে উত্তবঙ্গের পঞ্চগড়ে ৩১৫ মিলিমিটার, রংপুরে ২৬৫ মিলিমিটার, ঠাকুরগাঁয়ে ১২০ মিলিমিটার এবং কুড়িগ্রামে ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে বলে জানিয়েছে এ কেন্দ্র।

পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শানাজ মিথুন মুন্নি, উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম প্রামানিকসহ পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শানাজ মিথুন মুন্নি বলেন, মৃতদের দাফনের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।