নদী ভাঙতে ভাঙতে দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে

উদ্বোধনের আগেই মেঘনা নদীতে বিলীন হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে চাঁদপুরের চরাঞ্চলের একটি দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2020, 05:46 AM
Updated : 18 July 2020, 01:26 PM

বছর দেড়েক আগে নদী থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর এলাকায় কেন্দ্রটি নির্মাণ শুরু হয়। দুই মাস আগে এটি ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেয় কর্তৃপক্ষ।

রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, কয়েক দিন ধরে মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে নবনির্মিত কেন্দ্রটি হুমকির মুখে পড়েছে।

“শুক্রবার দিনভর নদী-তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন ভয়াবহ রূপ নেয়। এতে হুমকির মুখে পড়ে তিন তলা রাজরাজেশ্বর ওমর আলী স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টার। প্লাবিত হয় বিদ্যালয়টির আশপাশ।”

মাত্র দুই মাস আগে ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য গত বছর জানুয়ারিতে সাইট সিলেকশনের সময় মেঘনা প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ছিল। তখন কেউ ভাবেনি নদী এত দূর চলে আসবে।

চাঁদপুরের চরাঞ্চলের রাজরাজেশ্বর এলাকায় নবনির্মিত একটি আশ্রয়কেন্দ্র এখন মেঘনার ভাঙনের কবলে। গত বছর আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণের সময়ও নদী ছিল ১৫ কিলোমিটার দূরে।

কেন্দ্রটি দুই কোটি ২৯ লাখ টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে বলে ঠিকাদারের প্রতিনিধি ইউপি সদস্য পারভেজ গজী রনি জানিয়েছেন।

এছাড়া নদীভাঙনে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে ওই এলাকার মানুষ।

চেয়ারম্যান বলেন, গত কয়েক দিনের ভাঙনে এলাকার দুই শতাধিক বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।

“উজান থেকে প্রবল বেগে পানি চাঁদপুর হয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হওয়ায় রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চর এলাকায় মেঘনা ও পদ্মা নদীর মিলনস্থলে প্রচণ্ড ঢেউ হয়। ঘূর্ণিস্রোত দেখা দেয়। নদীটি বর্ষায় ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে।”

গত ১০ দিনের ভাঙনে ইতোমধ্যেই রাজারচর, খাসকান্দি, জাহাজমারাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বলে তিনি জানান।

রাজরাজেশ্বরী এলাকার বাসিন্দা মো. খালেক বলেন, পাশের জেলা শরীয়তপুরের নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ এলাকায় মেঘনার ভাঙনরোধে যে বেড়িবাঁধ দেওয়া হয়েছে তার পানি প্রবাহের মুখটি দেওয়া হয়েছে রাজরাজেশ্বরের দিকে। ফলে নদী এখন এদিকে আঘাত হানছে।

মেঘনায় পানি ও স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তারা এখনও সমস্যা সমাধানের কোনো পথ দেখতে পাচ্ছে না।

বোর্ডের চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাবুল আখতার বলেন, “মেঘনায় পানি ও স্রোতধারা বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এলাকাটি খুবই ভাঙনপ্রবণ। পদ্মা-মেঘনার মত দুটি বড় নদী ভাঙছে। আমরা ওই এলাকার ভাঙন পরিস্থিতি দেখব। তারপর করণীয় থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”