শুক্রবার রাতে ওই যুবকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে পুলিশ। শনিবার অপর মামলাটি করেন ফেইসবুকে লেখা সেই যুবকের বাবা।
এছাড়া শুক্রবার রাতে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি, ইমাম, গণমাধ্যমকর্মীসহ গণ্যমান্যদের সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন বৈঠক করেছে।
শনিবার ওই যুবককে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি সাখাওয়াত।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর ভোলর মনপুরা উপজেলার চৌমুহনী বাজারে ওই যুবকের দোকানে হামলা চালানোর পর তাদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে পুলিশের সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মনপুরা থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন জানান, ফেইসবুকে কটূক্তিকারী যুবকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন মনপুরা থানার এসআই আলাউদ্দিন শিকদার।
“শনিবার আদালতে হাজির করা হলে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।”
ওসি আরও জানান, শনিবার সকালে থানায় গিয়ে ওই যুবকের বাবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের অভিযোগে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
তবে পুলিশ আসামিদের নাম প্রকাশ করতে অপরাগতা প্রকাশ করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, বৃহস্পতিবার ওই যুবকের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে’ একটি পোস্ট দেওয়া হয়। এর জের ধরে শুক্রবার জুমার নামাজের পর উপজেলার রামনেওয়াজ জামে মসজিদ, কাউয়ারটেক কিল্লার পাড় জামে মসজিদ ও চৌমুহনী জামে মসজিদের মানুষ মিছিল করে রামনেওয়াজ চৌমুহনী বাজারে জমায়েত হয়।
ওসি বলেন, মিছিলের কিছু লোক বাজারে ওই যুবকের দোকানে হামলা চালালে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বাধা দেয়, তাতে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
পরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস ও রামনেওয়াজ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমানত উল্লা আলমগীর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে করিম নামের একজনকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জহির, সাইফুল, আল আমিন, রাহাত ও ছোট করিমসহ বাকি নয়জনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ওসি শাখাওয়াত হোসেন জানান, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত ১০টায় উপজেলা কার্যালয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী, ইউএনও বিপুল চন্দ্র দাস, ওসি সাখাওয়াত হোসেন, আওয়ামী লীগের উপজেলা ও ইউনিয়ন নেতা, ইমাম, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম কর্মীরা বৈঠকে বসেন।
রাত ২টা পর্যন্ত চলা ওই বৈঠকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করে উপজেলা প্রশাসন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও ওসি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, ইমাম, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঘটনা নিয়ে বৈঠক হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ফেইসবুকে অবমাননাকর পোস্ট দেওয়া যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।