বৃহস্পতিবার নাটোর সদর থানার ওসি কাজী জালাল উদ্দিন জানান, কারণ দর্শানো ছাড়াও আদালত আসামি আজিজ মোল্লার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করায় তাকে আবারও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে অভিমত দিয়ে দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমান সরদার গত মঙ্গলবার এ আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন এ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম।
মামলার বাদি ও নিহতের ভাই শোয়াইব হোসেন বলেন, আসামি আজিজ মোল্লা টাকার জোরে পার পেয়েছিলেন।
তবে আদালতের আদেশে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা জাগায় তারা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন বলে জানান।
২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে আটটায় শহরের চকরামপুরের জেনারেল হাসপাতালের পঞ্চম তলায় ছুরিকাঘাতে খুন হন মিতা খাতুন। তিনি ওই হাসপাতালের অর্থ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভাইয়ের করা মামলায় তদন্তের ভার পান জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক মাসুদ রানা।
নাটোরের দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম জানান, মামলার তদন্তকালে গ্রেপ্তার হাসপাতালের সুইপার সাগর জামাদার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেন, ‘মিতা খাতুনের সাথে আজিজ মোল্লার অবৈধ সম্পর্ক ছিল।
‘ঘটনার দিন তাকে সঙ্গে নিয়ে মিতার কক্ষে গিয়ে সিজার করা চাকু (নাইফ) দিয়ে তার গলায় পোচ দেন। পরে পড়ে যাওয়া ওই চাকু দিয়ে তিনিও একটা পোচ দেন।’
মিতা মারা যাওয়ার পর সাগর জানালা দিয়ে ও আজিজ দরজা দিয়ে বের হয়ে আসেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
এ জবানবন্দির ভিত্তিতে আজিজকে গ্রেপ্তার করাও হয়। তবে গত ২৮ জুলাই তদন্ত কর্মকর্তা শুধু সাগর জামাদারকে আসামি করে এবং আজিজকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্র গ্রহণ করে বিচারক মামুনুর রশিদ আজিজকে অব্যহতি দেন বলে জানান তিনি।
“পরে মামলাটি বিচারের জন্য জেলার দায়রা জজ আদালতে আসে উল্লেখ করে তিনি জানান, গত মঙ্গলবার সাগর জমাদারের জামিন চাইতে তার আইনজীবীর শুনানিতে আজিজ মোল্লাকে অব্যাহতির বিষয়টি উঠে আসে।
“এর প্রেক্ষিতে আদেশে দায়রা জজ ‘সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আজিজ মোল্লাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে অভিমত দিয়েছেন। ”
আদেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক মাসুদ রানা ও তদন্তে তদারকীর দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের কাছে আগামি ২৭ জানুয়ারির মধ্যে ব্যাখা চাওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মাসুদ রানা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তিনি আদালতে ব্যাখ্যা দেবেন।
ডিবির ওসি সৈকত হাসান বলেন, “সাগর জামাদারের ১৬৪ ধারার জবানবন্দির সাথে সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সাদৃশ্য না পাওয়ায় আজিজ মোল্লাকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছিল। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে। ”
তবে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, ওই মামলার তদন্তের সময় তিনি নাটোরে ছিলেন না।