‘ছেলেধরা সন্দেহে’ সিদ্ধিরগঞ্জে পিটুনিতে যুবক নিহত

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে জনতা। আরেকটি ঘটনায় পিটুনিতে অজ্ঞাত পরিচয় এক নারী আহত হয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2019, 04:24 PM
Updated : 20 July 2019, 04:41 PM

শনিবার নগরীর সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি আল আমিন নগর এবং পাইনাদী নতুন মহল্লায় এ দুটি ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. সিরাজ (২৮) নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রশিদের ছেলে।

আহত শারমিন বেগমকে (২৫) নগরীর খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। শারমিন পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচ বুনিয়া গ্রামের সালমান শাহর স্ত্রী। ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় তিনি ভাড়া থাকেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, সকাল ৮টার দিকে মিজমিজি আলামিন নগর এলাকার আইডিয়াল ইসলামিয়া স্কুল এর প্লে শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া (৭) স্কুলে যাচ্ছিল। পথে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক সাদিয়াকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপরাশেন) জসিম উদ্দিন বলেন, সাদিয়া আমি ‘স্কুলে যাব’ ‘স্কুলে যাব’ বলে কাঁদছিল। ঘটনাটি আশপাশের লোকজনের সন্দেহ হলে যুবকটিকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে অসংলগ্ন কর্থাবার্তা বললে সন্দেহ বাড়ে।

এক পর্যায়ে সাদিয়ার বাবা সোহেল খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। “এরই মধ্যে এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে যুবকটিকে পিটুনি দেয়।”

পরিদর্শক জসিম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাত ওই যুবককে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের খানপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক যুবকটিকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

অপর ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পরিদর্শক জসিম আরও বলেন, স্থানীয় একটি বাড়িতে শারমিন প্রবেশ করলে বাড়ির ভাড়াটিয়ারা তার পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে তিনি জবাব দিতে না পাড়ায় সন্দেহ হয়।

“এক পর্যায়ে নারী-পুরুষ মিলে ওই নারীকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে পিটুনির শিকার ওই নারীকে পাশের আল বালাগ আদর্শ ক্যাডেট স্কুলের ভিতর নিয়ে জনতার রোশানল থেকে রক্ষা করে কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি।”

পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে খানপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে যায় বলে জানান জসিম।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, ছেলেধরা সন্দেহে এলাকাবাসী এক নারীকে পিটুনি দিচ্ছে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে আটক করা হয়। ওই নারীর মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছিল। তাই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।