স্বাধীনতা দিবসে জেলায় জেলায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

স্বাধীনতা দিবসে জেলায় জেলায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে নীরবতা পালন ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2019, 01:00 PM
Updated : 26 March 2019, 01:07 PM

এর মধ্যে কোথাও কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

জয়পুরহাট

জয়পুরহাটে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা জয়পুরহাট জেলা স্টেডিয়াম মাঠের অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যান।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান বলেন, “জেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অব্যবস্থাপনা দেখে ক্ষুব্ধ স্থানীয় সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদু অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও আমি অনুষ্ঠান থেকে চলে আসি।”

জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোস্তাকিম ফাররোখ বলেন, “প্রায় প্রতিটি দিবসে সবার আসন ঠিক থাকলেও শুধু সংবাদকর্মীদের আসন ঠিক থাকে না। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছি আমরা।”

এ বিষয়ে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হাসেন বলেন, “অনুষ্ঠান আয়োজনের মূল দায়িত্বে ছিলেন একজন এনডিসি। তিনি এই জেলায় নতুন হওয়ায় বিষয়টি বুঝতে পারেননি। আগামীতে সবকিছু নিয়মমাফিক রাখা হবে।”

গোপালগঞ্জ

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ।

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের  ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন, নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান বিশ্বাসসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

পরে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

পরে শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াচ ও শরীরচর্চা প্রদর্শন করা হয়। জেলার মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় প্রর্থনা, হাসপাতাল, কারগারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, চলচ্চিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়েছে।

ভোলা

ভোলার গজনবী স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, “বঙ্গবন্ধুর দুটি স্বপ্ন ছিল। স্বাধীনতা আর ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়া। তার একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আরেকটি স্বপ্ন পূরণ করতে দেয়নি ঘাতকরা। ১৫ অগাস্ট সেই স্বপ্নের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করেছে।

“বঙ্গবন্ধুর পর তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছি। আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে মর্যাদার আসনে। একটি দল বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করতে দেয়নি। দেশের তরুণ প্রজন্মকে চিনতে হবে এবং জানতে হবে সেই মহান নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু।”

জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন টুলু, জেলার পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোশারেরফ হোসেন অনুষ্ঠানে ছিলেন।

ফরিদপুর

যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ফরিদপুরে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। কর্মসূচির অংশ হিসাবে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে একত্রিশ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা হয়।

সকাল ৭টায় শহরের গোয়ালচামটে শহীদ স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্ফণ করেন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া, পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন খান।

পরে স্মৃতিফলক থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। এটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেখ জামাল স্টেডিয়ামে গিয়ে শেষ হয়।  

এর আগে স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

গাজীপুর

গাজীপুরে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে। শহীদদের স্মরণে শহরের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান, পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, জেলা পরিষদ, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, আওয়ামী লীগ, গাজীপুর প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতারা।

পরে শহরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে শিক্ষার্থী, মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের অংশগ্রহণে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।

জামালপুর

যুদ্ধাপরাধীর বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানিয়ে জামালপুরে পালিত হয়েছে স্বাধীনতা দিবস।

দিবসটি উপলক্ষে জামালপুরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন সংসদ সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন। এরপর একে একে শহীদ বেদিতে ফুল দেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, পৌরমেয়র মীর্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন, বিএনপি, সিভিল সার্জন অফিস, জামালপুর প্রেসক্লাব, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মুন্সীগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়েছে। ভোরে শহরের পুরনো কাছারির শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামখচিত স্তম্ভে ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। স্মৃতিস্মম্ভে প্রশাসন ছাড়াও ফুলেল শ্রদ্ধা জানান মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসসহ মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা।

পরে স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধণা, ক্রীড়া, সাঁতার প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আলোচনাসভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

জেলার টঙ্গীবাড়ি, লৌহজং, শ্রীনগর, সিরাজদিখান ও গজারিয়ায় এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।