বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের স্ত্রীর জীবনাবসান

বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মারা গেছেন।

নড়াইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2018, 04:06 PM
Updated : 21 Nov 2018, 04:46 PM

বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।

ডায়াবেটিকসহ বার্ধক্যজনিত কারণে গত ২৭ অক্টোবর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।

বেগম ফজিলাতুন্নেসার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন। তার তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ফজিলাতুন্নেসার আত্মীয় আসাদ রহমান সাংবাদিকদের বলেন, অসুস্থ হওয়ার আগে ফজিলাতুন্নেসা নড়াইলের বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নড়াইল থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়।

কবে, কখন জানাজা ও দাফন হবে তা এখনও নির্ধারণ হয়নি বলে আসাদ জানান।

বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ

শহীদ নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মস্থান মহিষখোলার নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ ‘নূর মোহাম্মদনগর’ করা হয়।

নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন, যার বর্তমান নাম ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি)। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরে ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান নূর মোহাম্মদ।

১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালে যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। এপ্রিল থেকে অগাস্ট পর্যন্ত ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এসএ মঞ্জুর।

১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে মৃতুবরণ করেন নূর মোহাম্মদ।

শার্শার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।