রোববার খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মো. শাহজালাল নামের ওই যুবক ঘটনার বর্ণনা দেন।
এ ঘটনায় শাহজালালের মা রেনু বেগম বাদী হয়ে খালিশপুর থানার ওসি নাসিম খানসহ ১৩ জনকে আসামি করে গত ৭ সেপ্টেম্বর খুলনা সিএমএম আদালতে মামলা (নম্বর সি আর-৩০৯/১৭) দায়ের করেন।
আদালত আরজি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেসনকে (পিআইবি) নির্দেশ দেয়।
তবে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে শাহজালালের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘আইন ও শালিস কেন্দ্রের’ অ্যাডভোকেট মিনা মিজানুর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকবার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই খালিশপুর থানার ওসি নাসিম খান অন্যান্য অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে ‘অন্যায়ভাবে’ তাকে থানায় ধরে নিয়ে যান। থানায় তার পরিবারের কাছে টাকা দাবি করেন ওসি। চাঁদা না পেয়ে ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ গাড়িতে তুলে বিশ্ব রোডের নির্জন স্থানে নিয়ে যায়।
“সেখানে নিযার্ততন করে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে দুই চোখ উপড়ে ফেলে আমাকে চিরতরে অন্ধ করে দেয়।”
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এরপর রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে সুমা আক্তার নামে এক নারীকে বাদী করে তার বিরুদ্ধে একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করে এবং তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেলে রেখে যায়।
এরপর আসল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওসি তাকে সন্ত্রাসী, হত্যাকারী, ধর্ষক, নারী নির্যাতনকারী ও ডাকাত নামে অপপ্রচার চালাতে থাকে বলে অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তিনি আশা করেছিলেন আদালতে দায়ের করা মামলার তদন্ত চলাকালে ওসিকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হবে, কিন্তু সেটা হয়নি।
“ওসি নাসিম খান আমার পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দেন। আমরা প্রত্যাখ্যান করায় মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছেন। ফলে পরিবারসহ আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
তিনি চোখের সুচিকিৎসার দাবিও জানান।
পুলিশের অস্বীকার
পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ অস্বীকার করে শাহজালালকে একজন ছিনতাইকারী ও একাধিক মামলার আসামি বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে খালিশপুর থানা পুলিশ খুলনা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চোখ উৎপাটনের সঙ্গে পুলিশ জড়িত নয়; বরং গত ১৮ জুলাই কলেজ ছাত্রী সুমা আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনতাইকালে স্থানীয় জনতা শাহজামাল ওরফে শাহজালাল, ওরফে শাহা ওরফে জীবন ওরফে লিটন ওরফে আকাশকে গুপিটুনি দিয়ে চোখ তুলে রাস্তায় ফেলে রাখে।
খবর পেয়ে পুলিশ ওই ছিনতাইকারীকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় আটটি মামলা রয়েছে এবং দুটি মামলায় সাজা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়।