গত সোমবার ভোর রাতে নড়িয়ার ওয়াপদা লঞ্চঘাটে নোঙর করা তিনটি লঞ্চ ‘মৌচাক-২’, ‘এমভি মহানগর’ ও ‘নড়িয়া-২’ ডুবে যায়।
বুধবার দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ পর্যন্ত আর কারও সন্ধান মেলেনি।
এখনও ১৮ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে নড়িয়া থানার ওসি সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন।
এছাড়া মৌচাক-২ ও এমভি মহানগরের সন্ধান মিললেও উদ্ধার করা যাচ্ছে না তীব্র স্রোতের কারণে। নড়িয়া-২ এর সন্ধানও মেলেনি এখনও।
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও বিআইডব্লিউটিএ অনুসন্ধান কাজ চালাচ্ছে। নিখোঁজদের স্বজনরাও ব্যক্তিগত উদ্যোগে নদীতে অনুসন্ধান করছেন।
উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ মঙ্গলবার থেকে শুক্রবাব পর্যন্ত ওয়াপদা ঘাটে নোঙর করা রয়েছে।
নড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক নিয়াজ আহম্মেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার বিকালে চন্ডিপুরের কাছে এমভি মহানগর লঞ্চের সন্ধান মিলেছে। তাদের ডুবুরিরা লঞ্চের সঙ্গে ড্রাম বেঁধে রেখেছেন। স্রোত কমলে উদ্ধার কাজ শুরু করবেন।
এর আগে দুলারচর এলাকায় মৌচাক-২ লঞ্চের হদিস পাওয়া যায়। তবে স্রোতের কারণে উদ্ধার করা যায়নি বলে জানান তিনি।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব মনোজ কান্তি বড়াল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পানির তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে কাজ শুরু করেছে।
মনোজ কান্তি বড়ালের নেতৃত্বে কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন বিআইডব্লউিটিএ-এর প্রকৌশল বিভাগের যুগ্ন-সচবি, বিআইডব্লিউটিসির প্রধান প্রকৌশলীসহ আরও ছয় জন।
নড়িয়ার ওসি সালাহউদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিন লঞ্চডুবির ঘটনায় এখনও অন্তত ১৮ জন নিখোঁজ থাকার কথা জানা গেছে।
নিখোঁজদের স্বজনরা প্রতিদিন নদীর তীরে ঘুরে যাচ্ছেন।
স্বজনদের কাছে জানা যায়, লোনসিন গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ৫ মাস বয়সী ছেলে, শ্বাশুড়ি ফখরুন্নেছা বেগম, রাসেল, স্বপন, নড়িয়া-২ এর কেরানি স্বজল তালুকদার, সুকানী ছোরহাব হোসেন, গ্রিজার সাদেক আলী, লস্কর জয় বাড়ৈ, দোকানি রবিন, মহানগরের সুকানি সফিক, চালক শাহ আলম, গ্রিজার সালাহ উদ্দিন, লিটন সেখ, রিপন দাস, মানিক মাদবর নিখোঁজ রয়েছেন।
নড়িয়া-২ লঞ্চের দোকানি লিটন সেখের স্ত্রী ফাতেমা বলেন, “পাঁচ দিন চলে গেল। আর কতদিন লাশের অপেক্ষায় থাকব? আসলে উদ্ধারকারীরা লাশ খুঁজছে, নাকি লোক দেখানো উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে?
“আমরা শুধু লাশটি চেয়েছিলাম, যাতে আমার সন্তানেরা বাবার কবর দেখে দোয়া করতে পারে।”
পদ্মার তীরে ওয়াপদা লঞ্চঘাটে লঞ্চ তিনটি নোঙর করা ছিল। সোমবার ভোর রাতে নদীতীর একটি বাঁশঝাড়সহ ভেঙে পড়লে লঞ্চ তিনটি ডুবে যায়।