“হামলাকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং ভাঙচুর করে। তাদের হামলায় ফাঁড়ির কনস্টেবল সালাহ উদ্দিন ও উসমান গণি আহত হন।”
Published : 20 Feb 2024, 05:23 PM
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় ওয়াজ মাহফিল থেকে আলোচিত এক ধর্মীয় বক্তাকে ধরে নিয়ে গেছে এমন গুজবে একটি পুলিশ ফঁড়িতে হামলা হয়েছে।
উপজেলার বাদাঘাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ হামলার ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে বলে এসআই নাজমুল ইসলাম জানান।
আটকরা হলেন- আহমদ, মোজাম্মিল হক, রায়হান মিয়া, মোশারফ মিয়া ও নাসির মিয়া। তাদের বাড়ি পৈলনপুর, বড়গোপটিলা ও আশপাশের এলাকায় বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া হামলার সময় তদন্তকেন্দ্রের দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন। তারা হলেন- সালাহ উদ্দিন ও উসমান গণি।
ঘটনার বর্ণনায় তদন্তকেন্দ্রের এসআই নাজমুল বলেন, স্থানীয় ‘হিফজুল ফজল পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই বাদঘাট বাজারে দুই দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের আয়োজন করে।
“এ উপলক্ষে বাদাঘাট বাজার সংলগ্ন বাদাঘাট মাদ্রাসা মাঠের চারপাশে মাইক লাগিয়ে সোমবার বাদ জোহর তাদের প্রথম দিনের কার্যক্রম শুরু করে; যা চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।”
এসআই বলেন, “ওয়াজ চলাকালেই একটি চক্র প্রচার করতে থাকে যে, আলোচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে (শিশু বক্তা হিসেবে পরিচিত) অনুষ্ঠানে আসতে দেওয়া হচ্ছে না এবং তাকে আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়া হয়েছে। এরপর রাত সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকশ মানুষ এই গুজবের ওপর ভিত্তি করে থানায় হামলা চালায়।”
এ সময় তারা ইট নিক্ষেপ এবং ভাঙচুর করে। তাদের হামলায় ফাঁড়ির কনস্টেবল সালাহ উদ্দিন ও উসমান গণি আহত হন বলে জানান এসআই নাজমুল।
পরে হামলাকারীরা তদন্তকেন্দ্রের দরজা-জানালা ও গেইট ভাঙচুর করে ঢোকার চেষ্টা করে জানিয়ে তিনি বলেন, “তাৎক্ষণিক এ খবর তাহিরপুর থানা ও জেলা পুলিশকে জানানো হলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া পাঁচজনকে আটক করা হয়।
“আমরা যাছাই-বাছাই করে দেখেছি ধর্মীয় প্রচারণার নামে তারা ‘উগ্রবাদী’ কার্যক্রম চালাতে চেয়েছিল। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
তাহিরপুর থানার ওসি মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, রফিবুল মাদানীকে আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গেছে এই মিথ্যা গুজব রটিয়ে ফাঁড়িতে হামলা করেছে। এতে আমাদের দুজন পুলিশ আহত এবং ফাঁড়ির কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে জানতে ‘হিফজুল ফজল পরিষদ’ এর সভাপতি ইয়াহিয়া আহমদের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সোমবারের ওয়াজ মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন পইলনপুর মাদরাসার মোহতামিম মাইনুদ্দিন। তিনি হামলার ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চাননি।
তবে তিনি জানিয়েছেন, “অনিবার্য কারণবশত মঙ্গলবারের মাহফিল হচ্ছে না।”