কুমিল্লায় মোবাইলে ডেকে নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্যবসায়ীকে খুন

মুছার মোবাইল থেকে স্ত্রীকে কল করে এক ব্যক্তি জানায় তার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। টাকা দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2024, 06:39 AM
Updated : 1 Feb 2024, 06:39 AM

কুমিল্লায় মোবাইলে কল পেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হয়ে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক ব্যবসায়ী। 

বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাগুর বাস স্টেশনের উত্তর পাশের এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন দেবিদ্বার থানার ওসি নয়ন মিয়া। 

নিহত মো. মুছা আলী (৪০) কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার উত্তর নাজির পাড়া গ্রামের মৃত মাজেদ আলীর ছেলে। তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে জুতা ও কাপড়ের ব্যবসা করতেন। 

মুছা দেবিদ্বার উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের তুলাগাঁও গ্রামে বিয়ে করেছেন।তার স্ত্রী নাজিয়া আক্তার। 

নিহতের স্ত্রীর বরাত দিয়ে ওসি বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরিচিত একজনের মোবাইল ফোনে কল পেয়ে মুছা শ্বশুর বাড়ি থেকে বের হন। 

রাত ৯টার দিকে মুছার মোবাইল থেকে নাজিয়ার মোবাইলে কল করে এক ব্যক্তি জানায় তার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। টাকা দিলে ১০ মিনিট পর ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে অপহরণকারীদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ৩০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। 

কিন্তু রাত সাড়ে ১০টার দিকে মুছাকে হত্যার খবর পায় পরিবারের সদস্যরা।   

স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কয়েকজন যুবক মুছাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহতের স্ত্রী রাজিয়া আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, তার স্বামী ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে কাপড়, জুতা ও কসমেটিকস নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার জামতলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশের দোকানে বিক্রি করতেন। দুইদিন আগে তিনি কুমিল্লায় শ্বশুর বাড়িতে এসেছেন।

তিনি আরও বলেন, যারা তার স্বামীকে আটক করেছিল তারা প্রথমে ১০ লাখ টাকা চেয়েছিল, পরে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে বিকাশে ৩০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। তারপরও কেন তার স্বামীকে হত্যা করা হলো? তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান। 

দেবিদ্বার থানার ওসি নয়ন মিয়া বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরে বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। মরদেহ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

ওসি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে- ঘটনায় জড়িতরা নিহত মুছার পূর্ব পরিচিত ছিল। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে মাদক কারবার কিংবা আর্থিক বিরোধ থাকতে পারে। তবে তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। 

মুছার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে তিনটি মাদক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। গত রোববারও কুমিল্লার আদালতে একটি মাদক মামলায় তার হাজিরা ছিল বলে জানান ওসি।