মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া সেই সাব্বিরের পাশে বরিশালের ডিসি

অর্থ সহায়তার পাশাপাশি এমবিবিএস প্রথম বর্ষের একসেট বইও দেন ডিসি।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2024, 05:06 PM
Updated : 22 Feb 2024, 05:06 PM

সুযোগ পেয়েও অর্থাভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা বরিশালের উজিরপুরের মেধাবী শিক্ষার্থী রমজান খান সাব্বিরের পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা প্রশাসক।

উজিরপুর উপজেলা প্রশাসনের পর সাব্বিরের ভর্তির জন্য বরিশাল জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামও অর্থ সহায়তা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে সাব্বির ও তার বাবা ফিরোজ খানের হাতে ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম। এ সময় এমবিবিএস প্রথম বর্ষের একসেট বইও দেওয়া হয় সাব্বিরকে।

সহায়তা পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাব্বিরের বাবা গামছা বিক্রেতা ফিরোজ খান।

এ সময় জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামকে কদমবুচি করেন সাব্বির।

জেলা প্রশাসক বলেন, “সাব্বিরের ভর্তির টাকা ও প্রথম সেমিস্টারের বই দেওয়া হয়েছে। তার সমগ্র শিক্ষাজীবনে জেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।”

অনেক বিত্তশালীও সাব্বিরকে সহায়তা করার জন্য যোগাযোগ করছেন জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, “একজন চিকিৎসক হতে সাব্বিরের কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।”

এর আগে সাব্বিরকে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন ২১ হাজার টাকা সহায়তা দেন।

কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি হাট-বাজার ঘুরে ঘুরে গামছা বিক্রি করেন উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দমোদরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ খান।

তার ছেলে রমজান খান সাব্বির পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

কিন্তু অভাবের সংসারে ছেলেকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন ফিরোজ।

বিষয়টি জানতে পেরে, প্রথমে উপজেলা প্রশাসন মেধাবী শিক্ষার্থী সাব্বিরের পাশে দাঁড়ায়।

অর্থ সহায়তার পাশাপাশি সাব্বিরের ভর্তির যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। 

সাব্বিরের বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে এলে তিনিও সহায়তার হাত বাড়ান।

বৃহস্পতিবার ইউএনওর সঙ্গে বরিশাল ডিসির কার্যালয়ে যান সাব্বির।

ডিসির সহায়তা পেয়ে ইউএনওর গাড়িতেই উজিরপুরে ফিরে যাওয়ার সময় আবেগ আপ্লুত সাব্বির বলেন, “এ মুহূর্তের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায়। আমি জেলা প্রশাসকসহ সবার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।”

তার বাবা ফিরোজ খান জানান, কৃষি শ্রমিকের কাজ করার পাশাপাশি স্থানীয় হাট-বাজারে ঘুরে ঘুরে গামছা বিক্রি করে তিনি প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪শ’ টাকা আয় করেন। ওইভাবে আয়-রোজগার করেই বছরের পর বছর ধরে চলছে তার চার সদস্যের সংসার। এর মধ্যে দুই ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া।

এ অবস্থায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন রমজান খান সাব্বির। পরে পরীক্ষা দিয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।

সাব্বির জানান, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তার বোন উর্মিকে স্কুল থেকে একটি ট্যাব দেওয়া হয়। ওই ট্যাবটি দিয়েই অনলাইন ও ইউটিউব থেকে পাঠ নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সাব্বির।

কিন্তু গরিব বাবার ছেলে হয়ে মেডিকেলে ভর্তিসহ পড়াশোনার খবর কীভাবে জোগাড় হবে এ নিয়ে ছিলেন দুশ্চিন্তায়।

জেলা ও উপজেলা প্রশাসন পাশে দাঁড়ানো খুশি মেধাবী শিক্ষার্থী সাব্বির ও তার বাবা ফিরোজ খান।