দেশে রাজনৈতিক দলের অভাব দেখেন শেখ হাসিনা

“ক্ষমতার উচ্চ আসনে বসে যে দলগুলো তৈরি হয়, এ দলগুলোর মাটি ও মানুষের সাথে সম্পর্ক থাকে না।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2024, 08:13 AM
Updated : 23 Feb 2024, 08:13 AM

মাটি ও মানুষের সঙ্গে সংযোগ আছে, বাংলাদেশে এমন রাজনৈতিক দলের অভাব দেখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

সম্প্রতি জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে শুক্রবার সকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এমন বক্তব্য আসে।

সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে একজন সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে দেশের রাজনীতি নিয়ে বক্তব্য জানতে চান। আগামী পাঁচ বছরে দেশের গণতন্ত্রকে কোথায় নিয়ে যেতে চান, সেই প্রশ্নও ছিল তার কাছে।

বাংলাদেশের প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, “গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে একটা দেশ উন্নত হয়। গত ১৫ বছর আমরা দেশটাকে উন্নত করতে পেরেছি। আর্থসমাজিক উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের মন-মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে, শিক্ষা-দীক্ষা সবদিক থেকে বাংলাদেশ অনেক উপর উঠে আসতে সক্ষম হয়েছে।

“আমরা এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা যথাযথভাবে অগ্রগামী হতে পারি, এগিয়ে যেতে পারি সেই কাজটাই আমাদের বড় কথা। এদিকে আমার মনোযোগ দিয়েছি।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আসলে রাজনৈতিক দলের অভাব বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগ ঊনপঞ্চাশ সালে গঠিত হয়েছিল গণমানুষের কথা বলে। সেই সময় থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেই আওয়ামী লীগ এগিয়ে গেছে।

“আমি যদি আমার প্রতিপক্ষ কয়েকটি দল দেখি, একটা তো যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াত, যাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান সংবিধান সংশোধন করে তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। পাসপোর্ট নিয়ে যারা পাকিস্তান গেছে তাদেরকে ফিরিয়ে এনে ভোটের অধিকার দিয়েছে। জাতির পিতা হত্যাকারীদেরকে পার্লামেন্টে নিয়ে খালেদা জিয়া বসিয়েছিল।”

সেনাশাসন থেকে আসা দলের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মিলিটারি ডিকটেরের পকেট থেকে দুটি পার্টি- একটা হলো বিএনপি, আরেকটা  হলো জাতীয় পার্টি। ক্ষমতার উচ্চ আসনে বসে যে দলগুলো তৈরি হয়, এ দলগুলোর মাটি ও মানুষের সাথে সম্পর্ক থাকে না। তাদের শিকড়ের সন্ধানটা কোথায়?”

“তারা চায় এমন একটা পরিবেশ হোক, অস্বাভাবিকভাবে তাদেরকে কেউ ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। সেটা করতে যেয়ে তারা প্রথম যে ধরা খেল, সেটা ২০০৮ এর নির্বাচন। প্রচার-প্রচারণা সবদিক থেকে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমান-সমান, এমন একটা ভাব ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের যে মাটি-মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক এবং মানুষের আস্থা-বিশ্বাস যে আওয়ামী লীগের ওপর আছে, এটা কিন্তু অপপ্রচারের কারণে অনেকটা ঢেকে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, “২০০৮ নির্বাচন নিয়ে কিন্তু কেউ প্রশ্ন করতে পারেনি যে, সেই নির্বাচনের রেজাল্টটা কী? সেখানে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩টা আসন পেল ৩৩০ সিটের মধ্যে। বিএনপি ২০ দলীয় ঐক্যজোট নিয়ে পেল ৩০টা আসন। এরপর থেকেই শুরু হলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করার চেষ্টা।

“বার বার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, আমরা যেভাবে পারি সেখান থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত রাখতে পেরেছি।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমার সামনে এটাই থাকবে, এই যে গণতান্ত্রিক ধারাটাকে আমরা স্থায়ী করেছি, যার সুফল দেশবাসী পাচ্ছে, তাদের জীবনমান উন্নত হয়েছে, এই ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা এগিয়ে যাব।”