আদালতে খালেদা বললেন, তিনি নির্দোষ

জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের তিন কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে সুবিচার চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2016, 09:40 AM
Updated : 23 Nov 2017, 10:37 AM

বৃহস্পতিবার ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করে খালেদা জানিয়েছেন, তিনি সাফাই সাক্ষী হাজির করতে চান।

আত্মপক্ষ সমর্থনের আগে এ মামলার ৩২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি তাকে পড়ে শোনানো হয়। পরে খালেদা প্রায় ১৫ মিনিট তার যুক্তি বিচারকের সামনে তুলে ধরে বলেন, ওইসব সাক্ষ‌্যে যে বক্তব‌্য এসেছে তা সঠিক নয়।

এদিন শুনানিতে একটি লিখিত বক্তব‌্যও নিয়ে এসেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা।

দিনের শুনানি শেষে বিচারক আবু আহমেদ জমাদার ৮ ডিসেম্বর এ মামলার পরবর্তী দিন ঠিক করে দেন। ওইদিন খালেদা জিয়া তার আত্মপক্ষ সমর্থনে আরও বক্তব‌্য দেবেন।

পুরান ঢাকার বকশিবাজারে কারা অধিদপ্তরের মাঠে এ আদালতেই জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার চলছে। খালেদার পাশাপাশি তার ছেলে তারেক রহমানও এ মামলার আসামি।

এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় এদিন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদকে জেরা করেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেকের আইনজীবীরা।

বিচারের শেষ পর্যায়ে থাকা এ মামলাতেও ৮ ডিসেম্বর পরবর্তী তারিখ রাখা হয়েছে।  

এ দুটি মামলায় এর আগে শুনানি হয় গত ২১ নভেম্বর। সেদিন খালেদার পক্ষে তার আইনজীবী সময়ের আবেদন করলে দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে যায়।

আর এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদার ছেলে তারেক রহমানের পক্ষে তার আইনজীবী বোরহান উদ্দিন সেদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদকে আংশিক জেরা করেন।

সেদিনই বিচারক আবু আহমেদ জমাদার মামলা দুটির শুনানির জন‌্য ১ ডিসেম্বর দিন ঠিক করে দেন।

সে অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় খালেদা গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের পথে রওনা হন বলে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া জানান।

এদিকে খালেদার হাজিরার দিন থাকায় সকাল থেকেই আদালত এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও আদালত প্রাঙ্গণে হাজির হন।

জিয়া দাতব‌্য ট্রাস্ট মামলা

জিয়া দাতব‌্য ট্রাস্টের নামে আসা তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ অগাস্ট তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরের বছরের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরু হয়।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করা হয়।

তারেক রহমান দেশের বাইরে আছেন। কাজী সালিমুল হক কামাল, শরফুদ্দিন আহমেদ জামিনে আছেন। ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।