৬০০ কোটি টাকার ইউপি ভোটের প্রস্তুতি শুরু

দেশের নবম ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2016, 08:21 AM
Updated : 29 Jan 2016, 08:21 AM

সাড়ে চার হাজার ইউপিতে প্রথমবারের মতো দলভিত্তিক এ নির্বাচন করতে দুটো বিধিমালা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। ছয়শ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরে অর্থমন্ত্রণালয়ে সংশোধিত বাজেট প্রস্তাবও পাঠিয়েছে ইসি।

প্রথমধাপে ভোট উপযোগী ৭৭৪ ইউপি’ তালিকা বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ইসি সচিবালয়ে এসেছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী ভোটের প্রস্তুতির বিষয়ে বলেন, “১০ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংশোধিত নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণবিধি হাতে পেলে আমরা  মাঝামাঝিতে তফসিল ঘোষণা করতে পারব। তাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে নির্বাচন করা যাবে। সবার সুবিধা বিবেচনা করে তফসিলের পর ৪০-৪৫ দিন রাখা হবে।”

তফসিল ঘোষণার পাঁচ দিনের মধ্যে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের তালিকা ইসিতে পাঠাতে ইতোমধ্যে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পাঠিয়েছেন ইসির উপ সচিব আবদুল অদুদ।

সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে ও দশম সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত ভোট কেন্দ্রগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েই ভোটকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে এতে।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ সচিব সামসুল আলম জানান, ইউপি ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে ইতোমধ্যে কর্মপরিকল্পনার জন্যে ‘চেকলিস্ট’ উপস্থাপন করা হয়েছে।

“বিধিমালা জারির পর স্থানীয় সরকার বিভাগের তালিকা নিয়ে কমিশন সভায় উপস্থাপনের পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। মার্চের শেষ সপ্তাহে প্রথম ধাপের ঊপকূলীয় এলাকার সাড়ে সাতশ ইউপি ও পরে বাকিগুলোর ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে ইসি,” বলেন তিনি।

# ৩১ মে মেয়াদ শেষ হবে ৭৭৪টি ইউপির।

# ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল দিলে ভোট হতে পারে ২০ থেকে ২৮ মার্চের মধ্যে।

# গড়ে ২০০০ ভোটারের জন্য একটি করে কেন্দ্র।

# সাড়ে চার হাজার ইউপিতে নির্বাচনের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা।

ভোটের ব্যয় যাবে কোথায়

২৫০ কোটি টাকা

নির্বাচন পরিচালনা: ভোটকেন্দ্রের জন্য বেষ্টনী ও গোপন কক্ষ নির্মাণ, অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দৈনিক ভাতা, ভোটকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য মনোহারী দ্রব্য কেনা, ফরম, প্যাকেট ও নির্বাচনী নির্দেশিকা প্রস্তুত করা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স সংরক্ষণ-সরবরাহ, নির্বাচনে ব্যবহৃত সামগ্রী ব্যালট পেপার, সিলগালা, স্ট্যাম্প প্যাড এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিকে যাবে এই টাকা।

৩৫০ কোটি টাকা

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা: আইনশৃঙ্খলা খাতে পুলিশ, র‌্যাব, বিবিজি, কোস্টগার্ড, আনসার-ভিডিপি এবং নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমদের নির্বাচনী কাজে নিয়োগে দিতে এই ব্যয় হবে।

ইসির বাজেট শাখার উপ সচিব শাহজাহান খান জানান, পাঁচ বছর আগে করা সর্বশেষ ইউপি ভোটে খরচ হয়েছিল প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা।

ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এনামুলক হক বলেন, “চলতি অর্থবছরের বাজেটে ইউপি নির্বাচনের জন্য কিছু বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে আমাদের সার্বিকভাবে ৬০০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। এজন্য সংশোধিত বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দের কথা অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। আরেকবার বৈঠক করে তা চূড়ান্ত করা হবে।”

দেশে সব মিলিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে মোট আটবার। সর্বশেষ ২০১১ সালে ২৯ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল প্রথম দফায় প্রায় ছয়শ ইউপিতে ভোট হয়। দ্বিতীয় দফায় ৩১ মে থেকে ৫ জুলাই তিন হাজার আটশর বেশি ইউপিতে নির্বাচন করা হয়।

 

ইউপি ভোটের আরও খবর