ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিরোধী দলের রাজনীতির মূল ইস্যু হচ্ছে- সব অপরাধের অপরাধী সরকার। এখনো নালিশ করতে যান মার্কিন দূতাবাসে।”
Published : 20 Feb 2024, 03:13 PM
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষসহ নানা ঘটনায় প্রায়ই আলোচনায় আসা সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে নিয়ে নতুন চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ধর্ষণের ঘটনায়।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, তার পরিচিত মামুনুর রশীদ মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে।
পরে ভুক্তভোগীর স্বামী ছয়জনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন’ আইনে মামলা করেন।
তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের প্রায়ই তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে জড়ানোর খবর আসে।
সবশেষ চায়ের দোকানে বসা নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার সংঘর্ষ হয় বগিভিত্তিক সিএফসি ও সিক্সটিনাইন গ্রুপের মধ্যে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠনটির কর্মকাণ্ড নিয়ে ভাবনার কথা জানতে চাওয়া হয় ওবায়দুল কাদেরের কাছে।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ব্যবস্থা হচ্ছে, নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করছি। দলে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যত কঠোর হওয়া দরকার।”
বিএনপি এখনও নালিশ করতে মার্কিন দূতাবাসে যায় বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিরোধী দলের রাজনীতির মূল ইস্যু হচ্ছে- সব অপরাধের অপরাধী সরকার। এখনো নালিশ করতে যান মার্কিন দূতাবাসে। এই হচ্ছে আমাদের প্রধান বিরোধী দলের অবস্থা।
“৫৪টি দল নিয়ে তারা সরকার করেছিল। এর মধ্যে সমমনাও আছে। এই ঐক্যজোটের শরিকরা এখন কোথায়? বিএনপি নেতাদের কাছে আমি জানতে চাই। তারা এখন কোথায়? সেই ঐক্য কোথায়? সেই জগাখিচুড়ির জোট কোথায়? কোনোটারই তো অস্তিত্ব নেই? এখন সরকারের উপর দোষ দিয়ে পার পাওয়া যাবে? সবাই জানে নির্বাচনে কে জিতেছে। অংশগ্রহণ না করেই নির্বাচনে জিতে গেল? একটা পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কি?”
নির্বাচন করার জন্যই বিএনপি নেতাদের আটক রাখা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নে জবাব তিনি বলেন, “২৮ অক্টোবরের ঘটনায় তাদেরকে কারাগারে নেয়া হয়েছিল৷ পুলিশকে হত্যা করা, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করা, সাংবাদিকদের মারধর করা, জাজেস চেম্বারে হামলা করা, পুলিশের হাসপাতালে গিয়ে হামলা করা, এসব অভিযোগে তাদেরকে আটক করা হয়।
“তারা বলেছিল পালিয়ে যাবে না, পালিয়ে গেল কেন? পালিয়ে গেল মানে তারা কোনো অপরাধ করেছে। সেদিন কিছু অপরাধ তারা করেছে, সেজন্য তাদের পালাতে হয়েছে। পালানো অবস্থায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপরও বিষয়টা বিচারাধীন, আদালতের বিষয়। আদালত যখন জামিন দিয়েছে তখন তারা মুক্তি পেয়েছে।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিবে না সরকার। তবে সহিংস তৎপরতা, সন্ত্রাস, অগ্নি সন্ত্রাস এসব উপাদান যদি আন্দোলনে যুক্ত হয় তাহলে বাধা আসবে। তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিলে আমরা বাধা দিব কেন?”
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর সায়েম খান সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন।