ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মেলা ও কিছু প্রশ্ন

বেশি দূরে যাবো না, গত দুই দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো গবেষণা কি আমাদের ব্যবহারিক বিশেষ কোন প্রয়োজনে এসেছে? অথচ বছর বছর গণ্ডায় গণ্ডায় পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে। কেন এই বৈপরীত্য?

আনিসুর রহমানআনিসুর রহমান
Published : 11 Nov 2022, 02:38 PM
Updated : 11 Nov 2022, 02:38 PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শতবর্ষে এসে সম্প্রতি দুইদিনব্যাপী প্রথমবারের মতো গবেষণা ও প্রকাশনা মেলার আয়োজন করেছিল। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিল্প ও জ্ঞানের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা। ইতিবাচক উদ্যোগ। তারপরও থাকে প্রশ্ন, থাকে প্রশ্নের পেছনে গল্প। সেইসব বিষয়ে আলোকপাত করার পূর্বে কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে চাই। 

বহুল পঠিত পুরোনো প্রবাদ, 'প্রদীপের নিচে অন্ধকার'। এই সত্যকে ইঙ্গিত করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন থেকে শুরু করে নানা পর্যায়ে বছরের পর বছর ধরে চলে আসা শিশুশ্রমকে তুলে ধরেছে।  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু শ্রমিকদের মৌলিক  অধিকারের কোনোটাই রক্ষা করা হয় নি।  অথচ এখানেই রয়েছে সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এখানে শিশুদের কল্যাণের এই হাল? এখানে শিশু-শ্রমিকদের মৌলিক অধিকারের পরিণতি কি? অথচ এখানকার গবেষক অধ্যাপক ও কর্তারা এসব বিষয়ে নানা জায়গায় কত রকম ছবক দিয়ে থাকেন। এই চিত্র কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, প্রায় একই চিত্র দেশের প্রতিটি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। অর্থাৎ এখানে সব বিদ্যার্জন আর জ্ঞানার্জন হবে পাঠ্যপুস্তক বা পরীক্ষায় মূল্যায়ন কেন্দ্রিক। তার প্রায়োগিক দৃষ্টান্ত উপেক্ষিত হবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। এরকমটা যেন আমরা মেনেই নিয়েছি।

এই পর্যায়ে আমি কয়েকটি প্রশ্ন তুলে ধরতে চাই। 

গবেষণার উদ্দেশ্য কি কেবল ডিগ্রি নেওয়া আর সেই মতে গবেষণা নিবন্ধ ছাপিয়ে নিজের জীবনবৃত্তান্ত ভারি করে পদোন্নতি ভাগিয়ে নেওয়া?

বেশি দূরে যাবো না, গত দুই দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য কোনো গবেষণা কি আমাদের ব্যবহারিক বিশেষ কোন প্রয়োজনে এসেছে? অথচ বছর বছর গণ্ডায় গণ্ডায় পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে। কেন এই বৈপরীত্য? এর থেকে উত্তরণের পথ কী?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্যে অবাক করার মতো অবকাঠামো এবং পরিকাঠামো রয়েছে। এখানে উল্লেখ করতে চাই, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধ শতাধিক উচ্চতর গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। যা পৃথিবীর প্রথম সারির অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েরই নাই।  তবে এসব গবেষণা কেন্দ্র কার্যকর গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে কিনা সেটা একটি সঙ্গত প্রশ্ন। তবে উদ্বেগের বিষয় এসব গবেষণা কেন্দ্রের বা প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোর পূর্ণাঙ্গ ভিত্তি এখনো গড়ে উঠেনি। কিছু কিছু কেন্দ্র বা প্রতিষ্ঠান কেবল পরিচালক সর্বস্ব।

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করতে চাই, বহুল কাঙ্খিত মুজিব শতবর্ষের প্রাক্কালে ২০১৯ সালে ‌বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টি প্রতিষ্ঠার তিন বছরে কয়েকটি একক বক্তৃতা ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। এখন পর্যন্ত পরিচালক সর্বস্ব এই প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনাও দৃশ্যমান নয়। এই প্রতিষ্ঠানকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে উন্নীত করতে চাইলে এটিকে প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত রেখেও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। এর স্বতন্ত্র তহবিল প্রবর্তনসহ বঙ্গবন্ধু সংক্রান্ত যাবতীয় স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশ রেখে এটিকে আন্তর্জাতিক মানের সমন্বিত একটি সমৃদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে  দাঁড় করাতে চাইলে অভিনব বিকল্প নিয়ে ভাবতে হবে। বিশেষ করে সমাজ, রাষ্ট্র ও ইতিহাস নিয়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের তুলনামূলক আন্তমহাদেশীয় গবেষণা ও কর্মযজ্ঞ হাতে নিতে হলে বর্তমানের পরিচালনা কাঠামোয় কতটা সম্ভব? এই প্রশ্ন সঙ্গত কারণেই তোলা যায়। 

এই বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার এবং মাতৃভাষার মর্যাদার পক্ষের কণ্ঠস্বর। ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে এখন পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠান এই জাতির প্রধান কাণ্ডারি। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট এখন পর্যন্ত কেন বাংলা এবং ইংরেজি দু ভাষাতেই পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া সম্ভব হলো না? প্রকারান্তরে সরকারের বেশিরভাগ মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও প্রতিষ্ঠনের ওয়েবসাইট বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় সুন্দর  করে পরিবেশিত এবং চমৎকার শুদ্ধ ভাষায় বিবৃত। সরকার পারলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন পারল না? সংশ্লিষ্ট বিষয়ের স্নাতকদের অনেকেই তো এখান থেকেই বের হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের উচ্চ শিক্ষাস্তরে আমাদের গবেষণার দুটো মোটাদাগের বিপত্তি রয়ে গেছে। প্রথমত, গবেষকদের জন্যে পুরো মাত্রায় মনোনিবেশের জন্যে যে উৎসাহ, স্বীকৃতি এবং প্রণোদনার দরকার সেটা দৃশ্যত নেই বললেই চলে। আবার অদৃশ্যত গবেষণা সেরকম কোনো কাজ হিসেবেও কি ততটা স্বীকৃত? এখন আমাদের দেশে একটা ফ্যাশন দাঁড়িয়েছে কোনো কোনো পদধারী বিশেষ করে সরকারের সামরিক-বেসামরিক আমলা থেকে শুরু করে মন্ত্রী বা ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ নামের পূর্বে ডক্টর শব্দটি যুক্ত করার অদম্য বাসনা পোষেন। সেই খায়েশ থেকে গবেষণা কিছু একটা করেন। তার প্রায়োগিক দিক থাকুক বা না থাকুক। অন্যদিকে তাদের গবেষণা থেকে কোনো প্রণোদনা আসুক বা না আসুক সেটা তাদের জন্যে মুখ্য বিষয় নয়। আরেক দল আছেন যারা শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত তাদের পদোন্নতির জন্যে কিছু গবেষণা নিবন্ধ আর ডিগ্রি অবধারিত। তাই তারা গবেষণা কিছু একটা করেন ক্ষেত্র বিশেষে সংক্ষিপ্ত পথের তালাশ কেউ কেউ করেন। তাতে তার লদ্ধ গবেষণার প্রায়োগিক আবেদন থাকুক বা না থাকুক। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমদের নাম একটু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, সরদার ফজলুল করিম, রাজিয়া খান আমিন, কাশীনাথ রায়, খোন্দকার আশরাফ হোসেন এর মতো শিক্ষাবিদেরা ডিগ্রিকে গুরুত্ব না দিয়ে মৌলিক জ্ঞানচর্চাকে শিরোধার্য করে গেছেন।

আধুনিক বিশ্বের যে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয় তার কাঠামো কিরকম? একটা উদাহরণ দিতে চাই।  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গবেষণা একটা বেতনভুক্ত কাজ।  সেখানে রীতিমতো প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়, প্রকল্পের অনুকূলে পর্যাপ্ত তহবিলের সংস্থান করা হয়। তারপর স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আগ্রহীদের মাঝখান থেকে দেশ-বিদেশ হতে গবেষক বাছাই করা হয়। গবেষণা চলাকালীন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গবেষকরা শ্রেণীকক্ষে পাঠদান, পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রমে একজন শিক্ষকের মতো অংশ নিয়ে থাকেন। এতে করে যেমন শিক্ষক সংকটের অবসান হয়, অন্যদিকে ভবিষ্যতের যোগ্য শিক্ষক ও গবেষক তৈরী হন।  সেই সঙ্গে অর্জিত জ্ঞান ও গবেষণার ফলাফল প্রায়োগিক দিক বাতলে নিতে পারে বা বাতলে দিতে পারে। কথা আরো আছে অনেক ক্ষেত্রে স্নাতক পর্যায়ে থেকেই শিক্ষার্থীদের গবেষণা প্রক্রিয়ায়  হাতে খড়ি দেওয়া হয়ে থাকে।

এর সঙ্গে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা প্রক্রিয়ার হালহকিকত তুলনা করে নিলে বুঝতে পারব আমাদের গবেষক আছেন, গবেষণা আছে, গবেষকরা ডিগ্রিও পেয়ে থাকেন। তবে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অনেক ক্ষেত্রেই এসব গবেষণা বস্তাপচা প্রকাশনা হিসেবেই রয়ে যায়। 

এ ধরনের গবেষণা ছাপিয়ে আমাদের বড় বেশি দরকার তর্ক-বিতর্কের অবাধ পরিবেশ। এক গবেষণার সঙ্গে আরেক গবেষণার চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতা। সেই দৃষ্টান্ত কি আমাদের অবশিষ্ট রয়েছে? না কি অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের কথিত ভাষ্য মতে- এক অধ্যাপকের দুই ডক্টরেট ডিগ্রির সঙ্গে গরুর দুটো শিং এর তুলনাতেই রয়ে যাবো?

দুনিয়ার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা তহবিল বা প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্যে স্বতন্ত্র দপ্তর রয়েছে। যারা প্রশানিক কার্যক্রম, প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করে সরকারি বেসরকারিসহ দেশে-বিদেশের নানা সূত্র থেকে তহবিলের জোগান দিয়ে থাকেন। আমার মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসে।  আমাদের শিক্ষকদের অনেকেই তো বিদেশের অনেক নামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এসেছেন, গবেষণা করে এসেছেন, তার কোনো নমুনা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা কাঠামোর পরিবর্তন সাধনে কাজে খাটাতে পারছেন না কেন? গলদটা কোথায়?

গবেষণা বা উচ্চশিক্ষায় গলদের জন্য এককভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দায়ী করার পক্ষে আমি না। নগরে আগুন লাগলে সেখানে উপাসনালয়গুলো সেই আগুন থেকে রক্ষা পাবে এরকমটা ভাবার কারণ নাই। জাতিগতভাবে জ্ঞানচর্চাকে উৎসাহিত করা না গেলে বিচ্ছিন্নভাবে ছবক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। কেন সম্ভব নয় তার একটি ছোট বাস্তবতা তুলে ধরতে চাই। সেই সঙ্গে জানিয়ে রাখতে চাই কোন দেশের কোন কোম্পানি বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং ধোয়া তুললো তা নিয়ে আমাদের বিচলিত হবার কারণ নাই। আমাদের  জ্ঞানচর্চাকে আমাদের নিজস্বতা রক্ষা করেই বিশ্বমানে উন্নীত হতে হবে। 

ধরুন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন আগামী পাঁচ বছরে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা কার্যক্রম বিষয়ে মতবিনিময় করার জন্যে। একই দিনে সরকারি কর্ম কমিশনের সভাপতি অথবা বিসিএস কোচিং এর স্বনামধন্য কোনো পরিচালক আসবেন সামনের পাঁচ বছরের বিসিএস পরীক্ষা বিষয়ে বক্তৃতা করার জন্যে। এখন প্রশ্ন, কোন আয়োজনে শিক্ষার্থীদের ভিড় বেশি হবে? এর উত্তরটি আমরা নিজেরা মিলিয়ে নিতে পারি, আর এর বাস্তবতাও বুঝে নিতে কষ্ট আমাদের হবে না। 

রাষ্ট্রের জনকাঠামো, প্রশানিক নীতিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দুরাবস্থার জন্যে কোন অংশে কম দায়ী নয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও প্রকাশনা মেলায় শিল্প মন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন তার মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতার কথা বলেছেন, শিক্ষানবিশি কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির আশ্বাস দিয়েছেন। মান্যবর মন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আমাদের শিল্পক্ষেত্র বা খোদ শিল্প মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে দ্বারস্থ হবে সাহায্যের জন্যে, প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলের জন্যে, যুগোপযোগী গবেষোণালদ্ধ উদ্ভাবনের জন্যে সেই লক্ষে অগ্রিম চাহিদাপত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেয়া চাই বা সেই নিমিত্তে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা চাই।  এভাবেই সরকারি বেসরকারি সমন্বিত তহবিলের সংস্থান হয়ে যেতে পারে। আমাদের শিল্পপরিবারগুলোরও নিজস্ব গবেষণা বরাদ্দ বা বৃত্তি থাকা চাই উৎপাদন, বিপণন ও বিতরণের নানা পর্যায়ে লক্ষ্য অর্জনের জন্যে।

একই সঙ্গে দেশের অন্যবিধ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামো ও পরিকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা মেটাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাতৃ বিশ্যবিদ্যালয় হিসেবে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে পারে। এই প্রতিষ্ঠানের অর্ধ শতাধিক গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংশ্লিষ্ট গবেষক বা গবেষণা উপাত্তের নিদেন পক্ষে ডিজিটাল তথ্যব্যাংক থাকা বাঞ্ছনীয়।

গবেষণাসহ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভেতরে বাইরে গলদের মর্মমূলে আঘাত করতে আমি একটি কাল্পনিক গল্পের আশ্রয় নিবো। এই গল্প থেকে আমরা যে যার মতো বুঝে নিতে পারি আমাদের আদতে সমস্যা কোথায় কোন পর্যায়ে।

সম্প্রতি একটি খবরে দেখলাম একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছেন এমন একজন ব্যক্তি অন্য আরও বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদসহ মোট ৮টি পদ দখল করে বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। এতে আমরা অনুমান করতে পারি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মান্যবর কর্তারা কতই না উর্বর মস্তিস্কের অধিকারী। তবে উর্বরতার জন্যে এককভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দায়ী করার পক্ষে আমি না। সহজ কথায় রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা বিদ্যমান থাকলে, বিচ্ছিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যায়গুলো এর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকবে এরকমটা ভাবার অবকাশ নাই।