সময়টা ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস। সেটি ছিল আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। কারণ সেই দিন আমি প্রথম মাধ্যমিক স্কুলে প্রবেশ করি।
নিজের মধ্যে একটু ভয় কাজ করছিলো, কারণ নতুন স্কুলের নতুন বন্ধুরা কেমন হবে? শিক্ষকরা কেমন হবেন? কিন্তু নিজের মধ্যে আবার আনন্দও কাজ করছিলো নতুন স্কুলে যাওয়ার জন্য। দিনটির কথা আমার এখনও পুরো মনে আছে। যেদিন প্রথম স্কুলে যাই সেইদিন আমি ক্লাস শুরু হওয়ার অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছিলাম।
শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেই সব নতুন নতুন মুখ দেখছি। সেই অনেক নতুন মুখের মধ্যে আবার আমার কিছু পরিচিত মুখও চোখে পড়লো। এই পরিচিত মুখ হচ্ছে আগের স্কুলের বন্ধুরা। তারাও আমার সঙ্গে একই স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তাদের দেখে খুব ভালো লাগলো।
এভাবেই কেটে গেল কিছু দিন। আস্তে আস্তে সব বন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করলাম। সব বন্ধুই খুব ভালো ছিল। এভাবে দেখতে দেখতে কেটে গেল প্রায় ৬ বছর। আজ সেই স্কুল থেকে বিদায় নিয়েছি। এখন পড়ছি কলেজে। কিন্তু সেই স্কুল জীবনে এবং সেই স্কুলকে অনেক মনে পড়ে। এতো সময় শুধু স্কুলের গল্পই বলে গেলাম, কিন্তু স্কুলের নামটি বলা হলো না। আমার সেই স্কুলের নাম নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।
এটি নড়াইল শহরে অবস্থিত। এই স্কুলের আছে অনেক গৌরব। আমাদের এ স্কুলের ছাত্র ছিলেন বাংলাদেশের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি। তেমনি একজন বিখ্যাত ব্যক্তি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
আমাদের স্কুলের ভেতর ছোট একটা মাঠ আছে এবং পেছনে অনেক বড় আরেকটি মাঠ আছে। স্কুলের ভেতরের ছোট মাঠটিতে আমাদের প্রত্যহিক সমাবেশ হতো। আমরা বন্ধুরা মিলে সবাই সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইতাম। স্কুলের পেছনের মাঠটিতে আমরা নিয়মিত খেলাধুলা করতাম। বিকেলে শত পড়ার ব্যস্ততার মধ্যেও আমরা মাঠে খেলা করতাম। সেগুলো যেন এখন সব একটা স্মৃতি হয়ে গেছে। এখন আর আগের মতো মাঠে যাওয়া হয় না। মাঠে খেলাও করা হয় না।
আমাদের সবারই কেউ প্রিয় শিক্ষক থাকেন, তেমনিই আমার একজন প্রিয় শিক্ষক ছিলেন ইদ্রিস আহমেদ স্যার। তিনি আমাদের বাংলা পড়াতেন। স্যারের অনেক প্রতিভা ছিলেন। তার মধ্যে একটি প্রতিভা হচ্ছে তিনি দুই হাত দিয়েই একসঙ্গে লিখতে জানতেন। স্যার আমাকে খুব ভালোবাসতেন।
আমাদের এ স্কুলটি ১৯০৩ সালে স্থাপিত হয়, জাতীয়করণ হয় ১৯৬৮ সালে। অনেক ভালোবাসি আমি আমাদের এ স্কুলকে। এই স্কুল আমার জীবনের অনেক স্মৃতি বহন করে চলেছে।
কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম আমার সেই পুরনো স্কুলে। স্কুলের অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। নতুন নতুন অনেক শিক্ষক এসেছেন। নতুন আরেকটি ভবনের কাজ চলছে। স্কুলের আঙ্গিনায় অনেক গাছ লাগানো হয়েছে। স্কুলের বতর্মান পরিবেশ দেখে অনেক ভালো লাগলো।
লেখক: ছাত্র, একাদশ শ্রেণি, বিএএফ শাহীন কলেজ, যশোর
কিডজ ম্যাগাজিনে বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!