রহস্যময়ী রেখার নিভৃত জন্মদিন

রেখার জীবনই হয়ে উঠতে পারে একটি সিনেমা।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2022, 06:10 PM
Updated : 10 Oct 2022, 06:10 PM

রহস্যের অবগুণ্ঠনে ঢাকা রেখার জন্মদিনও গেল রহস্যময়তা নিয়ে।

সোমবার ছিল বলিউডের এই জীবন্ত কিংবদন্তির ৬৮তম জন্মবার্ষিকী। এই তারকা অভিনেত্রী তা নিভৃতেই কাটিয়েছেন বলে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে।

৬৮ বছর পেরুলেও রেখার কাছে এসে যেন বয়স আটকে যাচ্ছে, এমনটাই বললেন ভারতের বিনোদন সাংবাদিক সুভাষ কে ঝা।

তার মন্তব্য, এই অভিনেত্রী তার বয়স ২০ বছর কমিয়ে রেখেছে বললে অবশ্যই বাড়াবাড়ি হবে না। এমন এক আকর্ষণ জিইয়ে রেখেছেন তিনি, এখনও যা ভারতের অন্য কোনো তারকা রাখতে পারেনি।

ভানুরেখা গণেশনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ১০ অক্টোবর, আর তিনিই কালে রেখা হয়ে ওঠেন। ভারতের সবচেয়ে আবেদনময়ী অভিনেত্রী বলা হয় তাকেই।

১৯৬৬ সালে রাঙ্গুলা রত্নম নামে একটি তেলুগু সিনেমা দিয়ে শিশুশিল্পী হিসেবে রেখার পর্তায় অভিষেক। নায়িকা হিসেবে যাত্রা শুরু ১৯৭০ সালে ‘শাওন ভাদো’ দিয়ে।

৪০ বছরের অভিনয় জীবনে দুইশর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন রেখা। তিনবার ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন। উমরাওজানে অভিনয়ের জন্য ১৯৮১ সালে পেয়েছেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

বলা হয়, রেখার জীবনটি সিনেমার মতো ঘটনা-অঘটনের মধ্যে দিয়ে গেছে বা যাচ্ছে।

সুভাষ ঝা বলছেন, মাত্রাতিরিক্ত গুণের জন্যেই বছরের পর বছর ধরে তিনি অনেকের জন্য  হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। অন্যরা তাকে ক্ষত-বিক্ষত করার আগে তিনি দ্রুত গুটিয়ে নেন নিজেকে।

রেখা একবার বলেছিলেন, “বারবার আঘাত পেয়েছি। এতবেশিই যে গুনতে ভুলে গেছি । তাই আঘাত আমাকে এখন আর প্রভাবিত করতে পারে না।”

রেখার জীবনে প্রেম বলিউডে বহু চর্চিত একটি বিষয়। তিনি বিয়ে করেছিলেন এক ব্যবসায়ীকে, যার অকাল মৃত্যু ঘটে। তবে তার আগে আরেক বলিউড কিংবদন্তি অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তার প্রেম এখনও আলোচনার বিষয় হয়ে থাকছে।

ক্যারিয়ারের শুরুতেই অমিতাভ বিয়ে করেন আরেক অভিনেত্রী জয়া ভাদুরিকে। মাঝে রেখা অধ্যায়ের পাট চুকিয়ে আবার ঘরে ফিরে যান।

সুভাষ ঝা অতীত স্মৃতি হাতড়ে বলেন, একবার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে জয়া বচ্চন ও রেখার সঙ্গে একের পর এক সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়সূচি ছিল তার। প্রথমে ছিল জয়ার সাক্ষাৎকার, তা নেওয়া শেষে তিনি যখন উঠছেন তখন জয়া জানতে চেয়েছিলেন, এরপর কার কাছে যাচ্ছেন।

তখন মিথ্যা বলতে গিয়েও পারেননি সুভাষ। তবে সত্যি কথাটি বলার পর জয়ার কপাল কুঁচকানোর দৃশ্যটি আজও তার চোখে ভাসে।

এখনও যারা বলিউডে নামতে যান, তারা ‘আইডল’ হিসেবে রেখাকেই সামনে রাখেন। এরমধ্যে হালের জনাপ্রিয় অভিনেত্রী আলিয়া ভাট একজন। আলিয়াকেও ভীষণ পছন্দ রেখার। মাঝে-মধ্যে তারা ফোনালাপে মেতে ওঠেন, এখন খবরও পাওয়া যায়।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, সঞ্জয় লীলা বানসালির নায়িকা হয়ে উঠতে না পারাটা রেখার একটা বড় আক্ষেপের বিষয়। তবে বানসালির প্রতিটি সিনেমা মুক্তির পর তিনি তার নায়িকার কাছে নিজের পছন্দের একটি শাড়ি পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ঐশ্বরিয়া রাই, রানি মুখার্জি, দীপিকা পাড়ুকোন, তারা সবাই রেখার সেই ভালোবাসা পেয়েছেন।

সুভাষ ঝার ভাষ্য, রেখা তাকে একবার বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস করেন না যে ভালোবাসা বলে কিছু সত্যিকারেই আছে। তবে প্রকাশ তা বিশ্বাস করেননি।

“কারণ সারাজীবন একজন মানুষকে ভালোবেসেই কাটিয়ে দিয়েছেন রেখা।”