সংস্কারের প্রতিশ্রুতি: বাংলাদেশ নিয়ে আইএমএফ মিশন প্রধানের ‘উচ্ছ্বাস’

রাহুল আনন্দ বলেন, “অনেক সীমবাদ্ধতার পরও আইএমএফ নির্ধারিত ঋণ কর্মসূচি সার্বিকভাবে সন্তোষজনক অবস্থায় যেতে পেরেছে।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2023, 03:41 PM
Updated : 15 Dec 2023, 03:41 PM

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির বেশিরভাগই বাংলাদেশ পূরণ করতে পারায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সংস্থাটির বাংলাদেশ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দ।

তিনি বলেছেন, আর্থিক খাতের সংস্কার বাংলাদেশের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াবে। ফলে অর্থনীতি বৈশ্বিক যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে আছে, সেগুলো কাটিয়ে উঠা সহজ হবে।

আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের দুই দিন পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার এ কথা বলেন রাহুল আনন্দ।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নীতি দুর্বলতা তাৎক্ষণিকভাবে সামষ্টিক অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে। অপ্রত্যাশিতভাবে আর্থিক হিসাব (ফাইন্যান্সিয়াল একাউন্ট) ঘাটতিতে পড়ে যায়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপে ডলারের বিপরীতে টাকা মান হারাতে শুরু করেছিল।

এই চাপ সামাল দিতে বাংলাদেশ বেশ কিছু নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেয় উল্লেখ করেছে আইএমএফ। এর মধ্যে আছে মুদ্রানীতি আটোসাঁটো করা, বিনিময় হার বাজারমুখি করা।

এসব উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাহুল আনন্দ বলেন, “অনেক সীমবাদ্ধতার পরও আইএমএফ নির্ধারিত ঋণ কর্মসূচি সার্বিকভাবে সন্তোষজনক অবস্থায় যেতে পেরেছে।

‘‘এই প্রতিবেদন বোর্ডের কাছে জমা দিতে পেরে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত যে, সংস্কারের প্রতিশ্রুতির অধিকাংশই পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ।’’

সামনের দিনগুলোর জন্য বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরে রাহুল আনন্দ বলেন, “আধুনিক মুদ্রানীতি ও অধিকতর নমনীয় বিনিময় হার ব্যবস্থা বৈশ্বিক চাপ সামলাতে সহায়তা করবে।”

প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বেশ কিছু সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে তিনি রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও অনাবশ্যক ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা, সরকারি বিনিয়োগ ও ব্যয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার পরামর্শ তুলে দেন।

আইএমএফ কর্মকর্তা বলেন, “মুদ্রানীতির আধুনিকায়ন ও নীতি সহায়তা দ্রুত বাস্তবায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার আধুনিকীকরণ ও পুঁজিবাজারের উন্নয়ন অর্থায়নের উৎস তৈরি করবে।”

বাণিজ্য উদারীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে জলবায়ুতে বিনিয়োগ, রপ্তানিতে বৈচিত্র্য সামষ্টিক অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে বলেও মন্তব্য করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

অন্তর্ভূক্তিমূলক শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও নারী শিক্ষা প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন রাহুল আনন্দ।

তিনি বলেন, প্রকৃতিক ঝুঁকি মোকাবেলা করতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত খাতে বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে বাংলাদেশকে।

২০২৬ সালে এলডিসি উত্তোরণের মধ্যে দিয়ে ২০৩১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছাতে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সংস্কারের মধ্যে দিয়ে যাবে।

গত মঙ্গলবার সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক পর্ষদের সভায় বাংলাদেশের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৪৬ দশমিক ৮৩ কোটি ডলার ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়।

ওই সময়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে, আর্থিক খাতের স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কার পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সুপারিশ করেছিল আইএমএফ। সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারলে ২০২৪ সালের জুন শেষে রিজার্ভ ২৪ বিলিয়নের উপরে থাকবে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।