সংকট কাটাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বৈশ্বিক সহায়তার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাদেশর উন্নয়নকে ‘অবিশ্বাস্য’ বর্ণনা করে ঢাকার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশন) অ্যাক্সেল ফন ট্রটোসেনবার্গ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2023, 11:17 AM
Updated : 23 Jan 2023, 11:17 AM

কোভিড মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা দিয়ে যেতে বিশ্ব ব্যাংক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিশ্ব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশন) অ্যাক্সেল ফন ট্রটোসেনবার্গ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করতে গেলে শেখ হাসিনা এই আহ্বান রাখেন।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, বিশ্ব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশের উন্নয়নকে ‘অবিশ্বাস্য’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং উন্নয়নে তিনি ঢাকার পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

ট্রটোসেনবার্গ বলেন, “আমরা ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের পাশে আছি এবং দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব।”

তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশে তার সফরে প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিশ্ব ব্যাংক ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরো জোরদার করা।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫০ মার্কিন ডলার, কিন্তু তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৮২৪ মার্কিন ডলারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য উন্নত দেশগুলোই যে দায়ী, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করছে না।“

জলবায়ু তহবিলে অর্থ ছাড়ের বিষয়ে উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানান সরকার প্রধান।

তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সরকার ব্যাপক বনায়ন, গ্রিন বেল্ট নির্মাণ এবং ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জন্য টেকসই আবাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে উন্নত জীবন দিতে ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে।“

রাজনৈতিক ‘স্থিতিশীলতা’ বজায় থাকার কারণে সরকার গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে দ্রুত উন্নয়ন করতে পেরেছে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।  

তিনি বলেন, কোভিড মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল, খাদ্যসামগ্রী ও পরিবহন ব্যয় আকাশচুম্বী হওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলোও সমস্যায় পড়েছে।

“কোভিড-১৯ মহামারীর আগে বাংলাদেশ জিডিপিতে ক্রমাগত ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত ছিল। কিন্তু মহামারী থেকে বেরিয়ে আসার পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি হয়েছে, যা এখন পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে।“

ট্রটোসেনবার্গ বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের দেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর উচিত হবে নতুন প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।“

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।