সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎমুখী সরকার: পরিকল্পনামন্ত্রী

এ খাতের ব্যাপক উন্নয়নে সরকার বেসরকারি খাতের অনেককে লাইসেন্স দিচ্ছে এবং নিজেও করছে, বলেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Oct 2023, 04:55 PM
Updated : 30 Oct 2023, 04:55 PM

পরিবেশবান্ধব শিল্পের জন্য সরকার কয়লা বা তেল-গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে সৌর ও বায়ুবিদ্যুতের দিকে ঝুঁকছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

সোমবার ঢাকায় ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এবং বিশ্বব্যাংক আয়োজিত ‘গ্রিন গ্রোথ ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক দুই দিনের সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকার রেনেসাঁ হোটেলে দুদিনের এ সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের আবাসিক প্রতিনিধি আব্দুলায়ে সেক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্ব এখন প্রকৃতিবান্ধব উৎপাদন করছে। এখন আমাদেরও প্রধান কৌশল পরিবেশবান্ধব জ্বালানির মাধ্যমে শিল্প উৎপাদন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।

তিনি জানান, সৌরবিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়নে সরকার বেসরকারি খাতের অনেককে লাইসেন্স দিচ্ছে এবং নিজেও করছে।

পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নে সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন এবং এ খাতে দক্ষতা বাড়াতে একটি মহাপরিকল্পনা নেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনার মধ্যে অনেকগুলি প্রোগ্রাম রয়েছে। যেমন- বৃহৎ শিল্প বিদ্যুৎ গ্রাহক, আবাসিক গ্রাহক, বাণিজ্যিক ভবনের বিদ্যুৎ গ্রাহক। এভাবে ক্যাটাগরি ভিত্তিক ভাগ করে বিদ্যুৎ উৎপাতন ও বিতরণে দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যেমে বিদ্যুৎ রুপান্তরের কাজ এগিয়ে নিতে হবে।

দারিদ্র্য বিমোচনই সরকারের প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি প্রকৃতি বাঁচানোর সঙ্গে সঙ্গে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকাণ্ডও সমানভাবে এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। 

মান্নান বলেন, “পরিবেশবান্ধব প্রবৃদ্ধির জন্য সরকার সম্পূর্ণ সচেতন। আমাদের দেশ এ বিষয়ে অসম্ভব স্পর্শকাতর। আমাদের উপকূলীয় অঞ্চল, আমাদের হাওড়, চরাঞ্চল, আমাদের পাহাড়ি এলাকা, প্রত্যেক জায়গায় আমাদের বিশেষ মনোযোগ দরকার।

“প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন হাওড় এলাকায়, জলাভূমি এলাকায় আর কোনও সড়ক নির্মাণ করা হবে না। প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে পরিকল্পনা কমিশনে যত প্রকল্প আসছে সেসব প্রকল্পের নানা দিক যাচাই করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রকল্পটি দারিদ্র্য বিমোচন সহায়ক ও নারীবান্ধব হবে কি না, প্রকল্পটি প্রকৃতি সহায়ক হবে কি না- এসব বিষয় বিবেচনা করে প্রকল্প বাচাই করে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।”

আব্দুলায়ে সেক বলেন, প্রকৃতি বাঁচানোর জন্য পৃথিবী এখন সবুজ শিল্পায়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করছে। মূলত জ্বালানি রূপান্তরের মাধ্যমেই এ চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “এ রূপান্তরের সময় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে নেওয়ার এক বিরাট সুযোগের সম্মুখীন হয়েছে। পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ ও শিল্প উৎপাদনের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে।

বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম উল্লেখ করে বিশ্ব ব্যাংকের এ প্রতিনিধি বলেন, “বাংলাদেশকে অবশ্যই পরিবেশ ও জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হবে। এর শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে আরও অনেক কিছু করতে হবে।”

বাংলাদেশেকে উচ্চ মধ্যম আয়ের ও উন্নত দেশ হতে হলে অবশ্যই জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলার দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে এমন পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।